Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Andal

একটাই প্রার্থনা, চাই পুনর্বাসন

হরিশপুর গ্রামে ১৯৮৭-তে দুর্গা মন্দিরে শুরু হয় দুর্গা পুজো। কিন্তু তার পরে, সময় ও পরিস্থিতি দ্রুত বদলেছে। ২০২০-তে ধসের জেরে গ্রামে প্রায় একশোটি বাড়িতে ফাটল ধরে। গ্রামের মোট পাঁচটি কুয়ো ধসে যায়।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
অন্ডাল শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:০০
Share: Save:

বিপর্যস্ত বাড়ি। জীবন যেন ঝুলছে সুতোয়। কয়লা শিল্পাঞ্চলের অন্ডালের হরিশপুর ও বহুলা গ্রামের হাল এমনই। এই পরিস্থিতিতে, দেবীর আবাহনের মুহূর্তে তাঁদের একটাই প্রার্থনা, দ্রুত দেওয়া হোক পুনর্বাসন।

হরিশপুর গ্রামে ১৯৮৭-তে দুর্গা মন্দিরে শুরু হয় দুর্গা পুজো। কিন্তু তার পরে, সময় ও পরিস্থিতি দ্রুত বদলেছে। ২০২০-তে ধসের জেরে গ্রামে প্রায় একশোটি বাড়িতে ফাটল ধরে। গ্রামের মোট পাঁচটি কুয়ো ধসে যায়। বাসিন্দারা জানান, এই মুহূর্তে জল মেলে না গ্রামের প্রায় কোনও কুয়োতেই।

দুর্গা মন্দিরের সামনেই তপন পালদের দোতলা বাড়ির একতলাটি ভূগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। তপন বলেন, “পুজোর সময় মনখারাপ লাগে। নিজের বাড়িতে থাকতে পারি না। গ্রামের বাইরে আমাদের মতো অন্তত ৪০টি পরিবার ভাড়াবাড়িতে রয়েছে। কেউ বা ইসিএলের পরিত্যক্ত আবাসনে থাকেন।” তবে গ্রামে এ বছরও পুজো হচ্ছে। কিন্তু গ্রামের বাসিন্দা তাপস গোপ, প্রশান্ত মণ্ডলেরা জানাচ্ছেন, ১৯৯৮-এ তাঁদের গ্রামকে ধসপ্রবণ ঘোষণা করেছিল ‘ডিরেক্টর জেনারেল অব মাইন সেফটি’। তার পরে, ৫৫০টি পরিবারকে সচিত্র পরিচয়পত্র দেওয়া হয় ২০১০-এ। কিন্তু পুনর্বাসন অধরাই থেকে গিয়েছে। তাপসরা বলেন, “দেবীর কাছে একটাই প্রার্থনা, দ্রুত যাতে পুনর্বাসন মেলে। আর তত দিন যেন আমাদের রক্ষা করেন মা দুর্গা।”

এ দিকে, অন্ডালের বহুলা গ্রামে প্রায় চার হাজার পরিবারের বাস। এখানে রয়েছে, দু’টি পারিবারিক পুজো। তা ছাড়া, দু’টি বারোয়ারি পুজোও রয়েছে। পুজোগুলির সঙ্গে যুক্ত অজয় পাল, হারাধন মণ্ডলেরা জানান, গ্রাম থেকে দু’শো মিটার দূরে দু’টি খোলামুখ খনি রয়েছে। সম্প্রতি ধসের জেরে গ্রামের একটি পুকুর, একটা খোলামুখ খনির জল তলিয়ে গিয়েছে। গ্রামের বাসিন্দা বিভাস মণ্ডল বলেন, “শতাধিক বাড়িতে ফাটল ধরেছে। এ বারেও পুজো হবে। কিন্তু পুজোর মধ্যেও আমাদের আশঙ্কা, কখন জীবন-জীবিকা নিয়েসমস্যা তৈরি হয়।”

ইসিএলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তা জানান, কোল ইন্ডিয়া পুনর্বাসনের জন্য ইতিমধ্যেই টাকা বরাদ্দ করেছে। পুনর্বাসন দেওয়ার নোডাল এজেন্ট আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ)। এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “প্রয়োজনীয় কাজের পরেও, কেন্দ্র বরাদ্দ দিচ্ছে না। তাই এই হাল। কাজ আটকে আছে।” তবে ইসিএলের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, বাজারদরের সঙ্গে সঙ্গত রেখে দ্বিতীয় কিস্তির জন্য কত টাকা প্রয়োজন, সে হিসাব এখনও রাজ্য সরকার দিতে পারেনি। তাই টাকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Andal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE