Advertisement
০৫ মে ২০২৪

কয়েন নেবে কারা, ক্ষোভ

নোট বাতিলের পর থেকেই কয়েনের আধিক্য দেখা যায় বাজারে। এক টাকা, দু’টাকার কয়েন চলছে না বলে গুজব ছড়ায়। মাইক, লিফলেটে প্রচার করেও সমস্যা মেটানো যায়নি। এর মধ্যেই ব্যাঙ্কগুলি কয়েন জমা নিতে চাওয়ায় সমস্যা বাড়ে।

কয়েনের থলি হাতে বৃদ্ধা। —নিজস্ব চিত্র।

কয়েনের থলি হাতে বৃদ্ধা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৭ ০২:২৪
Share: Save:

সভার মাঝেই কেউ প্রশ্ন ছুঁড়লেন, ‘এমন চললে খাব কী’, কেউ আবার থলেতে জমানো কয়েন ছুড়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন।

মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েন সমস্যা নিয়ে বৈঠকে এমনই ছবি দেখা গেল কালনায়।

সভা শেষে বেশ কিছু পদক্ষেপও করে মহকুমা প্রশাসন। তবে যতক্ষণ না হাতেকলমে ফল মিলছে, ততক্ষণ ভরসা পাচ্ছেন না ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ কেউই।

নোট বাতিলের পর থেকেই কয়েনের আধিক্য দেখা যায় বাজারে। এক টাকা, দু’টাকার কয়েন চলছে না বলে গুজব ছড়ায়। মাইক, লিফলেটে প্রচার করেও সমস্যা মেটানো যায়নি। এর মধ্যেই ব্যাঙ্কগুলি কয়েন জমা নিতে চাওয়ায় সমস্যা বাড়ে। সমাধান খুঁজতে এ দিন পুরশ্রী মঞ্চে ছোট-বড় ব্যবসায়ী, পুরপ্রধান, ব্যাঙ্কের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন মহকুমাশাসক। ব্যবসায়ীরা জানান, ব্যাঙ্ক কয়েন জমা না নেওয়ায় রাশি রাশি কয়েন জমা হচ্ছে। ঘাটতি দেখা দিচ্ছে পুঁজিতে। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক কয়েন জমা নেওয়ার আলাজা চার্জ নিচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে। ওই ব্যাঙ্কের আধিকারিকও জানান, ১০০ টাকা পর্যন্ত কয়েনে চার্জ লাগে না। তবে কেউ হাজার টাকা কয়েনে দিলে ৫০ টাকা কাটা হচ্ছে। শুনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী সমীর বসু বলেন, ‘‘অনেক মালে ৫ শতাংশ লাভ হয় না। অথচ ব্যাঙ্ক ৫ শতাংশ কেটে নেবে এ অন্যায়।’’ পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগও জানান, ব্যাঙ্কটি যদি এই নিয়ম আঁকড়ে রাখে তাহলে গ্রাহকেরা অ্যাকাউন্ট প্রত্যাহার করে নেবেন। অন্য ব্যাঙ্কগুলিও কয়েন না নিতে চাওয়ার পিছনে ভল্টে জায়গা না থাকা, কর্মীর অভাবের কথা জানান। একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক জানায়, তারা সপ্তাহে এক দিন গ্রাহক পিছু আড়াই হাজার টাকার কয়েন নিচ্ছেন। পুরপ্রধান তা বাড়িয়ে সপ্তাহে দু’দিন করতে বলেন। লোকের দরকার হলে পুরসভার তরফ থেকে সাহায়্যের আশ্বাস দেওয়া হয়।

এর মধ্যেই আচমকা পুঁটলি থেকে এক মুঠো কয়েন বের করে ছুড়ে দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বৃদ্ধা ভিখিরি হরিদাসি ডঙ্গি। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘বেশির ভাগ লোকই ভিক্ষাপাত্রে এক, দু’টাকার কয়েন দেয়। অথচ দোকানদারেরা ওই কয়েন নিয়ে খাবার দিচ্ছে না।’’ বৃদ্ধার কান্না থামান মহকুমাশাসক।

নীতিন সিংহানিয়া জানান, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে কয়েন নেওয়া ও দেওয়া দুই করতে হবে। আপাতত ব্যাঙ্ক মোট টাকার ১০ শতাংশ কয়েন দেবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়। ১৫ দিন পরে ২৫ শতাংশ কয়েন নেওয়ার কথাও হয়। সাধারণ মানুষের জন্য এক জন ম্যাজিস্ট্রেটকে মাথায় রেখে বিশেষ সেল খোলার কথা হয়। ব্যবসায়ীদের কাছে পুরপ্রধান আবেদন করেন, হাটে বাজারে আপাতত ১০ শতাংশ হারে কয়েনের লেনদেন শুরু করতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coins Anger কয়েন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE