তিনি ভোটেই দাঁড়াননি। অথচ তাঁকেই ‘বিধায়ক’ করে বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা বা বিডিএ-র চেয়ারম্যান করল রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। ঘটনাটি নিয়ে বির্তক দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে শুক্রবার সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দিয়ে ‘ভুল’ সংশোধন করতেও বলা হয়েছে। বিজেপি নেতা তথা বর্ধমান দক্ষিণের প্রার্থী সন্দীপ নন্দীর টিপ্পনী, “একই কেন্দ্রে তাহলে দু’জন জিতেছেন! তৃণমূল আমলে সবই সম্ভব।’’
বুধবার পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর বিডিএ-র নতুন বোর্ড (পরিচালন কমিটি) ঘোষণা করেছে। তাতে বর্ধমান দক্ষিণের প্রাক্তন বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়কেই ফের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিধায়ক হিসেবে তাঁকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে বলেও নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে।
২০১১ সাল থেকে টানা ১০ বছর বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক ছিলেন রবিরঞ্জনবাবু। এ বছর ভোটের আগে তিনি শারীরিক কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান না বলে দলনেত্রীকে জানান। প্রার্থী করা হয় খোকন দাসকে। আট হাজারেরও বেশি ভোটে জিতে বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক হয়েছেন তিনি। তাহলে কি করে রবিরঞ্জনবাবুকে বিধায়ক দেখিয়ে বিডিএ-র চেয়ারম্যান করা হল, উঠেছে সেই প্রশ্ন।
বিডিএ-র নতুন বোর্ডে ১২ জন রয়েছেন। রবিরঞ্জনবাবু ছাড়াও পদাধিকার বলে জেলা পরিষদের সভানেত্রী শম্পা ধাড়া, পুর ও অর্থ দফতরের প্রধান সচিবের প্রতিনিধি, জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, বর্ধমানের পুরপ্রধান বা প্রশাসক, বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিক ছাড়াও শহরের তিন জন বিশিষ্টকে রাখা হয়েছে। সদস্য-সচিব হয়েছেন বিডিএ-র মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক (সিইও) শান্তনু বসু। তবে কমিটিতে কোথাও বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের নাম নেই। খোকনবাবুর দাবি, “গত বছরের কমিটিকেই রাখা হয়েছে। কোনও খোঁজখবর না নিয়ে কমিটি প্রকাশ করা হয়েছে। আমি সংশ্লিষ্ট জায়গায় জানিয়েছি।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে চিঠি দিয়ে বিষয়টি সংশোধন করার কথা বলা হয়েছে। ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে, রবিরঞ্জনবাবু এ বার ভোটেই দাঁড়াননি। ফলে তিনি এখন আর বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক নন। তাঁর জায়গায় খোকন দাস বিধায়ক হয়েছেন। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের এক আধিকারিক যদিও বলেন, “বিধায়ক না হলেও বিডিএ-র চেয়ারম্যান হতে পারেন রবিরঞ্জনবাবু। ওই নির্দেশিকায় রবিরঞ্জনবাবুর পাশে এমএলএ লেখা বিতর্ক বাড়িয়েছে।’’
রবিরঞ্জনবাবু শুধু বলেন, “আমাকেই ফের বিডিএ-র চেয়ারম্যান করা হয়েছে শুনেছি। শেষ পর্যন্ত কি হয়, দেখা যাক।’’