শিষ্যকে পাকড়াও করে খোঁজ মিলেছিল গুরুর। শেষমেশ শিষ্যকে সামনে বসিয়ে নাগাড়ে দু’দিন জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে বর্ধমানের মহিমনগরের একটি আশ্রমের সাধু মোকলানন্দ ব্রহ্মচারী ওরফে শ্যামাপ্রসাদ চক্রবর্তীও তাঁর ‘কীর্তি’র কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করল পুলিশ। জাল নোট কারবারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শনিবার তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কী ভাবে নাগাল মিলল ওই সাধুর? পুজোর আগে জাল নোট-সহ ধরা হয় এক জনকে। দিন কয়েক আগে বর্ধমান স্টেশনে আরও এক জনের কাছ থেকেও মেলে বেশ কিছু জাল নোট। তাদের জেরা করে গত শুক্রবার বর্ধমান শহরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী জগন্নাথ দে’কে পাকড়াও করে পুলিশ। শিষ্য জগন্নাথকে জেরা করে ওই ‘সাধু’র নাম সামনে আসে। এরপরেই শ্যামাপ্রসাদবাবুকে বর্ধমান থানায় নিয়ে আসা হয়।
তারপরে শুক্রবার এসডিপিও (বর্ধমান সদর) সৌমিক সেনগুপ্তর নেতৃত্বে একটি দল জাল নোট কারবারে জড়িত অভিযোগে ধৃতদের সঙ্গে মুখোমুখি জেরা করে ওই সাধুকে। পুলিশের দাবি, সেখানেই জেরার মুখে সাধু জানান, ভিন্ জেলা ও রাজ্য থেকে তাঁর শিষ্যরা আসতেন। আশ্রমের ভিতরে মজুত থাকত জাল টাকা। এরপরে বর্ধমানের শিষ্যদের কাছে ‘খবর’ পাঠাতেন গুরু। ওই শিষ্যরা ‘বাহক’দের মাধ্যমে জাল টাকা বর্ধমানে ছড়ানোর কাজ করত। ওই সাধুকে পুলিশ আটক করার পরে আশ্রম তালাবন্ধ হয়ে রয়েছে।
এ দিন ধৃত সাধুকে বর্ধমান আদালতে পাঠানো হলে চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। সাধুর ছেলে নৃসিংহবাবুর যদিও দাবি, “বছর খানেক ধরে জগন্নাথবাবু বাবার কাছে আসতেন। বাবাকে যে এই ভাবে ফাঁসাবে, ভাবতেই পারছি না।”
পুলিশের অনুমান, আদতে চোরাই সোনা কেনাবেচা হতো ওই আশ্রমে। প্রথম দিকে, বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের গয়নার দোকানের মালিকেরা ওই সাধুর শিষ্য হয়ে আশ্রমে যেতেন। লোকালয় থেকে আশ্রমটি দূরে থাকায় রাতের দিকে বেশি লোকজন আশ্রমে যেত না। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই চোরাই সোনার হাতবদল হতো বলে পুলিশের অনুমান। গত কয়েক মাস ধরে জাল টাকার কারবার শুরু হয়।
পুলিশের দাবি, গুরু-শিষ্যকে জেরা করে জাল নোট চক্রে জড়িত আরও কয়েক জনের খোঁজ মিলেছে। তাঁদের বিষয়ে খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy