Advertisement
১৮ মে ২০২৪

নজরদারি থাকলেও ভিড় নেই, আক্ষেপ

ফের একটা ঝড়। আর সেই ঝাপটা হাওয়া উস্কে দিয়েছিল গত বছরের স্মৃতি। ঠিক এমনই একটা দিনে, কালনায় ভবাপাগলার মেলা থেকে ফেরার পথে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয় পূর্ব বর্ধমান ও নদিয়ার কুড়ি জন বাসিন্দার।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা ও শান্তিপুর শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ০৩:০৩
Share: Save:

ফের একটা ঝড়। আর সেই ঝাপটা হাওয়া উস্কে দিয়েছিল গত বছরের স্মৃতি। ঠিক এমনই একটা দিনে, কালনায় ভবাপাগলার মেলা থেকে ফেরার পথে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয় পূর্ব বর্ধমান ও নদিয়ার কুড়ি জন বাসিন্দার। তবে এ বছর যে কোনও বিপত্তি এড়াতে আগেভাগেই সতর্কতা নিয়েছে পূর্ব বর্ধমান ও নদিয়া, এই দুই জেলার প্রশাসনই। তবে বাসিন্দাদের দাবি, শনিবার মেলা শুরুর দিনেও এ বার ভক্ত সমাগম ছিল বেশ কম।

প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনা ও নদিয়ার নৃসিংহপুর ঘাটে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নৃসিংহপুর ঘাটে প্রায় আড়াইশো পুলিশকর্মী, সিভিক ভলান্টিয়ার ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা রয়েছেন। দুই জেলার ফেরিঘাটেই চলছে সিসিটিভি-র নজরদারি। যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরার জন্য দু’পারের ঘাট থেকেই বারবার লাউডস্পিকারে অনুরোধ জানানো হচ্ছে। রয়েছে পর্যাপ্ত আলো ও জেনারেটরের ব্যবস্থাও। কালনা ফেরিঘাট থেকে ‘ভুটভুটি’ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র দু’টি ‘ভেসেল’ চলেছে।

তবে শনিবার বিকেলে ঝড়ের জেরে একবার একটি ‘ভেসেল’ নদী পাড়ে বালির চড়ায় আটকে গিয়েছিল বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন। তবে কোনও বিপত্তি হয়নি। নদিয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেছেন, “এ বার সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমি নৃসিংপুরঘাট পরিদর্শন করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা দেখেছি।”

নৃসিংহপুর ঘাটে তৃণমূলের তরফে একটি শিবির আয়োজন করা হয়। শনিবার সেখানে শান্তিপুরের পুরপ্রধান অজয় দে’র উপস্থিতিতে গত বছর নৌকাডুবিতে মৃতদের স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ ছাড়া শান্তিপুর নাগরিক উন্নয়ন কমিটির তরফেও কালনা ফেরিঘাটে শিবির করে যাত্রীদের সচেতন করা হচ্ছে।

তবে নিরাপত্তা থাকলেও গত বারের তুলনায় এ বার মেলায় ভক্তসমাগম কম হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। যেমন, কালনা ফেরিঘাটের ইজারাদারদের তরফে বাপ্পা সরকার বলেন, “যাত্রী নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ বার লোক যেন কম!’’ একই দাবি করেছেন মেলা ফেরত ভক্তেরাও। শান্তিপুরের সূত্রাগড়ের বাসিন্দা বলরাম দেবনাথের দাবি, ‘‘গত বার শুধু আমাদের পাড়া থেকেই দুশো লোক মেলায় গিয়েছিলেন। এ বার সেই সংখ্যাটা হাতে গোনা।’’

এ বছর যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে কড়াকড়ি দেখে গত বছর সেই অভিশপ্ত ঘটনার কথা মনে পড়ছে অনেকের। গত বছর মেলায় গিয়ে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয় শান্তিপুরের সূত্রাগড়ের রমাপ্রসাদ বিশ্বাস, তাঁর এক মেয়ে ও এক ছেলের। কোনও রকমে বেঁচে ফেরেন তাঁর স্ত্রী অনিতা। এ দিন অবশ্য সে দিনের কথা বলতে চাননি অনিতা। তবে রমাপ্রসাদবাবুর জামাইবাবু গৌরাঙ্গ কর্মকারের আক্ষেপ, ‘‘সেদিন যদি এমন নিরাপত্তা থাকত, তা হলে হয়তো এতগুলো প্রাণ বেঁচে যেত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fair Bhaba Pagla Fair Surveillance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE