Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

পথে বেরোলেই গুঁতোর আতঙ্ক

তাড়া খেয়ে পথচারীরা পড়িমরি করে ঢুকে পড়লেন পাশের দোকানে। কোথাও বা এক গুঁতোয় সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মোটরবাইক, সাইকেল পড়ে গেল— দীর্ঘদিন ধরেই ষাঁড় আর গরুর উৎপাতে এমনই হাঁসফাঁস করছে কালনা শহর। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাজারে ভিড় হলে সমস্যা আরও বাড়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০৪
Share: Save:

তাড়া খেয়ে পথচারীরা পড়িমরি করে ঢুকে পড়লেন পাশের দোকানে। কোথাও বা এক গুঁতোয় সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মোটরবাইক, সাইকেল পড়ে গেল— দীর্ঘদিন ধরেই ষাঁড় আর গরুর উৎপাতে এমনই হাঁসফাঁস করছে কালনা শহর। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাজারে ভিড় হলে সমস্যা আরও বাড়ে।

কালনার ১৮টি ওয়ার্ডেই বহু মানুষই বাড়িতে পশুপালন করেন। কিন্তু কোনও স্থায়ী গোয়ালঘর বা গরু-ষাঁড়ের বিচরণক্ষেত্র নেই। ভোর হতেই রাস্তা, বাজারে ছেড়ে দেওয়া হয় পশুগুলিকে। রাতে বাজার, কোনও বাড়ির শেডের নীচে, এমনকী হাসপাতালেও গরু-ষাঁড়ের দলকে বিশ্রাম নিতে দেখা যায়। শহরের বাসিন্দা রঘু ঘোষের ক্ষোভ, ‘‘পশুগুলিকে মালিকেরা বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যান না।’’ গরু বাইরে ছেড়ে দেওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন অনেকে। যেমন, রমেন কর্মকার নামে এক জন বলেন, ‘‘শহরে ঘাস কোথায়! গোখাদ্য কিনে পশুপালন করা লাভজনক নয়। গরু বাইরে ছাড়া হলেও তাদের গতিবিধি নজরে রাখা হয়।’’ তবে তার পরেও বাজারে সাজানো ফল বা সব্জি দেখলেই তা মুহূর্তের মধ্যে চিবতে শুরু করছে গরুর দল। রেহাই পাচ্ছে না গেরস্থ বাড়ির ফুলের গাছগুলিও!

শহরে চরে বেড়ানো ছ’টি ষাঁড় নিয়ে সমস্যা আরও বেশি। কী রকম? এক ব্যবসায়ী জানান, ভরা বাজারে অনেক সময় দেখা যায় আচমকা ষাঁড়ের লড়াই শুরু হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ষাঁড়েদের এমনই রোষের শিকার হয়েছে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পার্কিংয়ে থাকা কয়েকটি সাইকেল, মোটরবাইক। ষাঁড়ের হামলা থেকে বাঁচতে আশেপাশের লোক জন কোনও রকমে পাশের সাইবার ক্যাফেতে আশ্রয় নেন। অনেক সময় শিঙের গুঁতোয় দোকানের কাচও ভাঙছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। ষাঁড়ের উৎপাতে শশীবালা স্কুল লাগোয়া একটি ক্লাবের লোহার গেটও ভেঙে পড়েছে। ষাঁড়ের হামলায় শহরে বহু মানুষ জখম হয়েছেন বলে জানান ব্যবসায়ী রমেশ ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘মাস খানেক আগে এক লটারি বিক্রেতাকে ষাঁড়ে গুঁতো মারে। বেশ কয়েক দিন তিনি ঠিকমতো চলাফেরাও করতে পারেননি।’’

গরু আর ষাঁড়ের উৎপাতে প্রশ্নের মুখে শহরের পরিচ্ছন্নতার দিকটিও। শহর জুড়ে যেখানে-সেখানে পড়ে থাকছে গোবর, আবর্জনা। সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে কালনার পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘ষাঁড়গুলির বিষয়ে বন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। গরুর উৎপাতের বিষয়ে বাসিন্দারা অভিযোগ জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalna Ox Scared
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE