Advertisement
E-Paper

দুই গ্রামে বাড়ির পুজোই সর্বজনীন

লক্ষ্মীপুজোকে ঘিরে আনগুনা গ্রামে ১৯২০ সাল থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে হাতে লেখা ‘প্রভাত সাহিত্য পত্রিকা’।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:৪০
জগদাবাদে প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র

জগদাবাদে প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র

গ্রামের মানুষের দাবি মেনে লক্ষ্মী প্রতিমা আনতে রাজি হয়েছিল ধনী পরিবার। এমনকী, পারিবারিক দুর্গা মন্দিরেই পুজোর অনুমতি দিয়েছিল তারা। বর্ধমানের জগদাবাদ গ্রামের পঞ্চাননতলার সেই পুজোই সর্বজনীন হয়ে উঠেছে। বর্ধমান শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে রায়নার আনগুনা গ্রামের সামন্ত পরিবারের লক্ষ্মী পুজো ‘পাঁচ পুতুলের পুজো’ বলে পরিচিত। বাড়ির পুজো হলেও তা বারোয়ারি হয়ে উঠেছে। বর্ধমানের দু’প্রান্তের দুই গ্রামকে কার্যত এক করে তুলেছেন দেবী লক্ষ্মী।

লক্ষ্মীপুজোকে ঘিরে আনগুনা গ্রামে ১৯২০ সাল থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে হাতে লেখা ‘প্রভাত সাহিত্য পত্রিকা’। দু’শো পাতার এই পত্রিকায় নামী কবি-সাহিত্যিক থেকে গ্রামের নবাগত, অনেকের লেখা কবিতা-গল্প থাকে। কয়েক জন সাহিত্যপ্রেমীর হাত ধরে এই পত্রিকা প্রকাশ হয়েছিল। সেই ধারা মেনে প্রতি বছর লক্ষ্মীপুজোর সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিক ভাবে পত্রিকা প্রকাশিত হয়। উদ্যোক্তারা জানান, সাহিত্যিকদের লেখা নির্দিষ্ট মাপে আর্ট পেপারে ‘কপি’ করা হয়। তার পরে আঁকিবুকি করে শিল্পের ছোঁয়া দিয়ে তৈরি হয় পত্রিকা। স্থানীয় ক্লাবের গ্রন্থাগারে সেই বই সযত্নে সাজিয়ে রাখা হয়।

কথিত আছে, চাষের জমিকে আবাদি করার জন্য সামন্ত পরিবারের পূর্বপুরুষ ভোলানাথবাবু ৭৮ বছর আগে পুজো শুরু করেন। তিনিই ‘পাঁচ পুতুলের’ প্রতিমা তৈরি করেছিলেন। লক্ষ্মী প্রতিমার নীচে দু’পাশে থাকেন সখী— জয়া ও বিজয়া। তাঁদের উপরে রয়েছে দুটি পরি। পরম্পরা মেনে সামন্ত পরিবার থেকে পুজোর দিন গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে নৈবেদ্য পাঠানোর রেওয়াজ রয়েছে। আর জগদাবাদের রেওয়াজ হল, বিসর্জনের দুপুরে এক সঙ্গে পাত পেড়ে ভোগ খাওয়া। দুর্গা নয়, লক্ষ্মীপুজোর সময়ে গ্রামের মেয়েরা বাড়ি ফেরেন। আত্মীয়স্বজনে ভরে ওঠে গ্রাম।

প্রবীণ বাবুরাম দত্ত কিংবা পুজো কমিটির সম্পাদক বলাই দত্তেরা বলেন, “আমাদের দাবি মতো গ্রামের ধনী মানুষ চিত্তরঞ্জন হালদার পুজোর জন্য ১০ বিঘে জমি দান করেছেন। তাঁদের দুর্গা মণ্ডপে পুজো করারও অনুমতি দিয়েছেন।’’ তাঁদের সংযোজন, ‘‘ওই পরিবারের দুর্গা মণ্ডপে লক্ষ্মী প্রতিমা আসত না। আমরাই সেই দাবি তুলেছিলাম। আমাদের দাবি মেনে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ধীরে-ধীরে লক্ষ্মীপুজো আমাদের সবার হয়ে গেল।’’ গ্রামের যুবক ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘লক্ষ্মীপুজোতেই ধুমধাম বেশি। তিন দিন ধরে যাত্রা-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মেতে থাকি আমরা।’’

Laxmi Puja LaxmiPuja Celebration লক্ষ্মীপুজো
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy