টোটা রায়চৌধুরী আবার বাবা হলেন! অবশ্যই বড়পর্দায়। কর্ণ জোহর তাঁকে প্রথম এই ভূমিকায় দেখিয়েছেন। তাঁর ‘রকি ঔর রানি কি প্রেম কহানি’ ছবিতে আলিয়া ভট্টের বাবা তিনি। বাঙালি দর্শক ছবিতে টোটার কত্থক নাচ দেখে চমকে গিয়েছিলেন।
আনন্দ এল রাই-এর ‘তেরে ইশ্ক মে’ ছবিতে অভিনেতা আরও একবার ‘বাবা’র চরিত্রে। এ বার তিনি কৃতি সেননের বাবা। দর্শকমতে, কর্ণ তাঁকে নায়িকার বাবা হওয়ার পাশাপাশি কত্থকশিল্পী হিসাবেও দেখিয়েছিলেন, যা টোটার অভিনয়ে অন্য মাত্রা যোগ করেছিল। দ্বিতীয় ছবিতে তিনি উচ্চশিক্ষিত, উন্নাসিক, ধনী ‘টিপিক্যাল’ বাবা। যিনি গরিব নায়ককে মেয়ের জীবনে আসতে দেননি।
বর্তমানে নতুন বাংলা ছবি এক সপ্তাহেই প্রেক্ষাগৃহ থেকে চলে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি বলেই কি টোটা জাতীয় স্তরের ছবিতে ‘বাবা’ হতেও রাজি? তাঁকে কি আগামী দিনে কেবলই ‘বাবা’র ভূমিকায় দেখা যাবে? বাংলা ছবিতে এখনও কিন্তু তাঁকে কোনও নায়িকার বাবার চরিত্রে দেখা যায়নি।
আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগ করেছিল অভিনেতার সঙ্গে। টোটার কথায়, “বাবা কেন, দাদুর চরিত্রেও অভিনয় করতে পারি, যদি সেই চরিত্র আমার অভিনয়ের খিদে মেটাতে পারে। আমি অভিনেতা। অভিনয় করা আমার কাজ।” এ-ও সাফ জানিয়েছেন, বাংলা ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার প্রশ্নই নেই। কলকাতায় থেকে নিয়মিত কাজ করবেন। পাশাপাশি, জাতীয় স্তরের ছবিতে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পেলে সেটাও ছাড়বেন না।
‘তেরে ইশ্ক মে’ দক্ষিণ ভারতে যথেষ্ট প্রশংসিত। এই ছবিতে অভিনয়ের জোরেই নাকি আলিয়াকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছেন কৃতি? দক্ষিণী বিনোদনদুনিয়ার দর্শক অন্তত তেমনই বলছেন! টোটার বক্তব্য, “আমায় তুলনা করতে বলবেন না। যদি জানতে চান, দুই নায়িকার কী কী মিল দেখেছি, সেটা বলতে পারি।” অভিনেতার দাবি, বাংলার বাইরের বিনোদনদুনিয়া অন্য রকম। জাতীয় স্তরে ‘প্রফেশনালিজম’ বেশি। আলিয়া এবং কৃতি—উভয়েই সেই দিক ভীষণ মেনে চলেন।
তাই ঘড়ি ধরে দুই নায়িকাকে ঘুম থেকে উঠতে দেখেছেন। শরীরচর্চা সেরে, সংলাপ মুখস্থ করে, নিজেদের প্রস্তুত করে সেটে এসেছেন তাঁরা। একের পর এক টেক দিয়েছেন। ক্যামেরার সামনে নিজেদের উজাড় করে দিতে জানেন। হ্যাঁ, শুটের অবসরে সকলের সঙ্গে বসে কথাও বলতেন তাঁরা। তবে সব কিছুতেই প্রচণ্ড পরিমিতিবোধ। শুট শেষ হলে আবার শরীরচর্চা, খাওয়াদাওয়া সেরে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম। আবার শুটিংয়ের কারণে রাতেও জেগে থাকতে রাজি!
আট ঘণ্টার মাপা কাজে বিশ্বাসী নন আলিয়া-কৃতি? অনেকেই যেমন কাজের নির্দিষ্ট সময়সীমা চান?
টোটা দেখেছেন, তাঁর পর্দার দুই কন্যে নিজেদের কোনও গণ্ডিতে বাঁধতে রাজি নন। তাই জনপ্রিয়তা তাঁদের কাছে বন্দি। একই ভাবে তিনি ধনুষকেও খুব কাছ থেকে দেখেছেন। টোটার মতে, “রণবীর সিংহ চূড়ান্ত উচ্ছ্বল, প্রাণশক্তিতে ভরপুর। ধনুষ খুবই স্থিতধী। ক্যামেরার পিছনে একরকম। ক্যামেরার সামনে এলেই মুখচোখ, চোয়াল বদলে যায়! যেন সিংহ এসে দাঁড়াল সামনে। তাঁর দাপট দেখার মতো।” শুট শেষ। ধনুষ ব্যস্ত গান নিয়ে। গানের সুর, গানের কথা নিয়ে। “অনেকেই জানেন না, ধনুষ খুব ভাল গীতিকার-সুরকার। দক্ষিণের অনেক ছবির সফল সঙ্গীতকার তিনি। তেমনই পড়তে ভালবাসেন। লেখালিখি করেন। একসঙ্গে অনেক কিছু করতে পারেন।”
আর একটি গুণ টোটাকে দক্ষিণী অভিনেতার কাছাকাছি এনেছে। উভয়েই সময় পেলে শরীরচর্চায় মাতেন। “ধনুষ আমার শরীরচর্চা মন দিয়ে দেখেছেন। তার পর জানতে চেয়েছেন, এত কঠিন যোগাসন করি কী করে? ওঁকে জানিয়েছিলাম, ছোট থেকে এ সবের মধ্যেই বেড়ে উঠেছি।”