কাটোয়া বাজারে আলু বাছাইয়ে ব্যস্ত। নিজস্ব চিত্র।
ধর্মঘট উঠে গিয়েছে। তবু আলুর দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরেই।
বুধবার এক লাফে কেজি প্রতি আলুর দাম বেড়েছিল ১০ টাকা। সেই তুলনায় বৃহস্পতিবার বর্ধমানের বিভিন্ন বাজারে সাত-আট টাকা করে কেজিতে দাম কমেছে আলুর। তবে খুচরো বাজারে জোগান কমই ছিল।
এ দিন বর্ধমানে আলুর কেজি প্রতি গড় দাম দাঁড়িয়েছে ৩৫ টাকা। কালনার বাজারে আলু বিক্রি হয়েছে ৩২-৩৪ টাকা দরে। কাটোয়াতেও গড়ে চার টাকা করে আলুর দাম কমেছে। আলু মিলেছে ৩৬-৩৮ টাকা কেজিতে। তবে শহরের কোনও কোনও বাজারে ৪০ টাকা কেজি দরেও আলু বিক্রি হয়েছে। খুচরো ব্যবসায়ীদের দাবি, আলুর জোগান স্বাভাবিক না থাকায় সরকার নির্ধারিত দামে এ দিন আলু বিক্রি করা যায়নি। দু’এক দিনের মধ্যে জোগান স্বাভাবিক হয়ে গেলে দামও কমবে।
পূর্ব বর্ধমানে এ বছর ৯,৪৩,৫২৯ টন আলু মজুত হয়েছিল। বুধবার পর্যন্ত জেলায় আলু বেরিয়েছে ৩,০৯,৫৬২ টন। বুধবার দিন মাত্র ৪২৫ টন আলু বেরিয়েছে জেলা। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সংগঠনের দাবি, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ২৩২৫ টন মতো আলু হিমঘর থেকে বেরিয়েছে। সংগঠনের জেলা সম্পাদক জগবন্ধু মণ্ডল বলেন, “বাজারে আলুর চাহিদা ছিল। আরও বেশি আলু বার করা যেত। কিন্তু কয়েক দিন হিমঘর বন্ধ থাকায় শ্রমিকের অপ্রতুলতা ছিল। শুক্রবার থেকে সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।” খুচরো ব্যবসায়ীদের দাবি, হিমঘর থেকে আলু বার হয়ে খুচরো বাজারে আসতে গড়ে দেড় দিন সময় লাগে। ফলে সাধারণ ক্রেতাদের নাগালে আলু আসতে শনি-রবিবার গড়িয়ে যাবে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ন্যায্য মূল্যে আলু বিক্রির জন্য জেলায় ১২১টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে মাঠে নামানো হয়েছে। কৃষি সমবায় সমিতির মাধ্যমেও ২৬-২৮ টাকার মধ্যে আলু বিক্রি করা শুরু হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান থেকে পশ্চিম বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদে আলু সরবরাহ করা হচ্ছে। জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ার বলেন, “হিমঘর থেকে চাষিদের আলু সরাসরি স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি কিনছে। পুরো প্রক্রিয়াটা সুষ্ঠু ভাবে যাতে হয় সে জন্য এসডিও, বিডিও, সমবায় দফতর, খাদ্য দফতর, নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটি, পুলিশ যৌথ ভাবে নজরদারি চালাচ্ছে।” এ দিন সুফল বাংলা স্টল, সুফল বাংলা শিবিরে ২৮ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হয়েছে।
বর্ধমানের খুচরো আলু বিক্রেতা সুফল দাস, শঙ্কর বিশ্বাসেরা বলেন, “ব্যবসায়ীদের কর্মবিরতির আগে গড় আলুর দাম ২৮ টাকায় চলে এসেছিল। বাছাই আলু ৩২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছিল। কর্মবিরতির শুরুর পরেই দাম বাড়তে বাড়তে বুধবার ৪০-৪২ টাকা কেজিতে উঠে যায়। বৃহস্পতিবার ৩৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বাছাই বা চন্দ্রমুখী আলুর জোগান ছিল না। সে জন্য অনেক ব্যবসায়ী বাজারে বসেননি।” কালনার ধাত্রীগ্রামের শমীক ঘোষের কথায়, “হিমঘর থেকে আলু বার করার পরে ঝাড়াই-বাছাই করতে সময় লাগে। মোটামুটি দেড়দিন পরে খুচরো বাজারে আসে। স্বাভাবিক জোগানের জন্য এখনও দু’দিন সময় লাগবে।” কাটোয়ার একটি বাজারের খুচরো ব্যবসায়ী দুলাল দাসেরও দাবি, ‘‘আশা করছি, শুক্রবার থেকে আলুর জোগান বাড়বে।”
তবে জোগান বাড়লেও দাম কতটা কমবে, সেটাই প্রশ্ন ক্রেতাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy