সচেতনতায় মিছিল।—নিজস্ব চিত্র।
আসানসোলের ট্রেনের অপেক্ষায় ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে বসেছিলেন দুর্গাপুরের সগরভাঙার নিত্যানন্দ সরকার। হঠাৎ কয়েক জন এসে বিনীত ভাবে প্রশ্ন করলেন, ‘‘ট্রেনে যাতায়াতের সময় আপনি কী অসুবিধা বোধ করেন?’’ মুহূর্তের জন্য যেন আকাশ থেকে পড়লেন নিত্যানন্দবাবু!
বছরের পর বছর ট্রেনে যাতায়াত করছেন। নোংরা কামরা, আলো-পাখা না জ্বলা— সব গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেউ এ সব সমস্যার কথা জানতে চায়নি। হঠাৎ হল কী? নিত্যানন্দবাবুর মতোই প্রথমটায় চমকে গিয়েছিলেন ভরত মহারাজ, বেহুলা মণ্ডল, শেখ সৈয়দরা। পরে বুঝলেন, যাত্রী স্বাচ্ছ্যন্দ নিয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য যাত্রীদের মাঝে নেমেছেন রেলের আধিকারিকেরা। তাঁদের সামনে পেয়ে অভাব-অভিযোগের কথা জানালেন অনেক যাত্রী।
যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য সপ্তাহ উপলক্ষে বুধবার দুর্গাপুর আসেন রেলের আসানসোল ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্সিয়াল ম্যানেজার আশুতোষ উপাধ্যায়। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তিনি যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। কেউ অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসে কামরা সংখ্যা বাড়ানোর আর্জি, কেউ বারবার মাদক খাইয়ে সর্বস্ব লুঠের ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ জানালেন। লোকাল ট্রেনের অপরিষ্কার কামরার প্রসঙ্গও উঠল। রেলের আধিকারিকেরা সব লিখে নিলেন, ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দিলেন। তবে কর্তারা চলে যেতেই এক যাত্রীর স্বগতোক্তি, ‘‘কাজের কাজ হবে না। সবই লোক দেখানো!’’ আসানসোল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক বিশ্বনাথ মুর্মু অবশ্য জানান, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য বাড়াতেই এমন উদ্যোগ। যাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে বলে তাঁর আশ্বাস।
যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা গড়ার জন্য ছোট ছোট নাটকেরও আয়োজন হয়েছিল। যেখানে-সেখানে থুতু বা পানের পিক না ফেলা, ট্রেনে অপরিচিত কারও কাছে খাবার না খাওয়া, ওভারব্রিজ এড়িয়ে রেললাইন ধরে পারাপার না করা, বন্ধ রেলগেট টপকে লাইন না পেরোনো-সহ নানা সচেতনতামূলক নাটক হয় ট্রেন ধরার জন্য অপেক্ষমান যাত্রীদের সামনে। এমনই এক যাত্রী, দুর্গাপুরের স্টেশন বাজার এলাকার সুনির্মল কেশ বলেন, ‘‘দিন-দিন রেলের প্রতি যাত্রীদের আস্থা কমছে। এই ধরনের উদ্যোগে তাতে কিছুটা হলেও প্রলেপ পড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy