Advertisement
E-Paper

রানিগঞ্জে পুকুর ভরাটের নালিশ, সরব বাসিন্দারা

শিল্পাঞ্চলে জলের সমস্যা নিত্য দিনের। বেআইনি ভাবে পরপর পুকুর ভরাট সেই সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। রানিগঞ্জ ও তার আশপাশে একটি চক্র এই পুকুর ভরাটে যুক্ত বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৬ ০২:২৭
পরিদর্শনে পুরসভার দল।নিজস্ব চিত্র।

পরিদর্শনে পুরসভার দল।নিজস্ব চিত্র।

শিল্পাঞ্চলে জলের সমস্যা নিত্য দিনের। বেআইনি ভাবে পরপর পুকুর ভরাট সেই সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। রানিগঞ্জ ও তার আশপাশে একটি চক্র এই পুকুর ভরাটে যুক্ত বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, পুলিশ-প্রশাসন সব কিছু জেনেও কোনও পদক্ষেপ করে না। রানিগঞ্জ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার (বিএলএলআর) দফতর অবশ্য জানায়, সম্প্রতি পুকুর ভরাট নিয়ে পুলিশে একটি অভিযোগ করা হয়েছে।

রানিগঞ্জে নেতাজি সুভাষ রোডে এক নার্সিংহোমের পিছনে একটি পুকুর দুষ্কৃতীরা ভরাট করছে বলে অভিযোগ। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পুকুরের ধারে একটি চাটাই দিয়ে ঘেরা ছোট ঘর। সেখানে রাখা আছে কোদল, গাঁইতি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এক একরেরও বেশি জায়গার উপরে এই পুকুরটি এক সময়ে সিহারশোল জমিদার বাড়ির সম্পত্তি ছিল। জমিদারি উঠে যাওয়ার পরে পুকুরটির তিন বার মালিকানা বদলেছে। যদিও বিএলএলআর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন কোনও মালিকের নাম দফতরে নথিভুক্ত হয়নি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুকুরটির প্রায় ২৫ শতাংশ বুজিয়ে ফেলা হয়েছে। ওই অংশে বাড়ি তেরির জন্য প্লট ভাগ করার নকশা তেরি হচ্ছে। পুকুরটি নিয়ে জমি মাফিয়াদের চক্র সক্রিয় হয়েছে, এ কথা বারবার জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি বাসিন্দাদের একাংশের। বিএলএলআর দফতরের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, এই পুকুরট ভরাট নিয়ে ২৯ এপ্রিল থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, কারা এই কাণ্ড ঘটাচ্ছে, তা দফতরের কর্তাদের জানা আছে। তা সত্ত্বেও কারও নাম না দিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আসানসোল পুরসভার একটি দল ওই জায়গাটি পরিদশর্ন করে। ছিলেন বরো চেয়ারম্যান সঙ্গীতা সারদা, স্থানীয় সিপিএম কাউন্সিলর আরিফ জলিল ও সুচিতা পাল। সঙ্গীতা সারদা বলেন, ‘‘পুকুর ভরাট বন্ধের জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী দাবি করেন, এর আগে তারবাংলা মোড়ের কাছে একটি পুকুর ভরাট করে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। স্কুলপাড়ায় একটি পুকুরের অর্ধেক বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে। গির্জাপাড়ায় একটি পুকুর ভরাটের চেষ্টা আটকেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তিনি বলেন, “শুনেছি বিএলএলএলআর দফতর একটি অভিযোগ করেছে। কিন্তু তাতে কি সমস্যা মিটবে? আমরা এর আগে মহকুমায় কয়েকটি পুকুর ভরাট নিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। ফল হয়নি।’’ তাঁর দাবি, ভূমি দফতরের একাংশের মদত রয়েছে এই অবৈধ কারবারে।

রানিগঞ্জ বণিক সংগঠনের কর্তা রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতানেরও অভিযোগ, “একের পর এক পুকুর ভরাট হয়ে যাচ্ছে। বিক্রি হয়ে যাচ্ছে খাস জমিও। আমরা বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে নামতে চাই। পুরনো এই পুকুরগুলি মানুষ ব্যবহার করেন। আমাদের দাবি, দুষ্কৃতীদের ধরে শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি যে পুকুরের যতটা বোজানো হয়েছে, তা আবার মাটি কেটে পুরনো অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে।’’ তাঁর মতে, পুকুরের গভীরতা আরও পাঁচ-ছয় ফুট করে বাড়িয়ে দিতে হবে। তবেই এই চক্রের নিকেশ সম্ভব।

রানিগঞ্জের বিএলএলআরও সুমন সরকার অবশ্য পুকুর ভরাটে দফতরের কারও মদত দেওয়ার কথা মানতে চাননি। তিনি জানান, যখন যেখানে এই ধরনের বেআইনি কাজের অভিযোগ মেলে, ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, বিএলএলআর দফতর একটি অভিযোগ করেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।

pond filling Raniganj enviornment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy