Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অন্য দফতরে যোগে ‘সমস্যা’

ক্ষুব্ধ ডিপিএলের কর্মীরাডিপিএল সূত্রে জানা যায়, কোকআভেন প্ল্যান্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছে ২০১৫ সালের জুনে। দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে চলার পরে, রাজ্যের মন্ত্রিসভা সংস্থার বিদ্যুৎ উৎপাদন, বণ্টন ও সংবহন বিভাগ অন্য বিদ্যুৎ সংস্থার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে গত ১ জানুয়ারি থেকে। মালিকানা চলে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:৩৬
Share: Save:

রাজ্য সরকারের সংস্থা দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের (ডিপিএল) বন্ধ কোকআভেন প্ল্যান্ট থেকে অন্য সরকারি দফতরে বদলি নিয়ে চূড়ান্ত সমস্যায় পড়েছেন বলে দাবি করলেন অনেক কর্মী। তাঁদের অভিযোগ, ডিপিএল কর্তৃপক্ষ তাঁদের বদলির নোটিস ধরিয়েছেন। কোন দফতরে বদলি করা হয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়েছে তাতে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দফতরে গিয়ে জানতে পারছেন, সেখানে এমন কোনও তথ্য ডিপিএলের তরফে আসেনি। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন শ’তিনেক কর্মী। ডিপিএলের তরফে জানানো হয়েছে, সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে।

ডিপিএল সূত্রে জানা যায়, কোকআভেন প্ল্যান্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছে ২০১৫ সালের জুনে। দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে চলার পরে, রাজ্যের মন্ত্রিসভা সংস্থার বিদ্যুৎ উৎপাদন, বণ্টন ও সংবহন বিভাগ অন্য বিদ্যুৎ সংস্থার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে গত ১ জানুয়ারি থেকে। মালিকানা চলে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে। ডিপিএলের উদ্বৃত্ত কর্মী কমানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে। বয়স্ক কর্মীদের জন্য স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত উদ্বৃত্ত কর্মীদের রাজ্যের অন্য নানা বিদ্যুৎকেন্দ্রে বদলি এবং কোকআভেন প্ল্যান্টের কর্মী-আধিকারিকদের রাজ্য সরকারের নানা দফতরে বদলির সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মঙ্গলবার কোকআভেন প্ল্যান্টের ৩১৪ জন কর্মীকে বদলির নির্দেশিকা জারি হয়। ওই কর্মীদের দাবি, এর পরেই সমস্যায় পড়েন তাঁরা। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুর পুরসভায় গিয়েছিলেন ২৫ জন কর্মী। পুরসভা থেকে তাঁদের জানানো হয়, তাঁদের কাজে নিযুক্ত করা যাচ্ছে না। উত্তম বায়েন নামে এক কর্মীর অভিযোগ, ‘‘ডিপিএলের ‘রিলিজ অর্ডার’ নিয়ে পুরসভায় গেলে সেখানে প্রশ্ন করা হয়, ‘কোন দফতরে নেব আপনাদের? বেতন কে দেবে?’ বাধ্য হয়ে ফিরে এসেছি।’’ সে দিনই দুর্গাপুর হাসপাতালে গিয়েছিলেন কয়েকজন কর্মী। রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কাজে যোগ দিতে না পেরে তাঁরা ফিরে আসেন।

শুক্রবার বারাবনির বিএলএলআর অফিসে যান জনা কয়েক কর্মী। বিকেলে ফিরে আসতে হয়েছে বলে জানান তাঁরা। আসানসোলে জেলাশাসকের দফতরে গিয়েছিলেন মোট ৩০ জন। ফিরে এসেছেন তাঁরাও। নারায়ণ রুইদাস নামে এক কর্মী বলেন, ‘‘কী বিড়ম্বনায় পড়েছি, শুধু আমরাই জানি!’’ বদলির ক্ষেত্রে মানবিক দিকও দেখা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন কেউ-কেউ। তাঁদের দাবি, দুর্গাপুরে বসবাসকারী প্রতিবন্ধী কর্মীকে পাঠানো হয়েছে আসানসোলে এক দফতরে। আবার হাসপাতালে মস্তিস্কের অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি থাকা কর্মীরও বদলির নির্দেশ এসেছে।

ডিপিএলের আইএনটিইউসি নেতা উমাপদ দাসের অভিযোগ, ‘‘বদলি নিয়ে চূড়ান্ত গাফিলতির পরিচয় দিয়েছেন ডিপিএল কর্তৃপক্ষ। কর্মীদের অনিশ্চয়তায় মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।’’ ডিপিএলের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, সমস্যা মেটানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র বলেন, ‘‘কোথাও একটা যোগাযোগের অভাব ঘটেছে। বিষয়টি দ্যুৎ উন্নয়ন নিগমকে জানিয়েছি। যত দিন না এর সুরাহা হচ্ছে কর্মীরা ডিপিএলের অফিসেই হাজিরা দেবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur Project West Bengal Government DPL
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE