Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মূল্যায়ন নেই ‘নাক’-এর, অমিল বরাদ্দ

প্রতিটি কলেজের মূল্যায়ন করে তার ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হবে, ১৮ বছর আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি                কমিশন (ইউজিসি)।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:০৮
Share: Save:

প্রতিটি কলেজের মূল্যায়ন করে তার ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হবে, ১৮ বছর আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ঠিক হয়, ‘ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল’ (নাক)-এর অনুমোদন ছাড়া কলেজগুলি উন্নয়নের জন্য কোনও অর্থ পাবে না। কিন্তু এত দিনেও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি কলেজ কর্তৃপক্ষ এখনও ‘নাক’-এর মূল্যায়ন করাননি। বেশ কিছু কলেজ আবার পুনর্মূল্যায়ন করেনি। ফলে, আটকে রয়েছে অর্থ বরাদ্দ।

এই সমস্যা দূর করতে ওই কলেজগুলিকে নিয়ে আজ, মঙ্গলবার একটি কর্মশালা আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজসমূহের পরিদর্শক (আইসি) সুজিত চৌধুরী বলেন, ‘‘উপাচার্যের নির্দেশে এই কর্মশালা বা সভার আয়োজন করা হয়েছে। ‘নাক’-এর অনুমোদন কী ভাবে পাওয়া যাবে, কী ভাবে ‘সেল্ফ-স্টাডি রিপোর্ট’-সহ নানা দিক পূরণ করে নম্বর পেতে হবে, সে নিয়ে বিশেষজ্ঞেরা মতামত জানাবেন।’’

মূল্যায়ন বা পুনর্মূল্যায়ন না করানো ছাড়া আরও সমস্যা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রথম দিকে ‘নাক’-এর অনুমোদন পেলেই ইউজিসি ‘গ্রেড’ অনুযায়ী কলেজগুলিকে অর্থ অনুমোদন করত। কিন্তু রাষ্ট্রীয় উচ্চ শিক্ষা অভিযান চালু হওয়ার পরে ‘নাক’ মূল্যায়নে ন্যূনতম ২.৫ ‘স্কোর’ না পেলে ইউজিসি কলেজের উন্নয়নে কোনও অর্থ অনুমোদন করে না। তাতেও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি কলেজ আটকে গিয়েছে। হুগলি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সীমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘আমাদের স্কোর হয়েছে ২.৪৩। দিল্লিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানোর পরেও অর্থ অনুমোদন আটকে রয়েছে।’’

হুগলি জেলার ন’টি, বীরভূমের চারটি এবং পূর্ব বর্ধমানের ১১টি— মোট ২৪টি কলেজ এই মূল্যায়নের বাইরে থাকায় তারা ইউজিসি-র কোনও সুবিধা পাচ্ছে না বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর। হুগলি মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ তপন কার্ফা বলেন, ‘‘আমাদের কলেজে ২০০৭ সালে এক বার নাক মূল্যায়ন হয়েছিল। তার পর থেকে সাধারণ ডিগ্রি কলেজ ও আইন কলেজ এক সঙ্গে থাকা নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় মূল্যায়ন করা হয়নি। রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে জোর দেওয়ায় আমরাও মূল্যায়ন করাতে চাইছি।’’

কালনা কলেজে শেষ ‘নাক’ মূল্যায়ন হয়েছিল ২০০৭ সালে। নিয়ম অনুযায়ী, এক এই মূল্যায়ন করালে তার মেয়াদ থাকে ৫ বছর। অধ্যক্ষ তপন সামন্ত বলেন, ‘‘পুনর্মূল্যায়ন হয়নি বলে সব রকম আর্থিক অনুদান আটকে রয়েছে। দু’বছর আগে আমি এসে দেখি, সুবর্ণ জয়ন্তীর গেটের জন্যও সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা পাওয়া যায়নি। এ বার মূল্যায়ন করানোর জন্য কোমর বেঁধে নেমেছি।’’ মেমারি কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘নানা কারণে নাকের মূল্যায়ন করা হয়নি।’’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, মূল্যায়ন না থাকায় বছরে দু’কোটি টাকা হারাচ্ছে কলেজগুলি। এ ছাড়া গবেষণা-সহ নানা সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হতে হচ্ছে। কলেজগুলি যাতে ‘নাক’-এর অনুমোদন ও মূল্যায়নে ন্যূনতম নম্বর পায়, সে জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাদম্বরী হলে কর্মশালার ব্যবস্থা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE