Advertisement
০২ মে ২০২৪
ভগৎ সিংহ ক্রীড়াঙ্গন

নামে উন্নত স্টেডিয়াম, তৈরি হয়নি গ্যালারিই

শহরে খেলাধুলো নিয়ে উৎসাহ বাড়াতে স্টেডিয়াম তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। নানা রকমের উন্নত ব্যবস্থা-সহ মাঠ তৈরিও করা হয়। কিন্তু বছর দশেক পেরোতে চললেও গ্যালারি তৈরি হয়নি। মাঠেরও রক্ষণাবেক্ষণ নেই বলে অভিযোগ ক্রীড়াপ্রেমীদের। দুর্গাপুরের ভগৎ সিং স্টেডিয়াম পরিকল্পনা মাফিক গড়ে তুলুক পুরসভা, দাবি তুলেছেন তাঁরা।

মাঠ উঁচু-নিচু। নর্দমায় গজিয়েছে আগাছা। —নিজস্ব চিত্র।

মাঠ উঁচু-নিচু। নর্দমায় গজিয়েছে আগাছা। —নিজস্ব চিত্র।

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৬ ০৬:১৯
Share: Save:

শহরে খেলাধুলো নিয়ে উৎসাহ বাড়াতে স্টেডিয়াম তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। নানা রকমের উন্নত ব্যবস্থা-সহ মাঠ তৈরিও করা হয়। কিন্তু বছর দশেক পেরোতে চললেও গ্যালারি তৈরি হয়নি। মাঠেরও রক্ষণাবেক্ষণ নেই বলে অভিযোগ ক্রীড়াপ্রেমীদের। দুর্গাপুরের ভগৎ সিং স্টেডিয়াম পরিকল্পনা মাফিক গড়ে তুলুক পুরসভা, দাবি তুলেছেন তাঁরা।

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, এই স্টেডিয়ামটি রীতিমতো পরিকল্পিত ও বিস্তৃত পরিসরের। জল নিকাশি পদ্ধতি আধুনিক। ভারী বৃষ্টিতেও কম সময়ে জল নেমে যায় মাঠ থেকে। উন্নত মানের ঘাস গোটা মাঠে। রয়েছে আধুনিক পদ্ধতিতে জল দেওয়ার ব্যবস্থা। কিন্তু নামে স্টেডিয়াম হলেও নেই কোনও গ্যালারি। লোহার জাল দিয়ে ঘেরা মাঠ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে রেলিংয়ে মরচে ধরেছে। মাঠের পাশে পড়ে থাকে জঞ্জাল। নর্দমায় জমছে আবর্জনা।

২০০৬ সালে শহরে একটি আর্ন্তজাতিক মানের স্টেডিয়াম গড়ার পরিকল্পনা করে তৎকালীন বামফ্রন্ট পরিচালিত পুরসভা। ঠিক হয়, জাতীয় সড়কের ধারে ভগৎ সিংহ মাঠে সেই স্টেডিয়াম হবে। ২১ একর জমিতে স্টেডিয়াম, গ্রিন গ্যালারি, ক্লাব হাউস, কমেন্ট্রি বক্স, প্রায় ২৪ হাজার মানুষের খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হবে। মূল মাঠ লম্বায় ১০৫ ফুট ও চওড়ায় ৭৫ ফুট। পরিকল্পনা ছিল, ফুটবল ও ক্রিকেট, দু’টি খেলার জন্যই মাঠটি ব্যবহার করা যাবে। এ ছাড়া মাঠের চারপাশে অ্যাথলেটিকের ট্র্যাক, ভলিবল, বাস্কেটবল এবং লন টেনিসের মাঠও হওয়ার কথা ছিল। রাতে খেলার জন্য ফ্লাডলাইটের ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা— পরিকল্পনায় খামতি ছিল না কোনও কিছুতেই।

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক বাজেট ধরা হয় সাড়ে ২২ কোটি টাকা। তা জোগাড় করার জন্য দুর্গাপুরের বিভিন্ন শিল্প সংস্থার কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়। কিন্তু সে ভাবে সাড়া মেলেনি। ফলে, স্টেডিয়াম হয়নি। তবে উন্নত মানের মাঠ তৈরি থেমে থাকেনি। রেলিং দিয়ে ঘেরা মাঠ, বৃষ্টি হলে দ্রুত জল নেমে যাওয়ার ব্যবস্থা, পুরুষ ও মহিলাদের আলাদা ড্রেসিংরুম— সবই হয়েছে। দুর্গাপুরে আবাসিক শিবির করতে এসে অনেক বারই এই মাঠ ব্যবহার করেছে মোহনবাগান। ব্যারেটো, ওডাফার মতো খেলোয়াড়েরা মাঠের প্রশংসা করে গিয়েছেন।

শহরের ক্রীড়াপ্রেমীদের অভিযোগ, স্টেডিয়াম গড়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। এ দিকে, মাঠের উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণও হচ্ছে না। মাঠের ঘাস আগের মতো সজীব নয়। রেলিংয়ের রং উঠে গিয়েছে, মরচে ধরে গিয়েছে। বৃষ্টি হলে জল দ্রুত সরে যাওয়ার জন্য মাঠের চারপাশে যে নর্দমা গড়া হয়েছিল তা বহু জায়গায় আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। মাঠের পাশে আগাছার জঙ্গল। সব মিলিয়ে শহরের গর্বের মাঠের ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নের মুখে।

পুরসভা অবশ্য জানায়, ভগৎ সিংহ মাঠের সংস্কার এবং স্টেডিয়াম গড়ে তোলার জন্য পুরসভার পক্ষ থেকে রাজ্য ক্রীড়া দফতরে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা। তা মঞ্জুর হলে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে স্টেডিয়ামটিকে। পাশাপাশি, স্মার্ট সিটি প্রকল্পে আরও একশো কোটি টাকা বরাদ্দ করার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Stadium Gallery
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE