Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে পগারপার ধর্ষণে অভিযুক্ত

ঝটকা দিয়ে পুলিশের হাত ছাড়িয়ে ছুট লাগিয়েছিল সদ্য ধরা পড়া ‘বন্দি’। পুলিশও দৌড় দেয় পিছু পিছু। কিন্তু রাস্তা টপকে, পুকুর সাঁতরে বন্দি পগারপার। পুলিশকর্মীও জলে নেমেছিলেন। কিন্তু কাদা ছাড়া হাতে এল না কিছুই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১৫
Share: Save:

ঝটকা দিয়ে পুলিশের হাত ছাড়িয়ে ছুট লাগিয়েছিল সদ্য ধরা পড়া ‘বন্দি’। পুলিশও দৌড় দেয় পিছু পিছু। কিন্তু রাস্তা টপকে, পুকুর সাঁতরে বন্দি পগারপার। পুলিশকর্মীও জলে নেমেছিলেন। কিন্তু কাদা ছাড়া হাতে এল না কিছুই।

সোমবার দুপুরে জামালপুর থানা থেকে পালায় নাবালিকা ধর্ষণে অভিযুক্ত বছর পঁচিশের ওই যুবক। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালের যদিও দাবি, “শৌচাগার যাওয়ার নাম করে ওই অভিযুক্ত পালিয়ে গিয়েছে।” জামালপুর থানার এক এএসআই ও এক কনস্টেবলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত প্রদীপ মুর্মুর বাড়ি জামালপুরের জৌগ্রামের উত্তরপাড়ায়। ওই এলাকারই চোদ্দ বছরের এক নাবালিকাকে ফাঁকা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে একটি মাঠে ধর্ষণ এবং খুনের হুমকি দেওয়া অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। শনিবারের ওই ঘটনার পরে ওই কিশোরীর মা-বাবা বাড়ি ফিরে এসে মেয়েকে দেখতে না-পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। রবিবার সকালে তার খোঁজ মেলে। জিজ্ঞাসাবাদের পরে বাবা-মাকে ঘটনাটি জানায় ওই কিশোরী। নির্যাতনের কথা জানালে প্রদীপ খুনের হুমকিও দেয় বলে তার অভিযোগ। রবিবার সন্ধ্যায় জামালপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণ ও শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন নিরোধক আইন ধারায় মামলা শুরু করে। রাতেই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত যুবকটিকে।

জানা যায়, এ দিন সকালে বর্ধমান জেলা আদালতে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় নথি তৈরি হয়ে যায়। তারপরে নিয়ম মোতাবেক ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানো হয় বন্দিকে। সেখান থেকে বেলা ১০টা নাগাদ জামালপুর থানায় নিয়ে আসা হয় তাকে। জামালপুর থানার এক কর্মী বলেন, “ওই বন্দির হাত ধরে থানার ভিতর লক্ আপের ভিতর ঢোকানোর সময় পুলিশকর্মীকে এক ঝটকায় ফেলে দেয় সে। তারপরেই সোজা থানার বাইরে ছুট।”

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টা নাগাদ থানার ভিতর থেকে চিৎকার আসা, ‘পালাল, পালিয়ে গেল’। আশপাশের বাড়ি, দোকান থেকে বেরিয়ে অনেকে দেখেন, রাস্তা দিয়ে ছুটছে এক যুুবক। পিছনে ছুটছে পুলিশকর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে পাশের হালদার পুকুরে ঝাঁপ দেয় ওই অভিযুক্ত। তা দেখে পুলিশের এক কর্মীও ঝাঁপ মারে। কিন্তু চোখের নিমেষে সাঁতার কেটে পুকুর পাড়ে উঠে হাওয়া হয়ে যায় বন্দি। পুলিশ কর্মী শেষমেশ মাথআ চাপড়ে জল-কাদা মেখে খালি হাতে উঠে আসেন।

পরে ওই যুবককে ধরতে বিভিন্ন থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশের কর্তারা ছুটে যান জামালপুর থানায়। কিন্তু রাত পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি অভিযুক্ত প্রদীপের। এ দিন ওই কিশোরীর গোপন জবানবন্দি নেওয়ার জন্য সিজেএমকে নির্দেশ দেন বিশেষ আদালতের বিচারক পার্থপ্রতিম দত্ত। একই সঙ্গে পুলিশকে ২৪ এপ্রিল রিপোর্ট দিতে বলা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rape accused police station escapes
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE