Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Factory Closed at kanksa

কারখানায় তালা, কর্মহীন ৩৫০ জন

বিক্ষোভকারীদের তরফে উত্তম কর বলেন, “মাঝে-মাঝেই বাইরে থেকে নতুনদের এনে কাজে ঢোকানো হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করায় গত ১২ ডিসেম্বর আমি-সহ চার জন কর্তৃপক্ষের রোষে পড়েছি।

কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়ায় শুক্রবার পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার বামুনাড়া শিল্পতালুকের একটি বেসরকারি

কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়ায় শুক্রবার পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার বামুনাড়া শিল্পতালুকের একটি বেসরকারি কারখানার গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান ঠিকা শ্রমিকেরা। ছবি: বিকাশ মশান

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:২৩
Share: Save:

স্থানীয়দের বঞ্চিত করে বহিরাগতদের কাজে নেওয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করায় চার জন স্থানীয় শ্রমিককে কারণ দর্শানোর নোটিস ধরিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এমন অভিযোগে শুক্রবার কাঁকসার বামুনাড়া শিল্পতালুকের বেসরকারি একটি ইস্পাত ও ফোর্জিং কারখানার গেট বন্ধ রেখে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির পতাকা হাতে বিক্ষোভ দেখান ঠিকা শ্রমিকেরা। এ দিকে, বিক্ষোভের জেরে কিছু সমস্যার কথা জানিয়ে সন্ধ্যায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ নোটিস দেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। এর ফলে, কর্মহীন হলেন প্রায় ৩৫০ জন শ্রমিক। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনেতিক চাপানউতোর।

এ দিন বিক্ষোভকারীরা সকাল থেকে কর্মসূচি নেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, স্থানীয়দের কাজ না দিয়ে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড থেকে লোক এনে কাজে নিয়োগ করা হচ্ছে। ১২ ডিসেম্বর ফের তেমন দু’জনকে কাজে লাগানোর পরে চার জন স্থানীয় শ্রমিক প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, তাঁদের কেন সাসপেন্ড করা হবে না, তা জানতে চেয়ে নোটিস ধরানো হয়।

বিক্ষোভকারীদের তরফে উত্তম কর বলেন, “মাঝে-মাঝেই বাইরে থেকে নতুনদের এনে কাজে ঢোকানো হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করায় গত ১২ ডিসেম্বর আমি-সহ চার জন কর্তৃপক্ষের রোষে পড়েছি। অথচ, আমি ঘটনার দিনে কারখানাতেই ছিলাম না। এখন কারখানাও বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।” বিক্ষোভকারীদের তরফে চন্দন মুখোপাধ্যায়ের আরও অভিযোগ, কম মজুরিতে কাজ করতে হচ্ছে। কিছু বলতে গেলেই ‘সাসপেন্ড’ করে দেওয়া মতো ঘটনা ঘটছে। কারখানার দূষণ নিয়ে অভিযোগ করেন অজয় আচার্য নামে এক শ্রমিক।

দিনভর বিক্ষোভের পরে সন্ধ্যায় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারখানায় তালা ঝোলানোর কথা জানান। কারণ হিসাবে বলা হয়, গেটে বিক্ষোভের জেরে কারখানায় মাল আনা-নেওয়ায় সমস্যা হয়েছে। তাই এই সিদ্ধান্ত। এই সময়ে কর্মীদের জন্য ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ নীতি চালু থাকবে বলেও নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি, ওই চার জনকে নোটিস ধরানোর প্রসঙ্গে কর্তৃপক্ষের দাবি, উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত তৈরির জন্য নিয়ম মেনে পদক্ষেপকরা হয়েছে।

এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “রাজ্যের শিল্প-চিত্র বেহাল। তার মধ্যে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের আন্দোলনের জেরে আরও একটি কারখানা উৎপাদনহীন হয়ে গেল। ওঁদের নেতারা কর্তৃপক্ষের কাছে কাটমানি নিতে অভ্যস্ত। তাই বাইরে থেকে কাটমানির বিনিময়ে লোক এনে কারখানায় ঢোকানো হচ্ছে।” অভিযোগে আমল দেননি আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক। তাঁর বক্তব্য, “কোনও গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া চার জন শ্রমিককে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর বিরুদ্ধেই শ্রমিকদের আন্দোলন। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে। বিজেপির কথারগুরুত্ব নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kanksa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE