Advertisement
০৬ মে ২০২৪
কোরাপুর, গোকর্ণ

সেতু হয়নি, ভরসা সেই নৌকা

খড়ি নদীর উপরের বাঁশের সেতু পেরিয়েই রোজ মন্তেশ্বরের সুটরা উচ্চবিদ্যালয়ে যেতে হয় পূর্বস্থলী ১ ব্লকের কোরাপুর, গোকর্ণ, মিনাপুর-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের পড়ুয়াদের। স্বাস্থ্যকেন্দ্র যাওয়া, ব্যবসা, চাষবাসের প্রয়োজনেও প্রায় তিরিশটি গ্রামের মানুষ সেতুটি ব্যবহার করেন।

মন্তেশ্বর ও পূর্বস্থলীর মাঝে খড়ি নদীর উপরে বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে চলছে নিত্য পারাপার। সেতু হয়নি তবুও। নিজস্ব চিত্র।

মন্তেশ্বর ও পূর্বস্থলীর মাঝে খড়ি নদীর উপরে বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে চলছে নিত্য পারাপার। সেতু হয়নি তবুও। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৬ ০১:০৩
Share: Save:

খড়ি নদীর উপরের বাঁশের সেতু পেরিয়েই রোজ মন্তেশ্বরের সুটরা উচ্চবিদ্যালয়ে যেতে হয় পূর্বস্থলী ১ ব্লকের কোরাপুর, গোকর্ণ, মিনাপুর-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের পড়ুয়াদের। স্বাস্থ্যকেন্দ্র যাওয়া, ব্যবসা, চাষবাসের প্রয়োজনেও প্রায় তিরিশটি গ্রামের মানুষ সেতুটি ব্যবহার করেন। কিন্তু বর্ষায় নদীর জল বাড়লে বন্ধ হয়ে যায় সেতু দিয়ে পারাপার। তখন কয়েক হাজার মানুষের ভরসা নৌকা। এমনই হাল মন্তেশ্বরের মামুদপুর ২ পঞ্চায়েতের সুটরা ঘাট ও পূর্বস্থলী ১ ব্লকের দোগাছিয়া পঞ্চায়েতের গাগরা ঘাটের যোগাযোগ ব্যবস্থার। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে পাকা সেতুর দাবি জানানো হলেও প্রশাসনের তরফে সাড়া মেলেনি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সারা বছর নদীতে জল কম থাকায় দুই পারের প্রায় তিরিশটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ বাঁশের সেতু দিয়ে পারাপার করেন। স্কুলে যাওয়া, চিকিৎসা, ব্যবস্যার কাজে বহু মানুষকে প্রতিদিন সেতুটি ব্যবহার করতে হয়। হেঁটে পারাপার ছাড়াও সাইকেল, মোটরবাইক নিয়েও বহু মানুষ যাতায়াত করেন। বেশ কয়েকবার সেতু ভেঙে দুর্ঘটনাও ঘটেছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। সেতু থেকে পড়ে গিয়ে জখমও হয়েছেন অনেকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সব থেকে বেশি সমস্যা দেখা দেয় বর্ষার সময়। জল বেড়ে যাওয়ায় সেতু দিয়ে পারাপার করা বন্ধ করে দিতে হয়। কিন্তু ওই দু’টি ঘাটে নৌকার সংখ্যা কম থাকায় দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। তার জেরে অনেক সময় ঘণ্টাখানেকও অপেক্ষা করতে হয় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, পঞ্চায়েত সমিতি থেকে শুরু করে প্রশাসনের নানা স্তরে পাকা সেতুর জন্য দরবার করা হয়েছে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। সেতুটি তৈরি হলে পূর্বস্থলী ও মন্তেশ্বরের যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হবে। পূর্বস্থলীর দু’টি ব্লকে প্রচুর সব্জী চাষ হয়। পাকা সেতু হলে চাষিরা মন্তেশ্বর হয় উৎপাদিত পণ্য নিয়ে বর্ধমানের বিভিন্ন বাজারে পৌঁছাতে পারবেন। বর্ধমান মেডিক্যালে যেতেও সুবিধা হবে পূর্বস্থলীর মানুষের। মন্তেশ্বরের বাসিন্দাদেরও নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগর পৌঁছতে সুবিধা হবে। পূর্বস্থলীর মথুরা এলাকার বাসিন্দা লাল্টু ঘোষ জানান, সেতু তৈরির জন্য মাপজোপ, মাটি পরীক্ষাও হয়েছে। কিন্তু তার পরে আর কাজ এগোয়নি। সেতুটি তৈরি হলে এলাকার অর্থনীতির উন্নতি হবে বলে আশা লাল্টুবাবুর। সেতুর প্রয়োজনীয়তার কথা জানেন দোগাছিয়া পঞ্চায়েতর আধিকারিকেরা। পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান প্রণব রায়চৌধুরীর দাবি, পঞ্চায়েতের তরফে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার সেতুর আবেদন জানিয়েও কোন ফল মেলেনি।

খড়ি নদীর উপরে পাকা সেতুর প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করেছেন পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক প্রদীপ সাহা। সেতুটি তৈরির জন্য উদ্যোগ নিতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে শীঘ্রই কথা বলবেন বলে জানান প্রদীপবাবু। বিষয়টি বিধানসভাতেও তোলা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Boat Bridge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE