Advertisement
০৪ জুন ২০২৪

রেশনের রসিদ নেই, কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ

সবে ঝাঁপ খুলেছে রেশন দোকানের। থলি হাতে দাঁড়িয়ে গ্রাহকের দল। আচমকা ভিড় ঠেলে হানা দিলেন এক জন। এসেই নানা অনিয়ম খতিয়ে দেখে নির্দেশ দিলেন, রেশন দোকানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। শনিবার সকালে কাঁকসার কুলডিহায় ঝটিকা পরিদর্শনে এসে এমন ভূমিকাতেই দেখা গেল দুর্গাপুরে মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরাকে।

আচমকা অভিযান রেশন দোকানে। নিজস্ব চিত্র।

আচমকা অভিযান রেশন দোকানে। নিজস্ব চিত্র।

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৬ ০১:৩১
Share: Save:

সবে ঝাঁপ খুলেছে রেশন দোকানের। থলি হাতে দাঁড়িয়ে গ্রাহকের দল। আচমকা ভিড় ঠেলে হানা দিলেন এক জন। এসেই নানা অনিয়ম খতিয়ে দেখে নির্দেশ দিলেন, রেশন দোকানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। শনিবার সকালে কাঁকসার কুলডিহায় ঝটিকা পরিদর্শনে এসে এমন ভূমিকাতেই দেখা গেল দুর্গাপুরে মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরাকে।

প্রশাসনের সূত্রে খবর, মহকুমাশাসক ওই দোকানে পৌঁছতেই দেখেন গ্রাহকদের রসিদ দেওয়া হচ্ছে না। ডিসপ্লে বোর্ডে মজুদ জিনিসপত্রের কোনও উল্লেখ নেই। এমনকী দোকানের রেজিস্ট্রারটিও ঠিক নেই বলে অভিযোগ। এরপরেই শঙ্খবাবু রেশন দোকানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন।

এখানেই শেষ নয়। কুলডিহা থেকে বেরনোর পথে বালিবোঝাই ট্রাক্টর দেখতে পান প্রশাসনের কর্তারা। ‘কাগজ দেখান’— নির্দেশ দেন মহকুমাশাসক। কিন্তু প্রয়োজনীয় কোনও কাগজপত্র না দেখাতে পারার ফলে পুলিশ এসে ট্রাক্টরটিকে নিয়ে যায়। জরিমানা আদায় করার জন্য ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রবিবারের সকালে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের একটি রেশন দোকানে হানা দিয়েও প্রশাসনের কর্তারা দেখেন, রেজিস্ট্রারে লেখা দিন আর খাদ্য সামগ্রী বিতরণের দিন আলাদা। ওই দোকানের বিরুদ্ধেও মহকুমাশাসকের নির্দেশে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিডিও শুভ সিংহরায়।

তবে সর্বত্রই যে প্রশাসনের কর্তাদের এমন মূর্তিতে দেখা গিয়েছে, এমনটা নয়। যেমন, মলানদিঘির একটি রেশন দোকান পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন মহকুমাশাসক।

প্রশাসনের কর্তাদের হাতের কাছে পেয়ে নিজেদের সমস্যার কথাও জানিয়েছেন বাসিন্দারা। যেমন, শিরষা গ্রামের বাসিন্দারা মহকুমাশাসককে সামনে পেয়ে এলাকায় ধস রুখতে পদক্ষেপ করার অনুরোধ করেন। আবার লাউদোহার বাসিন্দারা ব্লকে একটি ডিগ্রি কলেজ তৈরির আবেদন জানিয়েছেন।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি ব্লকে বিডিও-র নেতৃত্বে এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে নজরদারি কমিটি গড়া হয়েছে। যোগাযোগ রাখা হচ্ছে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গেও। শঙ্খবাবু বলেন, ‘‘নজরদারি কমিটি ধারাবাহিক ভাবে এমন অভিযানে বের হবে। রেশন দোকান, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, মোরাম খাদান, বালি খাদান সব জায়গাতেই অভিযান চলবে। জেলাশাসকের নির্দেশে প্রশাসনকে মানুষের আরও কাছে পৌঁছে দিতেই এমন উদ্যোগ।’’

এমন অভিযানের ফলে খুশি বাসিন্দারাও। রেশন দোকানের গ্রাহকেরা জানান, আগে বেশ কয়েক বার পরিষেবা নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ্ হয়েছিলেন তাঁরা। তাতে লাভ হয়নি বিশেষ। এই পরিস্থিতিতে ‘এ দিন যেন মেঘ না চাইতেই জল মিলল’— এমনটাই মনে করছেন গ্রাহকদের একাংশ। কুলডিহার বাসিন্দারা জানান, অতিরিক্ত বালি বোঝাই লরি, ট্রাক্টর যাতায়াত করার ফলে রাস্তা নষ্ট হয়ে যায়। এমন অভিযান চললে কাজের কাজ কিছু হবে বলে আশা তাঁদের। লাউদোহার বাসিন্দা চঞ্চল ভট্টাচার্য, বালিজুড়ির রঞ্জিত মুখোপাধ্যায়দের আশা, ‘‘প্রশাসনের নজরদারি থাকলে বহু সমস্যা শুরুতেই মিটে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur Ration Shop running with irregularities
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE