Advertisement
E-Paper

স্কুলে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে থানায় ছাত্রীরা

স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সরাসরি থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখাল ছাত্রীরা। শনিবার কেন্দা গার্লস হাইস্কুলের (আবাসিক) জনা পঞ্চাশেক ছাত্রী কেন্দা থানায় ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ দেখায়। খবর পেয়ে থানায় যান পুঞ্চার বিডিও অজয় সেনগুপ্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৫১

স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সরাসরি থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখাল ছাত্রীরা। শনিবার কেন্দা গার্লস হাইস্কুলের (আবাসিক) জনা পঞ্চাশেক ছাত্রী কেন্দা থানায় ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ দেখায়। খবর পেয়ে থানায় যান পুঞ্চার বিডিও অজয় সেনগুপ্ত। তিনি সেখানে ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে পুলিশ ও পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে বিডিও ওই আবাসিক স্কুল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রীদের বেশিরভাগ অভিযোগের সত্যতা আছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে তা শুধরে নিতে বলেছি। ফের স্কুলে গিয়ে খোঁজ নেব।’’ যদিও স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ঊষা সিংয়ের কাছে এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এই স্কুলে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। শুধুমাত্র তফসিলি জাতি ও উপজাতির মেয়েরাই এই স্কুলে পড়ার সুযোগ পায়। বর্তমানে সেখানে প্রায় ২৫০ জন ছাত্রী রয়েছে। স্কুল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে থানা। হেঁটেই থানায় যায় ছাত্রীরা। একসঙ্গে অত ছাত্রীকে থানা চত্বরে ঢুকতে দেখে পুলিশকর্মীরা কিছুটা হকচকিয়ে যান। তাঁরা সটান জানায়, স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা, সহশিক্ষিকারা এবং কর্মীরা তাদের উপর নানা ভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে তারা অভিযোগ জমা করতে চায়। অভিযোগ পুলিশ কর্মীরা বিষয়টি তাদের এক্তিয়ার বহির্ভূত বলে এড়িয়ে যেতে চান। তখন থানা চত্বরেই বিক্ষোভে বসে পড়ে ওই ছাত্রীরা। স্থানীয় মানুষজনও জুটে যান। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে পুলিশ পুঞ্চার বিডিও অজয় সেনগুপ্তকে খবর পাঠায়। বেলা ১২টার কিছু পরে বিডিও থানায় আসেন।

বিডিও ছাত্রীদের কাছে তাদের অভাব-অভিযোগের কথা শোনেন। তাঁর কথায়, ‘‘ছাত্রীরা স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে থানায় ছুটে এসেছে, সাধারণত এমনটা দেখা যায় না। ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি তাদের উপর বিভিন্ন সময় শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার চালানো হয়। কারণে-অকারণে টাকা চাওয়া হয়।’’

ছাত্রীদের অভিযোগ, অভিভাবকরা স্কুলে তাদের সঙ্গে দেখা করতে এলে গেটে তাদের কাছ থেকে টাকা চাওয়া হয়। অভিভাবকদের সঙ্গে বসে কথা বলার জায়গা নেই। গাছতলায় দাঁড়িয়ে কথা বলতে হয়। স্কুলের গেট থেকে রান্নাঘর পর্যন্ত রান্নার কয়লা তাদের বয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য করানো হয়। কয়লা তাদেরই ভাঙতে হয়। এ ছাড়া ঘুঁটে কুড়িয়ে না এলে রান্না বন্ধ হয়ে যাবে বলে শাসানিও দেওয়া হয়। এক পুরুষ কর্মী দুই ছাত্রীকে একবার চুলের মুঠি ধরে পিটিয়েছিল বলেও তাদের অভিযোগ। নিম্নমানের খাবার দেওয়া থেকে শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও তারা তুলেছে। এ ছাড়া হস্টেলে দীর্ঘদিন ধরে কোনও সংস্কার না হওয়া, বৃষ্টিতে বই-খাতা ভিজে যাওয়ার সমস্যার কথাও তারা তুলে ধরেছে।

বিডিও বলেন, ‘‘এই স্কুলের ছাত্রীদের এমন ব্যবহার পাওয়ার কথা নয়। সরকার থেকে কিছু সুবিধা দেওয়া হয়। ছাত্রীদের পোশাক, তেল, সাবান, জুতো, মশারি ইত্যাদি পাওয়ার কথা। প্রধানশিক্ষিকার সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁকে বলেছি এই স্কুলের বিরুদ্ধে আগেও ছাত্রীরা বিভিন্ন সময় অনিয়মের অভিযোগ এনেছে। শীঘ্রই পরিদর্শন করে সমস্যা কতটা মিটেছে খোঁজ নেব।’’

কেন্দা পঞ্চায়েতের প্রধান পার্থসারথি মাহাতো এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতা নিতাই পাল বলেন, ‘‘স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা এই স্কুলের পরিচালন সমিতিতে নেই। মহকুমাশাসক এবং জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) এই স্কুলের সভাপতি এবং সম্পাদক। ফলে স্থানীয় ভাবে আমরা দেখার সুযোগ পাইনা।’’ মহকুমাশাসক (সদর) আশিস সাহা বলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা ওই স্কুলে ঘটে বলে কেউ আমাকে জানায়নি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

Students Torture School
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy