প্রতীকী ছবি।
টিকিট সংরক্ষণ কেন্দ্রে দালাল-রাজ নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। দালালদের রমরমা বন্ধ করতে বিশেষ নজরদারিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশন কর্তৃপক্ষ। আরপিএফ কর্মীরা যাত্রী সেজে নজরদারি চালানোর পরে শতাধিক দালালকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানাল রেল। এ ছাড়া মহিলা কামরায় পুরুষদের যাত্রা, চলন্ত ট্রেনে চুরি-ছিনতাই রুখতেও পদক্ষেপ করে ফল মিলেছে বলে রেলকর্তাদের দাবি।
আসানসোল স্টেশন-সহ এই ডিভিশনের বিভিন্ন স্টেশনেই দালালদের দৌরাত্ম্য নিয়ে যাত্রীদের ক্ষোভ অনেক দিনের। সম্প্রতি আসানসোলের বিএনআর লাগোয়া সংরক্ষণ কেন্দ্রে দালালদের সঙ্গে যাত্রীদের গোলমালও বাধে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অভিযোগ পাওয়ার পরে শহরের টিকিট সংরক্ষণ কেন্দ্রগুলিতে বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত হয়। আরপিএফ কর্মীরা সাধারণ যাত্রী সেজে বিভিন্ন দিনে নানা টিকিট কাউন্টারে লাইন দেন। সেখান থেকে তাঁরা দালাল অভিযোগে ১৩৬ জনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দালালেরা কখনও বেনামে টিকিট কেটে রাখে। আবার কখনও রেলকর্মীদের একাংশের সঙ্গে যোগসাজসে ঘুরপথে যাত্রীদের টিকিট সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে দেয়।
আসানসোল ডিভিশনের রেল আধিকারিকেরা জানান, দালাল-রাজে রাশ টানা ছাড়াও যাত্রীদের নিরাপত্তায় এপ্রিল মাস জুড়ে ডিভিশনের সর্বত্র অভিযান চালিয়েছে আরপিএফ। অনেক সময়ে পুরুষ যাত্রীরা জোর করেই মহিলা কামরায় উঠে পড়েন বলে অভিযোগ ওঠে। সে নিয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতিও তৈরি হয়। এই বেনিয়ম ঠেকাতে রেলের তরফে বিভিন্ন ট্রেনে আচমকা অভিযান চালিয়ে জনা সত্তরকে গ্রেফতার করেছে আরপিএফ। চিত্তরঞ্জন থেকে আসানসোলের মাঝে মেল ট্রেনগুলিতে যাত্রীদের ব্যাগ-সহ নানা সামগ্রী ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বারবার। এপ্রিল মাস জুড়ে বিভিন্ন ট্রেন থেকে বমাল কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছে ১১টি মোবাইল ফোন, অনেক গয়না ও প্রায় ৭৯ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। রেলপুলিশের বিভিন্ন থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগের তালিকা মিলিয়ে উদ্ধার হওয়া সামগ্রীগুলি ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রেলের কর্তাদের দাবি, ইদানীং বিহারগামী নানা ট্রেনে মদ পাচারের প্রবণতা বেড়েছে বলে নজরে এসেছে। আরপিএফ এবং আবগারি দফতর যৌথ অভিযান চালিয়ে প্রায় ৭০ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করেছে। দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। আবগারি দফতর সূত্রের খবর, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, আসানসোলের রেলপাড় এলাকায় বেআইনি ভাবে এই মদ তৈরি করা হচ্ছে।
আসানসোলের ডিআরএম প্রশান্তকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়টি সারা বছরই আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখি। তবে এপ্রিলে বিশেষ অভিযান চালানোয় আরও ভাল ফল মিলেছে।’’ তিনি আরও জানান, ট্রেনে যাত্রা করার সময়ে পরিবার থেকে বিছিন্ন হয়ে যাওয়া বা কোনও কারণে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসা ২৭ জন নাবালক-নাবালিকাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy