নিয়মিত কর্মসূচিতে আগের তুলনায় সংখ্যাটা অনেক কমেছে। কিন্তু জেলায় স্কুলছুটের সংখ্যা একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনা যাচ্ছে না। সর্বশিক্ষা অভিযান সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে যা ন’হাজারের আশপাশে ছিল এখন সেটা পাঁচশোয় এসে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তার নীচে নামছে না। জেলা সর্বশিক্ষা দফতরের প্রকল্প আধিকারিক শারদ্বতী চৌধুরী অবশ্য বলেন, ‘‘ধারাবাহিক চেষ্টা চলছে। দ্রুত স্কুলছুট শূন্যে নেমে আসবে।’’
সর্বশিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে জেলায় প্রথম স্কুলছুট নিয়ে সমীক্ষা করা হয়। শিক্ষক, পার্শ্বশিক্ষক, শিক্ষাকর্মীরা একযোগে সমীক্ষার কাজ করেন। তার রিপোর্টে দেখা যায়, জেলায় স্কুলছুটের সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার। নড়েচড়ে বসে দফতর। বিভিন্ন পরিকল্পনার মাধ্যমে স্কুলছুটের সংখ্যা কমতে থাকে। ধাপে-ধাপে সেই সংখ্যা কমে এসেছে অনেকটাই। তবে এখনও রোগ পুরোপুরি সারেনি। গত শিক্ষাবর্ষের হিসেবে অবিভক্ত বর্ধমান জেলায় পাঁচশোর বেশি স্কুলছুট রয়েছে। জেলা সর্বশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মোট স্কুলছুটের ৭০ শতাংশকে ইতিমধ্যে ফেরানো গিয়েছে। বাকি রয়ে গিয়েছে ৫৩৯ জন। পরবর্তী লক্ষ্য, এই সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা।’’
সর্বশিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায়, জেলার ৫৯টি সার্কেলের মধ্যে ৩৫টি সার্কেলে স্কুলছুটের সংখ্যা বেশি। সেই এলাকায় স্কুলে বাচ্চাদের উপরে নজর রাখার জন্য বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পার্শ্বশিক্ষকদের। যদিও শিক্ষকদের একাংশ দাবি করেন, স্কুলছুটের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা কার্যত অসম্ভব। স্কুলছুটদের ফিরিয়ে আনার পরেও অনেকে অনিয়মিত হয়ে পড়ে। আবার নতুনদের মধ্যেও কিছু পড়ুয়ার মধ্যে স্কুলে না আসার প্রবণতা দেখা যায়।
স্কুলছুটদের ফেরাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? সর্বশিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর সমীক্ষা করে কয়েকটি বিষয় দেখা হয়। তার মধ্যে রয়েছে, স্কুলছুটের পরিমাণ বাড়ল না কমলো, কোন-কোন এলাকায় স্কুলছুট বেশি ইত্যাদি। পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ শ্রেণিতেই স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়ে। স্কুলে পড়াশোনা আরও আকর্ষণীয় কী করে করা যায় তা নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পরামর্শ দেওয়া হয় সর্বশিক্ষা দফতরের তরফে। এ বার প্রত্যেকে স্কুলছুট পড়ুয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এক জন করে পার্শ্বশিক্ষককে। তিনি সেই পড়ুয়ার দিকে বিশেষ নজর রাখছেন। এ ছাড়াও ওই ধরনের পড়ুয়াদের ‘ব্রিজ কোর্স’ ব্যবস্থা করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। যে সব পড়ুয়া এক-দু’বছর স্কুলে আসেনি তাদের মূল স্রোতে ফেরাতে এই কোর্সের মাধ্যমে একটা নির্দিষ্ট মানে পৌঁছে দেওয়া হয়। পড়ায় আর্কষণ বাড়াতে বাচ্চাদের খাতা, পেন, পেনসিলও দেওয়া হয়।
জেলা সর্বশিক্ষা প্রকল্প আধিকারিক শারদ্বতী চৌধুরী বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য, ৬ থেকে ১৪ বছরের কেউ যেন স্কুলের আঙিনা থেকে বেরিয়ে না যায়। সে জন্য বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy