Advertisement
E-Paper

ছড়াচ্ছে নাবিধসা, বিপাকে চাষি

কিছু দিন আগেই টানা মেঘলা আকাশ, ঘন কুয়াশা দেখে আলু নাবিধসার আশঙ্কা করেছিলেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। সেই আশঙ্কায় সত্যি হল। কালনা ১ ব্লকের সুলতানপুর পঞ্চায়েত এলাকার চাষিদের দাবি, ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে রোগ। ইতিমধ্যে সুলতানপুর পঞ্চায়েত এবং চাষিদের তরফে ব্লক কৃষি দফতরে চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৫১
আক্রান্ত আলুগাছ। নিজস্ব চিত্র।

আক্রান্ত আলুগাছ। নিজস্ব চিত্র।

কিছু দিন আগেই টানা মেঘলা আকাশ, ঘন কুয়াশা দেখে আলু নাবিধসার আশঙ্কা করেছিলেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। সেই আশঙ্কায় সত্যি হল। কালনা ১ ব্লকের সুলতানপুর পঞ্চায়েত এলাকার চাষিদের দাবি, ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে রোগ। ইতিমধ্যে সুলতানপুর পঞ্চায়েত এবং চাষিদের তরফে ব্লক কৃষি দফতরে চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

এ জেলার বেশির ভাগ চাষি জ্যোতি আলুর চাষ করেন। এই চাষে সব থেকে বেশি ক্ষতিহয় ছত্রাক ঘটিত নাবিধসায়। আলুগাছের পাতায় প্রথমে বাদামি ছোপ দেখা যায়। পরে গাছের কাণ্ড গলে যায়। দ্রুত এক জমি থেকে অন্য জমিতে ছড়িয়ে পরে নাবিধসা। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার নোট বাতিলরে ফলে নগদের অভাবে ধান তুলতে দেরি হয় চাষিদের। আলু চাষও শুরু হয় দিন কুড়ি পরে। টাকার জোগান না থাকায় ভিন রাজ্যের উন্নত মানের সংশোধিত বীজো কিনতে পারেননি বহু চাষি। হিমঘরের আলুই বীজ হিসেবে ব্যবহার করেন তাঁরা। ওই বীজ এবং আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি দেখে সম্প্রতি কৃষিকর্তারা নাবিধসার সংক্রমণের আশঙ্কা করেছিলেন। কৃষি দফতর থেকে চাষিদের লিফলেট পাঠিয়ে সাবধানও করা হয়।তবে তার মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে রোগ।

কালনা ১ ব্লকের সুলতানপুর পঞ্চায়েতের ভাটরা, রসুলপুর, ইসবপুর, হাটবেলে, হৃদয়পুরের মতো গ্রামে বহু জমিতেই আলুগাছ মরতে বসেছে। সুলতানপুরের চাষি দিনু পালের দাবি, ‘‘বিঘে তিনেক জমিতে ব্যপক নাবিধসার সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। গাছ ঝিমিয়ে যাচ্ছে। নানা কীটনাশক স্প্রে করেও কোনও লাভ হচ্ছে না।’’ ন’পাড়া গ্রামের আলু চাষি সুকুর মণ্ডল, রহমত মণ্ডলেরাও জানান, আলু চাষের বয়স এখন মাস দেড়েক হয়নি। সবে মাত্র ছোট ছোট আলু দেখা যাচ্ছে। এখন রোগ হলে ফলন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সুলতান পঞ্চায়েতের প্রধান সুকুর শেখ নিজেও চাষি। নাবিধসা দেখা দিয়েছে তাঁর জমিতেও। প্রধান বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই এক বিঘা জমিতে নাবিধসার প্রকোপে আলু নষ্ট হয়েছে। কৃষি দফতরকে পরিস্থিতির কথা জানানো হয়েছে।’’ তাঁর আরও দাবি, একে আলুর দর নেমে গিয়েছে। তার উপরে চাষ মার খেলে চাষিরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন। এই পঞ্চায়েতের পাশাপাশি আটঘোরিয়া-সিমলন এবং বাঘনাপাড়া পঞ্চায়েতের বেশ কিছু জমিতেও নাবিধসা দেখা দিয়েছে।

মহকুমা কৃষি দফরের সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘সুলতানপুরের পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে।’’ কিছুদিন ভাল ঠান্ডা থাকলে নাবিধসা ছড়ানোর সম্ভাবনা কমবে বলেও তাঁর দাবি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় চাষিদের বেশ কিছু পরামর্শও দিয়েছেন কর্তারা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, অনেকেই আক্রান্ত গাছে ফিনাইল, কেরোসিন স্প্রে করেন। এতে হিতে বিপরীত হয়। আক্রান্ত গাছে লিটার প্রতি জলে ডাইমিথোমর্ফ, ম্যানকোজেবের মিশ্রণ ৩ গ্রাম অথবা সাইমক্সানিল, ম্যানকোজেবের মিশ্রণ আড়াই গ্রাম স্প্রে করলে ভাল ফল মিলবে বলেও জানান তাঁরা। অন্যদিকে, রোগহীন আলু গাছের বয়স ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ হলে প্রতিষেধক হিসাবে লিটার প্রতি জলে কপার অক্সিক্লোরাইড ৪ গ্রাম অথবা ম্যানকোজেব আড়াই গ্রাম অথবা কপার হাইড্রোক্সাইড আড়াইগ্রাম অথবা মেটিরাম ৪ গ্রাম অথবা প্রপিনেব জাতীয় ছত্রাকনাশক স্প্রে করার কথাও জানান তাঁরা।

Potato Cultivation Fog
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy