Advertisement
০৬ মে ২০২৪

কলেজে বিশৃঙ্খলা, ১১ পড়ুয়া বহিষ্কৃত মেমারিতে

অধ্যক্ষ দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই ১১ জন আমাদের কলেজের পড়ুয়া নয় বলে বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, বহিষ্কৃত পড়ুয়াদের বিনা অনুমতিতে কলেজে ঢোকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।’’

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:৪০
Share: Save:

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) নেতা তথা কলেজের শিক্ষাকর্মী মুকেশ শর্মার বিরুদ্ধে আগেই ব্যবস্থা নিয়েছিলেন মেমারি কলেজ কর্তৃপক্ষ। শনিবার বিকেলে এক বৈঠকের পরে ওই ছাত্রনেতার অনুগামী হিসেবে পরিচিত প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বাগ-সহ ১১ জনকে থেকে বহিষ্কার করলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। বহিষ্কৃতদের মধ্যে রয়েছেন মুকেশের স্ত্রী রিম্পা শিকদারও। অধ্যক্ষ দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই ১১ জন আমাদের কলেজের পড়ুয়া নয় বলে বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, বহিষ্কৃত পড়ুয়াদের বিনা অনুমতিতে কলেজে ঢোকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।’’

কলেজ সূত্রে জানা যায়, গত মে থেকে জুলাই পর্যন্ত বারবার অধ্যক্ষকে ঘেরাও, শিক্ষক-শিক্ষিকাকে হেনস্থার মতো ঘটনা ঘটেছে। জুনের শেষ সপ্তাহে পরিচালন সমিতি ভাঙার পরেও বাংলার এক শিক্ষককে কলেজের ভিতরেই মারধরের অভিযোগ ওঠে মুকেশের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে কলেজের প্রশাসক তথা মহকুমাশাসক (বর্ধমান দক্ষিণ) অনির্বাণ কোলে ১০৭ ধারায় নোটিস পাঠান। ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করে তাঁর বিরুদ্ধে কলেজে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তদন্ত চলছে। এরই মধ্যে সপ্তাহ দুয়েক আগে মুকেশের ‘সঙ্গী’ বলে পরিচিত ১৩ জন পড়ুয়াকে শো-কজ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে কলেজে গোলমাল পাকানো, ক্লাস না করে বিশৃঙ্খলা তৈরি, কলেজের ভিতর ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ ওঠে। কলেজ সূত্রে জানা যায়, দু’জনের জবাবে সন্তুষ্ট হয়েছেন কর্তৃপক্ষ। বাকিদের মধ্যে অনেকেই জবাব দেওয়ার প্রয়োজনই মনে করেননি। তাই তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ।

শনিবার সন্ধ্যায় মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘কলেজে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসক হিসেবে আমাকে কঠোর ব্যবস্থা নিতেই হত। বহিষ্কৃতেরা কলেজে থাকার জন্য বারাবার অনুত্তীর্ণ হয়েও নিয়মের সুযোগ নিয়ে ভর্তি হত।’’ মুকেশ এ দিন কোনও কথা বলতে চায়নি। কলেজের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রদীপের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি চিকিৎসার জন্য কলকাতায় গিয়েছিলাম। এ ধরনের কোনও খবর পাইনি।’’

এ দিনই ওই কলেজের অস্থায়ী কর্মচারী তথা মুকেশের দাদা রাকেশ শর্মার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ১৯৯৩ সালে মেমারির একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণি পাশের শংসাপত্র দিয়ে কলেজে অস্থায়ী পদে কাজ পেয়েছিলেন রাকেশ। ছ’বছর কাজ করার পরে কলেজ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, শংসাপত্রটি জাল। রাকেশ তাঁদের স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘ওই অস্থায়ী শিক্ষাকর্মীকে কলেজে রাখা হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে।’’ রাকেশের সঙ্গেও এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Memari College মেমারি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE