দুর্গাপুরে সুনসান এক শপিংমল। —বিকাশ মশান
ব্যাঙ্কে নোট পাল্টে দেওয়া শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার। তবে তাতে প্রথম দিনই খুচরোর অভাব মেটেনি। ফলে, বাজার-দোকানে এ দিনও সমস্যায় পড়লেন সাধারণ মানুষজন। ওষুধ কেনার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাঙ্কের সামনে নোট বদলের লাইনে দাঁড়াতে দেখা গেল হাসপাতালে ভর্তি রোগীর পরিজনকে। বাজার-দোকান, শপিংমলও তুলনায় ফাঁকা রয়ে গেল বুধবারের মতোই।
শিল্পাঞ্চলের নানা বাজারে বুধবার তবু অনেক ব্যবসায়ী পুরনো পাঁচশো-হাজারের নোট নিতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু এ দিন তাঁরাও বেঁকে বসেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। পুরনো নোট পাল্টে দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে, তাই ওই পুরনো নোট নিতে বিক্রেতারা অস্বীকার করেছেন বলে দাবি আসানসোলের নানা বাজারের বেশ কিছু ক্রেতার। ও দিকে ব্যাঙ্কে টাকা বদলে আনতে বিকেল গড়িয়ে যাওয়ায় বাজার-দোকান করতে বেশ ভোগান্তি হয়েছে বলে জানান তাঁরা।
দুর্গাপুরের একটি ব্যাঙ্কের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন শহরের এ জোনের বাসিন্দা রামপদ রায়। জানালেন, তাঁর মা অসুস্থ হয়ে ডিএসপি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। চিকিৎসার খরচের জন্য ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলবেন বলে এসেছেন। রামপদ বলেন, ‘‘তাড়াতাড়ি টাকা পেলে বড় উপকার হতো। কিন্তু এখন কার কাছে ধার করব! তাই ব্যাঙ্কে লাইন দিয়েছি!’’
এর মধ্যে উদ্বেগে পড়েছেন কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ। মাধ্যমিকের সিসি এবং কম্পার্টমেন্টাল পাওয়া পরীক্ষার্থীদের ফর্ম পূরণের কাজ চলছে। বহু পড়ুয়া সে জন্য ফি মিটিয়েছিলেন পাঁচশো টাকার নোটে। এখন সেই নোট নিয়ে কী করা হবে, তা ভেবেই উদ্বেগ। নানা স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, ওই ফর্ম পূরণের টাকা মধ্যশিক্ষা পর্ষদে জমা দিতে হবে ১৬ নভেম্বরের মধ্যে। বেশ কিছু স্কুল আগেই তা ব্যাঙ্ক মারফত জমা দিয়েছে। কিন্তু নানা কারণে যারা জমা দিতে পারেনি, তারাই পড়েছে ধন্দে। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন ব্যাঙ্কে নোট পাল্টানোর ভিড় দেখে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
কাঁকসার সিলামপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার পাল যেমন বলেন, ‘‘যত তাড়াতাড়ি টাকা জমা দিতে পারব, চিন্তামুক্ত হব।’’ জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরের তরফে অবশ্য জানানো হয়, ফর্ম পূরণের ফি সরাসরি ব্যাঙ্কে জমা দেওয়াই নিয়ম। ব্যাঙ্কের পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই স্কুলগুলিকে তা সেরে ফেলতে বলা হয়েছে।
এ দিন শহরের নানা ব্যাঙ্কে ভিড় সামাল দিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুরে বিভিন্ন মোড়ে ট্রাফিক সামলাতে পুলিশের দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ। গাঁধী মোড়, সিটি সেন্টারের মতো কিছু জায়গায় ট্রাফিক পুলিশ ছিল না বলে অনেক বাসিন্দা দাবি করেন। যদিও পুলিশ কমিশনারেটের ট্রাফিক বিভাগ জানায়, তাদের কোনও কর্মীকে কোনও ব্যাঙ্কে মোতায়েন করা হয়নি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy