Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

ইস্টার্ন রেল বয়েজ স্কুলে বাংলা মাধ্যম চালু রাখার সিদ্ধান্ত রেলের

ইস্টার্ন রেল বয়েজ স্কুলে বাংলা ভাষায় পঠনপাঠন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এলেন রেল কর্তৃপক্ষ। রেলের নির্দেশে, নতুন শিক্ষাবর্ষে বাংলা মাধ্যমে পড়ুয়া ভর্তির বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

আসানসোলের স্কুল। নিজস্ব চিত্র

আসানসোলের স্কুল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৩৪
Share: Save:

ইস্টার্ন রেল বয়েজ স্কুলে বাংলা ভাষায় পঠনপাঠন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এলেন রেল কর্তৃপক্ষ। রেলের নির্দেশে, নতুন শিক্ষাবর্ষে বাংলা মাধ্যমে পড়ুয়া ভর্তির বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। রেলের এই সিদ্ধান্তে খুশি আসানসোলের এই স্কুলের শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রাক্তনীরাও। তবে বাংলা মাধ্যম বহাল রাখার পাশাপাশি এ বার থেকে ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠনও চালু করা হচ্ছে বলে জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ।

২০১৯ শিক্ষাবর্ষে ইস্টার্ন রেল বয়েজ স্কুলে বাংলা মাধ্যমে পড়ুয়া ভর্তি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রেল কর্তৃপক্ষ। অক্টোবরে এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এর পরেই শিল্পাঞ্চলের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ শুরু হয়। শতাধিক বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলা মাধ্যমে পঠনপাঠন চালু রাখার দাবিতে শহরের ছাত্র ও শিক্ষক সংগঠনগুলি আন্দোলন শুরু করে। সরব হয় নানা রাজনৈতিক দলও। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে রেল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয় রেলের নানা শ্রমিক সংগঠন। সমস্ত আর্জি মেনে নতুন শিক্ষাবর্ষে বাংলা মাধ্যম বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। আসানসোলের ডিআরএম প্রশান্তকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘আগামি পাঁচ বছরের জন্য বাংলায় পড়াশোনা চলবে।’’

রেলের এই সিদ্ধান্তের পরেই সম্প্রতি পড়ুয়া ভর্তির বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন শিক্ষাবর্ষে বাংলা মাধ্যমে পড়ুয়ার আসন কিছু কমানো হয়েছে। এ বার থেকেই এই স্কুলে চালু করা হচ্ছে সিবিএসই বোর্ডের অধীনে ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠন। এই মাধ্যমে ভর্তির বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে। রেল কর্তাদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। সংগঠনের জেলা সভাপতি রাজীব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রেল কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের স্বার্থরক্ষা করায় আমরা অভিনন্দন জানাচ্ছি।’’ রেলকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্কুলের প্রাক্তনী তথা আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়।

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইস্ট ইন্ডিয়ান রেল কর্তৃপক্ষ ১৮৮৬ সালে এই স্কুলটি তৈরি করে। ১৮৯৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কুলের অনুমোদন মেলে। শুরু থেকেই এখানে বাংলায় পঠনপাঠন চালু ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে এখানে হিন্দিতেও পড়াশোনা শুরু হয়। ২০১৮ সালে এখানে বাংলা মাধ্যমে প্রায় ১১০০ ও হিন্দি মাধ্যমে প্রায় সাড়ে পাঁচশো পড়ুয়া ছিল। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ হঠাৎ বাংলা মাধ্যমে পর্যাপ্ত পড়ুয়া মিলছে না দাবি করে এই মাধ্যমে বন্ধের কথা ঘোষণা করেন। পরিবর্তে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়া ভর্তি নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। তার পরেই এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবিতে শহর জুড়ে আন্দোলন শুরু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Eastern Railway Higher Secondary School Asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE