আদতে সঙ্গীতশিল্পী। কিন্তু প্রতিমা তৈরিতেও হাত চলে সমান। তিনি ডিএসপি টাউনশিপের এ-জোনের হর্ষবর্ধন রোডের বাসিন্দা অমিত সরকার। এ বার সরস্বতী প্রতিমার উপকরণেও তাক লাগিয়েছেন অমিতবাবু। তিনি জানান, রবার দিয়ে প্রতিমাটি তৈরি করেছেন।
অমিতবাবু জানান, প্রতিমার কাঠামো তৈরিতে মূলত কাগজ ও কাপড় ও কাঠামো শক্ত করার জন্য সামান্য মাটি ব্যবহার করেছেন। বাকি পুরোটাই বেনাচিতি বাজার থেকে আনা ২০ কেজি রবার দিয়ে তৈরি হয়েছে। এক মাস ধরে কাজ চলেছে। রঙিন রবার কেটে কেটে আঠা দিয়ে লাগানো হয়েছে প্রতিমায়। আর তার উপরে রঙিন কাগজ দিয়ে তৈরি হয়েছে কারুকাজ। প্রতিমা তৈরির প্রায় শেষ মুহূর্তে ১৬ কেজি ওজনের এই শিল্পকর্মটি নিয়ে উৎসাহী অমিতবাবুর ছাত্র-ছাত্রী ঐশী চট্টোপাধ্যায়, সন্দীপন মুখোপাধ্যায়, ঋত্বিকা দে, ঋষিকা দে’রাও। তাদের কথায়, ‘‘বাড়িতে সরস্বতী পুজো হলেও আমরা স্যারের তৈরি প্রতিমার পুজোয় যোগ দিই ফি বছর। পুষ্পাঞ্জলিও দিই। এ ছাড়া অনেক আসেন প্রতিমা দর্শনেও।’’
চাল, ডাল, তেজপাতা, ভাঙা কাচ, বাদামের খোসা, রঙিন তুলো প্রভৃতি সামগ্রী দিয়ে এর আগেও প্রতিমা তৈরি করেছেন অমিতবাবু।
তবে শিল্পকর্মে তাক লাগানোর পাশাপাশি জীবনের এক বড় প্রতিকূলতাকেও জয় করেছেন এই মানুষটি। বিশ্বভারতী থেকে সঙ্গীতে স্নাতকোত্তর অমিতবাবু জানান, তৃতীয় শ্রেণিতে প়়ড়ার সময় কথা বলার শক্তি হারান। শুরু হয় চিকিৎসা এবং গানের তালিম। এক বছর পরে সব স্বাভাবিক হয়।
কিন্তু কী ভাবে এই প্রতিমা শিল্পে হাতেখড়ি? অমিতবাবু জানান, তাঁর দাদু সোনার গয়নায় সূক্ষ্ম ডিজাইন করতেন। ঠাকুরদা কাঠে ফুটিয়ে তুলতেন নানা নকশা। পেশায় ডিএসপি-র প্রাক্তন কর্মী, অমিতবাবুর বাবা সত্যরঞ্জনবাবুও অবসরে নানা ধরনের হস্তশিল্পের কাজে মেতে থাকতেন। দুই দাদাও ভাল আঁকেন। এমন পরিবেশ থেকেই প্রতিমা-শিল্পের প্রতি আগ্রহ বলে জানান অমিতবাবু।