খাতা দেওয়া হবে পড়ুয়াদের, সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা তা পাবে। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের জেরে কপালে ভাঁজ পড়েছে দুই বর্ধমানের শিক্ষা দফতরের কর্মী-আধিকারিকদের। কারণ, দুই জেলার জন্য এসে পৌঁছবে মোট ২৫ লক্ষ খাতা। তা রাখা হবে কোথায়, ভাবনায় পড়েছেন কর্তারা। রাখার জায়গা যদিও বা জোগাড় হয়, খাতা নষ্ট হয়ে যাবে কি না— মাথাব্যথা সে নিয়েও।
শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের খাতা দেবে সর্বশিক্ষা অভিযান। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের খাতা দেবে রাজ্য শিক্ষা দফতর। দু’টি দফতরকে নিয়ে গঠিত জেলা স্তরের সমন্বয় কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘এক লপ্তে ২৫ লক্ষ খাতা রাখা নিয়ে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কোথায়, কী ভাবে খাতা রাখা হবে তা নিয়ে দফতরের কর্মীরা চিন্তিত।’’
শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায়, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি পড়ুয়াকে তিনটি করে খাতা দেওয়া হবে। যার জন্য দুই জেলা মিলিয়ে ১২ লক্ষ ১৭ হাজার খাতা প্রয়োজন। নবম-দশম শ্রেণিতে প্রতিটি পড়ুয়াকে দু’টি সাদা ও দু’টি রুলটানা খাতা দেওয়া হচ্ছে। সে জন্য প্রায় ৭ লক্ষ ৮৬ হাজার খাতা দরকার। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ৫টি করে খাতা দেওয়া হবে। সে জন্য প্রায় ৫ লক্ষ ৮৭ হাজার খাতা আসবে জেলা শিক্ষা দফতরে।
এরই মধ্যে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের দেওয়ার জন্য সর্বশিক্ষা মিশন দফতরে তিন লক্ষেরও বেশি খাতা এসে পৌঁছেছে। যা নিয়ে মাথায় হাত কর্মীদের। খাতাগুলি আপাতত রাখা হয়েছে বর্ধমান লাগোয়া কাটোয়া রোডের পাশে একটি স্কুলে। তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারী সংগঠনগুলি জেলা শিক্ষা দফতর ও সর্বশিক্ষা অভিযানের কর্তাদের কাছে পড়ুয়ারা যাতে ঠিকমতো খাতা পায়, সেই দাবি জানিয়ে এসেছে। মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকদের সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি রথীন মল্লিক বলেন, ‘‘সরকার পড়ুয়াদের জন্য নিখরচায় খাতা দিচ্ছে। রাখার অভাবে যেন খাতা নষ্ট না হয়, সেটা দেখতে হবে।’’ বিরোধী শিক্ষক সংগঠনের নেতা স্বপন মালিকেরও বক্তব্য, ‘‘খাতা রাখবে কোথায়, সেটা নিয়ে দফতরের কর্মীরা বেশ চিন্তায় পড়েছেন।’’
নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য আসানসোলে প্রায় দু’লক্ষ ৩২ হাজার ও দুর্গাপুরে প্রায় দু’লক্ষ ৩৭ হাজার খাতা পাঠাতে হবে। পশ্চিম বর্ধমান শিক্ষা দফতরের এক পরিদর্শক বলেন, ‘‘আমাদের তো কোনও পরিকাঠামোই গড়ে ওঠেনি, কী ভাবে খাতা রাখব, খুবই চিন্তার বিষয়।’’
জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায়, আপাতত বর্ধমান লাগোয়া কাটোয়া রোডের একটি স্কুলে প্রায় তিন লক্ষ চল্লিশ হাজার খাতা রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে বাবুরবাগ সিএমএস উচ্চ বিদ্যালয়েও রাখা হবে। পূর্ব বর্ধমানের স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) খগেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘‘বেশি পরিমাণে খাতা আসতে শুরু করলে মহকুমায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে খাতা বিলিও চালু হয়ে যাবে। তাতে কোনও সমস্যা দেখা দেবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy