Advertisement
E-Paper

বালতি গুদামে পড়ে, জঞ্জালে ভরেছে শহর

শহর জুড়ে আবর্জনা ছড়িয়ে। রাস্তায় ভ্যাট উপচে না পড়া পর্যন্ত আবর্জনা পরিষ্কার হয় না। অথচ, বাড়ি-বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য ছ’বছর আগে কেনা বালতি তালাবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে পুরসভার ত্রাণ দফতরে। সেই বালতিগুলির এখন হাল, জানা নেই গুসকরা পুরসভার কর্তাদের। এর ফলে এই পুর এলাকায় বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহের প্রকল্প শিকেয়।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৫ ০১:৪৮
এ ভাবেই রাস্তায় পড়ে জঞ্জাল। —নিজস্ব চিত্র।

এ ভাবেই রাস্তায় পড়ে জঞ্জাল। —নিজস্ব চিত্র।

শহর জুড়ে আবর্জনা ছড়িয়ে। রাস্তায় ভ্যাট উপচে না পড়া পর্যন্ত আবর্জনা পরিষ্কার হয় না। অথচ, বাড়ি-বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য ছ’বছর আগে কেনা বালতি তালাবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে পুরসভার ত্রাণ দফতরে। সেই বালতিগুলির এখন হাল, জানা নেই গুসকরা পুরসভার কর্তাদের। এর ফলে এই পুর এলাকায় বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহের প্রকল্প শিকেয়।

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, গুসকরা পুরসভায় চঞ্চল গড়াই পুরপ্রধান থাকাকালীন ২০০৯ সালের শেষ দিকে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’-এর টাকায় পাঁচ হাজার সাড়ে সাতশোটি বালতি কিনেছিল। তাতে পুরসভার খরচ হয়েছিল প্রায় দশ লক্ষ টাকা। অথচ, ওই বালতি বিলি না করার ফলে প্রকল্পের কাজই শুরু হয়নি। যা নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়েছে। গুসকরা পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের মনোজ সাউয়ের অভিযোগ, “এ তো টাকার অপচয় হচ্ছে। ওই বালতিগুলি আদৌ ঠিক আছে কি না, সেটাও তো দেখা দরকার।”

বালতিগুলি বিলি করা হল না কেন? পুরসভা সূত্রে জানা যায়, গত পুরভোটের আগে মাত্র দেড়শোটি বালতি বিলি করা হয়েছিল। তার পর থেকে আর একটি বালতিও ত্রাণ দফতরের গুদাম থেকে বেরোয়নি। পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের ৮, ৯, ১০ ও ১১— এই চারটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের বাড়ি-বাড়ি ওই বালতি বিলি করার উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু গত পুরবোর্ডে তৃণমূলের কাউন্সিলরদের মধ্যে এ নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। প্রশ্ন উঠেছিল, শুধু এই চারটি ওয়ার্ডেই কেন বালতি বিলি হবে? যার উত্তরে তৎকালীন পুরপ্রধান তৃণমূলের চঞ্চল গড়াই দলের কাউন্সিলরদের জানিয়েছিলেন, এই ওয়ার্ডগুলিকে ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। সেখানে বর্জ্য সংগ্রহের কাজ ঠিক মতো হলে সারা শহরেই এই প্রকল্প চালু করা হবে। কিন্তু তৃণমূলের কাউন্সিলররা তা শুনতে রাজি হননি। বরং বালতি কেনায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলেছিলেন বলে পুরসভা সূত্রের খবর।

বিভিন্ন পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী সকালে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ করবেন পুরকর্মীরা। প্রকল্পের নিয়ম অনুসারে, বাড়িতে লাল ও সবুজ রঙের দু’টি করে বালতি দেবে পুরসভা। একটি বালতিতে সাধারণ বর্জ্য ও অন্যটিতে চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্য থাকবে। পুরকর্মীরা ওই দু’টি বালতি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করবেন। তার পরে চিকিৎসা-বর্জ্য নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা হবে, যাতে বৈজ্ঞানিক উপায়ে তা মাটিতে মিশে যায়। এই প্রকল্প চালু না হওয়ায় গুসকরায় আগের মতোই রাস্তা থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করেন পুরসভার নিকাশি বিভাগের কর্মীরা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভ্যাট উপচে না পড়া পর্যন্ত পুরসভার জঞ্জাল বিভাগের কর্মীদের টিকি দেখতে পাওয়া যায় না। ফলে রাস্তার উপরেই আবর্জনা পড়ে থাকে। তাতে দূষণ ছড়ায়।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ৩১ জানুয়ারি কাউন্সিলরদের সভায় (বিওসি) ঠিক হয়েছিল, গুদামে পড়ে থাকা বালতিগুলি নষ্ট না করে শহরের গরিব মানুষের মধ্যে বিলি করে দেওয়া হবে। কিন্তু সেখানেও তৃণমূলের কাউন্সিলরদের দ্বন্দ্বে বালতি বিলি আটকে যায় বলে খবর। সম্প্রতি ঠিক হয়েছে, বালতিগুলি আবর্জনা সংগ্রহের কাজে লাগানো হবে। সে জন্য ওই চারটি ওয়ার্ডের বাড়িতে বালতি বিলি করা হবে বলে পুরবোর্ডের বৈঠকে ঠিক হয়েছে। গুসকরার পুরপ্রধান তৃণমূলের বুর্ধেন্দু রায় বলেন, “আমরা পরিকাঠামো তৈরি করেছি। আশা করছি চলতি মাস থেকেই সকালে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে বাঁশি বাজিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ করা যাবে।”

guskara soumen dutta municipality trinamool tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy