আগুন নেভানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যল কলেজ হাসপাতালে আগুন লেগে রোগীর মৃত্যুর ঘটনার পরে প্রায় এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। অবশেষে হুঁশ ফিরল কালনা মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। শুক্রবার হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ সব বিভাগে দ্রুত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে যন্ত্রগুলি হাসপাতালে লাগানোর ব্যাপারে বিভাগের আধিকারিকদের তৎপর হতে নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা রোগীকল্যাণ সমিতির সভাপতি স্বপন দেবনাথ।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ঘণ্টা দু’য়েকের বৈঠকে হাসাপাতালের পরিকাঠামো উন্নত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার উপরে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, মোট ৪৫টি অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র প্রয়োজন। তার জন্য সম্প্রতি ২৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আপাতত ছ’টি যন্ত্র আনা হয়েছে। এর পরেই স্বপনবাবু দমকলের আধিকারিকদের বলেন, ‘‘এত বড় হাসপাতাল আগুন লাগলে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হতে পারে। সরকারি অর্থ বরাদ্দ হওয়ার পরেও কেন কাজ হচ্ছে না?’’ সাত দিনের মধ্যে কাজ শুরু করার কথাও বলেন মন্ত্রী।
বৈঠকে আরও কিছু সমস্যার কথা উঠে আসে। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের মর্গের শীতলীকরণ যন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে মর্গে দেহ এক দিনের বেশি রাখলেই পচন ধরে যাচ্ছে। নতুন যন্ত্রের জন্য বরাদ্দ হওয়া ৩৮ লক্ষ টাকায় নতুন ছ’টি যন্ত্র কেনা হবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। এ ছাড়াও বৃষ্টির সময় হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় জল জমে যাওয়া নিয়েও এ দিন আলোচনা হয়েছে। সমস্যা মেটাতে একটি বড় নালা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেহেতু নালাটি এসটিকেকে রোডের পাশ দিয়ে যাবে, তাই পূর্ত দফতরের সড়ক শাখার আধিকারিকদের এ ব্যাপারে একটি বিস্তারিত প্রোজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে। হাসপাতালের পিছনে রয়েছে রেলের একটি কালভাট। ই কালভাট দিয়েই হাসপাতালের নিকাশি জল পৌঁছয় বেহুলা নদীতে। কালভাটের মুখে আবর্জনার স্তুপ সরানোর দায়িত্ব দেওয়া হয় হাটকালনা পঞ্চায়েতকে।
এ ছাড়াও রোগী ও তাঁদের পরিজনদের বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবের প্রসঙ্গ ওঠে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বাজেট তৈরি করে দিলে বিধায়ক তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ করার আশ্বাস দেন স্বপনবাবু। এ ছাড়াও হাসপাতালে জল সরবরাহের ট্যাঙ্ক ও পাইনগুলি নিয়মিত পরিস্কার রাখার জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে চিঠি পাঠাতে বলা হয়েছে এ দিন। তাতে দ্রুত কাজ না হলে কোনও বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে তা করিয়ে নেওয়ার জন্য হাসপাতাল সুপারকে পরামর্শ দেন তিনি। প্রতি মাসে জল পরীক্ষার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে বৈঠকে। রোগীর চাপ সামলাতে হাসপাতাল চত্বরের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। মাস ছ’য়েকের মধ্যে তা চালু হয়ে গেলে অতিরিক্ত ২৫০ শয্যা মিলবে বলে জানানো হয়েছে। এ দিনের বৈঠকে মন্ত্রী ছাড়াও হাজির ছিলেন কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু, পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ, এসিএমওএইচ শেখ মোয়ারফ আলি, সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরা প্রমুখ। ছিলেন বিদ্যুৎ, পূর্ত-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy