বুকে সর্দি বসে গিয়েছে বলে চিকিৎসা করেছিল দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল ও স্থানীয় বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র। কিন্তু মাস দেড়েক কেটে গেলেও বুকে ব্যাথা কমছিল না দু’বছরের শিশুর। সপ্তাহ খানেক আগে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয় পলাশডিহার ওই শিশুটিকে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে চিকিৎসকেরা জানান, শিশুটির ফুসফুসে বাদামের টুকরো আটকে রয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অস্ত্রোপচার করে বাদামের টুকরোটি বের করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গণেশ চন্দ্র ও আশিস ঘোষ। শিশুটিও সুস্থ রয়েছে।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁয়ের দাবি, ‘‘কলকাতার বাইরে এই ধরণের অস্ত্রোপচার বেশ জটিল। চিকিৎসকদের অনেকখানি সময় লেগেছে অস্ত্রোপচারে।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় মা মধুমিতা দাসের খাওয়ার থেকে একটি বাদাম তুলে মুখে দিয়ে দেয় দু’বছরের দেবরাজ। বুঝতে পারার পরেই মধুমিতাদেবী বাদামটি বের করার অনেক চেষ্টা করেন। তবে কিছুক্ষণ পরে ছেলে কাঁদছে না দেখে তিনি ভেবে নেন, বাদাম পেটে চলে গিয়েছে। আর কোনো সমস্যআ নেই। বাড়িতেও বিষয়টি কিছু জানাননি তিনি।
কিন্তু রাত থেকেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয় শিশুটির। রাতেই স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সপ্তাহখানেকের উপর সর্দি বসে গিয়েছে বলে চিকিৎসা শুরু হয়। কিছুদিন পরেও শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হচ্ছে না দেখে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে দেবরাজকে ভর্তি করান তাঁরা। মধুমিতাদেবীর দাবি, কিছুদিন ভর্তি থাকার পর হাসপাতাল থেকে বলা হয়, ছেলে সুস্থ হয়ে গিয়েছে। এরপরে তাঁরা দেবরাজকে বাড়ি নিয়ে চলে আসেন। কিন্তু কয়েকদিন পরেই খিঁচুনি শুরু হয় বলে তাঁদের দাবি। এরপরেই গত বুধবার শিশুটিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁরা। চিকিৎসকরা তাঁর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলার পরে সঠিক ঘটনা জানতে পারেন। এরপরেই এক্স-রে করিয়ে দেখা যায়, ফুসফুসে বাদাম আটকে রয়েছে।
এ দিন অস্ত্রোপচারের পরে মধুমিতাদেবী বলেন, ‘‘আমার ভুলেই কষ্ট পেল ছেলেটা। আমার উচিত ছিল চিকিৎসকদের আগেই ঘটনাটি খুলে বলা। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy