Advertisement
E-Paper

রোগীর ভিড় বারান্দাতেও

মঙ্গলবার বিকেলে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রাধারানি ওয়ার্ডে দেখা গেল এমনই সব ছবি।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:০২
বর্ধমান মেডিক্যালে। —নিজস্ব চিত্র।

বর্ধমান মেডিক্যালে। —নিজস্ব চিত্র।

অ্যাম্বুল্যান্স থেকে হন্তদন্ত হয়ে ওয়ার্ডে ঢুকেই আঁতকে উঠলেন তরুণী। চিৎকার করে বলে উঠলেন, “মাকে এখানে রাখা যাবে না। ওয়ার্ডের ভিতরের রাস্তাতেও রোগী শুয়ে আছে।’’ গাড়ি ঘুরিয়ে মাকে নিয়ে অন্য হাসপাতালের খোঁজে গেলেন মেমারির সুজাতা রায়।

এক রোগীকে উদ্ধার করে ভর্তি করেছে পুলিশ। বাইরে দাঁড়িয়ে পুলিশকর্মী ফোনে বলছিলেন, ‘‘হাসপাতালের অবস্থা দেখে বাড়ির লোকজন রোগীকে রাখতে চাইছেন না। একটা অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দিন।’’

মঙ্গলবার বিকেলে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রাধারানি ওয়ার্ডে দেখা গেল এমনই সব ছবি। ওয়ার্ডের ভিতর পুরুষ ও মহিলাদের চারটি করে ব্লক রয়েছে। প্রতিটি ব্লকে ২০টি করে শয্যা। অর্থাৎ, রাধারানি ওয়ার্ডে থাকতে পারেন ১৬০ জন রোগী। কিন্তু ওয়ার্ডের ভিতরে তো বটেই, সেখানে যাতায়াতের রাস্তার মেঝেতেও ঠাঁই হয়েছে রোগীর। মঙ্গলবার প্রায় সাড়ে চারশো জন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়। করিডরে ছিলেন আরও কয়েকজন।

ওয়ার্ডের নার্স ও ইন্টার্নদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগই জ্বর ও পেটে-মাথায় ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। জ্বর সারলেও দু’তিন দিন পর্যবেক্ষণ না করে ছাড়া যাচ্ছে না। ওই হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘প্রথম বার রক্ত পরীক্ষায় কিছু পাওয়া না গেলেও আমরা ছাড়তে পারছি না। জ্বর সেরে যাওয়ার পরেও অনেক সময়ে জটিলতা তৈরি হয়। তবে ন্যূনতম কোনও উপসর্গ মিললে তবেই রোগীকে রাখার নিদান দেওয়া হচ্ছে।’’

কিছু রোগীর পরিজনের অভিযোগ, ‘‘ডাক্তারেরা বলছেন, রোগীকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। অথচ, প্রেসক্রিপশনে কিছু লিখছেন না। নার্সরা আমাদেরকে ‘রিস্ক বন্ডে’ সই করে নিয়ে যেতে বলছেন। আমরা এ ভাবে রোগীকে নিয়ে যাব কেন?’’ মঙ্গলবার হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯ জনের রক্ত পরীক্ষা হয়েছে। তার মধ্যে ৫ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। মেডিসিন বিভাগেরর চিকিৎসকেরা জ্বর, পেট ও মাথায় ব্যথার উপসর্গ নিয়ে রোগী ভর্তির কথা জানালেও তা মানতে নারাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা দাবি করেন, ‘‘গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। তার মধ্যে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ৩৪।’’ বাকিদের কী রোগ, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি অমিতাভবাবু।

এ দিন বিকেলেই ডেপুটি সুপারের সঙ্গে দেখা করে রোগীর এক পরিজন দাবি করেন, ‘হাসপাতালে শয্যা নেই, তবু রোগীকে ভর্তি করছি’ —এই মর্মে মুচলেকা দিয়ে অসুস্থকে ভর্তি করতে হয়েছে। বারান্দায় থাকা এক রোগী বলেন, ‘‘বিদ্যুতের তার ঝুলছে, তার মধ্যেই বাধ্য হয়ে থাকতে হচ্ছে। জ্বর-পেট ব্যথা নিয়ে চার দিন ভর্তি আছি।’’

স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা বলেন, ‘‘তাড়াহুড়ো না করে ভাল করে পর্যবেক্ষণ করার পরে রোগীকে ছাড়তে বলা হয়েছে। আমরা চাই না, বাড়ি ফিরে গিয়ে কেউ আবার অসুস্থ হয়ে পড়ুন।’’

Dengue Burdwan Medical College Hospital ডেঙ্গি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy