ধৃত সৌরেন রায়। নিজস্ব চিত্র
সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সরবরাহ করা ওষুধ প্যাকেট বদলে পাচার হয়ে যাচ্ছিল বর্ধমানের বিভিন্ন নার্সিংহোমে। মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ সরবরাহেরও অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ। বর্ধমান থানার এক এসআইয়ের স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা ড্রাগ কন্ট্রোল ও জেলা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখা (ডিইবি) যৌথ অভিযান চালিয়ে এক পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে। সোমবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় চার ঘণ্টা ধরে ধৃত সৌরেন রায়ের পাঞ্জাবি পাড়ার বহুতল আবাসনে তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকে ২১ রকমের জিনিস বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত দুটি মোবাইলও ডিইবি বাজেয়াপ্ত করেছে।
জেলার পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘‘ধৃতকে জেরা করে আরও তথ্য পাওয়া যেতে পারে। কারা কারা জড়িত, সেটাও জানা হবে।’’ মঙ্গলবার ধৃতকে আদালতে তোলা হলে দু’দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়।
ডিইবি ও ড্রাগ কন্ট্রোল সূত্রে জানা যায়, বর্ধমানের খোসবাগানে ধৃতের একটি ওষুধের দোকান ছিল। পাঁচ বছর আগে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। তারপর বাড়ি থেকে ড্রাগ কন্ট্রোলের অনুমতি ছাড়াই তিনি ওষুধের কারবার করতেন বলে অভিযোগ। পাঞ্জাবি পাড়ার পেট্রল পাম্পের কাছে বহুতল আবাসনে ধৃতের বাড়িতে সোমবার বিকেলে হানা দিয়ে প্রায় আট হাজার প্যাকেট ওষুধ মেলে বলে ড্রাগ কন্ট্রোলের দাবি। ওই দুই বিভাগের দুই ইনস্পেক্টর রাজিবুল আলম ও মুতাহার শেখ জানান, বিনা অনুমতিতে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সরবরাহ করা নানা রকমের ওষুধ ডাঁই করে রাখা ছিল ওই বাড়িতে। শল্য চিকিৎসার জন্যে ব্যবহৃত বিভিন্ন দামি যন্ত্রও প্যাকেট বন্দি অবস্থায় মেলে। সাপে কাটার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্রতিষেধকও মিলেছে। ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের ইনস্পেক্টর রাজিবুল আলম বলেন, ‘‘সরকারি ভাবে সরবরাহ করা ওষুধ ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুও পাওয়া গিয়েছে।’’ বাজেয়াপ্ত ওষুধগুলি জাল কি না দেখার জন্য রাজ্য ফরেন্সিক দফতরে নমুনা পাঠানো হয়।
ডিইবি ও ড্রাগ কন্ট্রোলের দাবি, ধৃত প্রাথমিক ভাবে তাঁদের জানিয়েছেন, খোসবাগানের দোকান বন্ধ হওয়ার পরে বাড়ি থেকেই ওষুধের কারবার করতেন তিনি। বর্ধমান শহরের একাধিক নার্সিংহোম থেকে ওষুধের বরাত আসত। আবাসনের নীচ থেকে ওষুধ পাঠানো হত। আবার অনেক সময়ে ফোন পেয়ে সরবরাহকারীরা সরাসরি নার্সিংহোমে ওষুধ পৌঁছে দিতেন। তবে সরকারি স্তরে সরবরাহ করা ওষুধ কোথা থেকে পেতেন তিনি, তার হদিশ এখনও মেলেনি। শল্য চিকিৎসায় ব্যবহৃত যন্ত্রগুলিও সরকারি কি না, দেখছেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy