Advertisement
০৫ মে ২০২৪
PMAY

নাম বাদ, ক্ষোভের মুখে অঙ্গনওয়াড়ি-আশাকর্মীরা

সমীক্ষার কাজ শুরু হওয়ার সময়েই তাঁদের বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়ে জেলার নানা জায়গায় প্রশাসনের দ্বারস্থ হন এই কর্মীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের আশঙ্কা করেছিলেন তাঁরা।

কেন্দ্রে আটকে কর্মীরা। ভাতারের সেডুয়া গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

কেন্দ্রে আটকে কর্মীরা। ভাতারের সেডুয়া গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাতার শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:১৩
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার দ্বিতীয় পর্যায় (আবাস প্লাস) থেকে তাঁদের নাম বাদ গেল কেন, সেই প্রশ্ন তুলে অঙ্গনওয়াড়ি ও আশাকর্মীদের উপরে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে। মঙ্গলবার দুপুরে ‘হামলাকারীদের’ হাত থেকে বাঁচতে বামুনাড়া পঞ্চায়েতের সেড়ুয়া গ্রামের ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দরজায় তালা দিয়ে নিজেদের আটকে রাখেন কর্মীরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে পুলিশ গিয়ে ওই দু’জনকে উদ্ধার করে। পরে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখান বিডিও (ভাতার) অরুণকুমার বিশ্বাসের কাছে। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূলের মদতেই ঘটনাটি ঘটেছে। তৃণমূল সরাসরি অভিযোগ না মানলেও ওই সব সমীক্ষকদের কারণে দলকে মুশকিলে পড়তে হচ্ছে বলে জানিয়েছে।

আশাকর্মী অর্চনা মালিক ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী মাধবী গড়াইয়ের অভিযোগ, ‘‘ফের সমীক্ষা করার নির্দেশ এসেছে। সেই জন্য আমরা কেন্দ্রের সামনে সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ জড়ো হই। তখনই গ্রামের কয়েকজন এসে আবাস যোজনায় তাঁদের নাম কেন বাদ দেওয়া হল, তার কৈফিয়ত চান। আমরা জবাব দিতেই উত্তেজিত হয়ে তেড়ে আসেন ওঁরা। ভয় পেয়ে কেন্দ্রের ঘরের ভিতরে ঢুকে দরজায় তালা লাগিয়ে দিই।’’ খবর পেয়ে সিভিক ভলান্টিয়ারেরা ঘটনাস্থলে যান। তারপরে ভাতার থানার পুলিশ গিয়ে ওই কর্মীদের উদ্ধার করে। পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়নের পূর্ব বর্ধমানের নেত্রী ঝর্ণা পালের দাবি, ‘‘ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। ওই দিন বিকেলে এক জনকে হুমকি দেওয়া হয়। তারপরে ফের মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটে। ভাতারের প্রতিটি গ্রাম থেকেই হুমকির অভিযোগ আসছে।’’ যদিও বিক্ষোভকারী রাজকুমার মণ্ডল, পিন্টু ঘোষ, প্রসন্ন দ্বাড়িদের দাবি, ‘‘নিয়মের মধ্যে থাকার পরেও আমাদের নাম কেন বাদ গেল, সেটাই জানতে গিয়েছিলাম। চড়াও তো দূরের কথা বিক্ষোভও দেখাইনি।’’ বিডিও-র আশ্বাস, ‘‘আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা যাতে বিপদে না পড়েন, সেটা আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখব। পুলিশকেও বিষয়টি জানাচ্ছি।’’

সমীক্ষার কাজ শুরু হওয়ার সময়েই তাঁদের বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়ে জেলার নানা জায়গায় প্রশাসনের দ্বারস্থ হন এই কর্মীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের আশঙ্কা করেছিলেন তাঁরা। পরে জেলা প্রশাসন আসরে নেমে তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় সমীক্ষার কাজে নামেন ওই কর্মীরা। এ দিন বিজেপির মণ্ডল সভাপতি বরুণ ঘোষ দাবি করেন, ‘‘তৃণমূলের কথা শুনে তালিকা তৈরি করছেন না বলেই ওই সমীক্ষকেরা বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন। তৃণমূলই ঘুরপথে চাপ তৈরি করছে।’’ যদিও তৃণমূলের ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ, সেড়ুয়া গ্রামের রমণ মণ্ডলের দাবি, ‘‘অনেক যোগ্যদের নাম বাদ গিয়েছে। সে জন্য তাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।’’ বিধায়ক (ভাতার) মানগোবিন্দ অধিকারীরও দাবি, ‘‘ওই সব সমীক্ষকদের জন্য আমরাও ক্ষোভের মুখে পড়ছি। দলেরও বদনাম হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

PMAY Asha Workers Anganwadi Workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE