জমায়েত: সিন্ডিকেট অফিসে। —নিজস্ব চিত্র।
এ-ও এক সিন্ডিকেট-সমস্যা!
নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের কাজে বিনিয়োগ করেও লভ্যাংশ মেলেনি, এই অভিযোগে সেই সিন্ডিকেটের অফিসে হামলা ও তার কর্তাদের বাড়ি ঘেরাও করলেন সদস্যদের একাংশ। বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদে সিন্ডিকেটের অফিসে কিছু কর্মীকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে রাত পর্যন্ত কোনও পক্ষ লিখিত অভিযোগ করেনি।
পানাগড় শিল্পতালুকে তিনটি কারখানা নির্মাণে ইমারতি জিনিসপত্র সরবরাহের জন্য বুদবুদের কোটা গ্রামের জমিদাতা, খেতমজুর ও বর্গাদারেরা ‘কৃষি কোটা ফ্যামিলি এলএলপি (লায়াবিলিটি লয়ালটি প্রাইভেট) লিমিটেড’ নামে একটি সিন্ডিকেট গড়েন। সদস্য হন প্রায় এগারোশো বাসিন্দা।
সদস্যদের একাংশের দাবি, কারখানাগুলি তৈরি হওয়ার সময়ে ইট-বালি-স্টোনচিপস-সিমেন্ট-রড সরবরাহের দায়িত্ব নেন সিন্ডিকেটের ‘মাথা’রা। সদস্য হতে গেলে সিন্ডিকেটকে টাকা দিতে হয়েছে। মৌখিক প্রতিশ্রুতি ছিল, বিনিয়োগ অনুযায়ী লভ্যাংশের। সে টাকা জোগাড় করতে কেউ জমি বিক্রি, কেউ গয়না বিক্রি করেছেন। সম্প্রতি তাঁরা জানতে পারেন, নির্মাণকাজ শেষে কারখানাগুলি টাকা মিটিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তাঁরা টাকা পাননি বলে অভিযোগ বিক্ষুব্ধ সদস্যদের।
বিক্ষোভকারী হাফিজুল মণ্ডল, বাপ্পা দাসদের দাবি, সিন্ডিকেট তৈরির সময়ে তাঁদের বলা হয়েছিল, লাভের টাকা সবার মধ্যে সমান ভাগ হবে। কিন্তু এখন সিন্ডিকেটের সম্পাদক ও সভাপতি হিসেব দেখাতে চাইছেন না। তাঁরা তহবিল তছরুপ করেছেন বলেও সন্দেহ বিক্ষোভকারীদের।
এ দিন শ’পাঁচেক সদস্য শিল্পতালুকে সিন্ডিকেটের অফিসে চড়াও হন। সেখানে কয়েকজন কর্মীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে সিন্ডিকেটের সম্পাদক শ্যামল ধর ও সভাপতি জ্যোতির্ময় বাগদির বাড়ি ঘেরাও করেন বিক্ষোভকারীরা।
জ্যোতির্ময়বাবু ও শ্যামলবাবু অবশ্য তছরুপের কথা অস্বীকার করেন। এলাকায় তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত জ্যোতির্ময়বাবুর বক্তব্য, ‘‘আমাদের কাছে সব হিসেব রয়েছে। সদস্যদের বেশ কয়েকবার টাকা দেওয়াও হয়েছে। যা বাকি আছে, দিয়ে দেওয়া হবে।’’ তাঁর পাল্টা দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের আগে কুৎসা করতে বিরোধীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। যদিও সিন্ডিকেটের সদস্য, এলাকার বিজেপি নেতা কিসান কর্মকারের বক্তব্য, ‘‘এই ঘটনায় বিরোধীদের উস্কানি নেই। সিন্ডিকেটে সব দলের লোকই আছে।’’
তৃণমূলের আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লক সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষ অবশ্য এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘‘একেবারে গ্রাম্য বিবাদ। এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই।’’