জেলা জুড়ে প্রচার চলছে ‘নির্মল বাংলা’ প্রকল্পের। প্রতিদিন ভোরে নিয়ম করে সরকারি কর্মীরা গ্রামে-গ্রামে গিয়ে বোঝাচ্ছেন, বাইরে শৌচকর্ম করা কেন খারাপ। কিন্তু কাঁকসার বহু এলাকায় এখনও শৌচাগারই তৈরি হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সব বাড়িতে শৌচাগার তৈরি না হলে মানুষ তা ব্যবহার করবে কী করে। বাধ্য হয়েই তাঁরা মাঠেঘাটে কাজ সারছেন। ব্লক প্রশাসনের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, এলাকায় অধিকাংশ শৌচাগার তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিছু বাকি রয়েছে। দ্রুত সেগুলিও তৈরি করা হবে।
২০১৬-র ডিসেম্বরের মধ্যে বর্ধমানকে ‘নির্মল জেলা’ করে তোলায় উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। সেই মতো বিভিন্ন ব্লকে, পঞ্চায়েতে এমনকী গ্রামে-গ্রামে নানা পদক্ষেপ করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রামে তৈরি করা হয়েছে নজরদারি দল। তাঁরা প্রতিদিন ভোরে গ্রামের নানা প্রান্তে গিয়ে মাঠেঘাটে শৌচকর্ম করা বন্ধ করছেন। সেই নজরদারির জন্য জেলাশাসক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, বিডিও-সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মীরা নানা গ্রামে হাজির হচ্ছেন। কাঁকসা ব্লকেরও নানা গ্রামে সেই সব নজরদারি চলছে। অনেক জায়গায় বাইরে শৌচকর্ম বন্ধও হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
কাঁকসা ব্লক প্রশাসনের দাবি, নভেম্বরে ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতের মধ্যে দু’টি নির্মল হিসেবে ঘোষণা করা হবে। কিন্তু তার পরেও ব্লকে এখনও বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতে সরকারি শৌচাগার তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের সরকারি সমীক্ষায় কাঁকসা ব্লকে শৌচাগার ছিল না ১০৪১৩টি পরিবারে। সেগুলি সবই তৈরি করা হয়ে গিয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। এর মধ্যে পরিবারের সংখ্যা বেড়েছে। পরবর্তী সমীক্ষায় দেখা যায়, শৌচাগার না থাকা পরিবারের সংখ্যা ছ’হাজার। তার মধ্যে হাজার দুয়েক শৌচাগার ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়ে গিয়েছে বলে ব্লক প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, যাঁদের বাড়িতে শৌচাগার নেই, তাঁরা কোথায় যাবেন। বাধ্য হয়েই তাঁদের মাঠে, জঙ্গলে যেতে হয়। ফলে, পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছেই। কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুর, বনকাটির মতো পঞ্চায়েত এলাকায় এখনও বেশ কিছু শৌচাগার তৈরির কাজ বাকি রয়েছে। কাঁকসার ২ নম্বর কলোনি এলাকায় এখনও বেশ কিছু বাড়িতে শৌচাগার তৈরি হয়নি। এলাকার কয়েকজন জানান, নজরদারি দল আসছে প্রায় দিনই। বাইরে শৌচকর্ম করতে নিষেধ করছেন। খোলা জায়গায় শৌচকর্ম পরিবেশের কতটা ক্ষতি করতে পারে তা-ও বোঝাচ্ছেন তাঁরা। ওই বাসিন্দারা বলেন, ‘‘আমরাও খোলা জায়গায় শৌচকর্ম সারতে চাই না। নজরদারিতে আসা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে বারবার এ কথা বলেছি। কিন্তু এখনও শৌচাগার গড় দেওয়া হয়নি।’’ বাসিন্দারা জানান, তাঁদের নামে শৌচাগার তৈরির নির্দেশ এলেও এখনও তা তৈরি করা হয়নি। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একশো দিনের কাজে ওই শৌচাগারগুলি তৈরি করা হচ্ছে। ঠিকাদারেরা সেগুলি তৈরি করছেন।
কাঁকসার বিডিও অরবিন্দ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের ব্লকে অধিকাংশ এলাকায় খোলা জায়গায় শৌচকর্ম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যেখানে যেখানে এখনও শৌচাগার তৈরি হয়নি সেগুলি দ্রুত করা হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো ব্লক ‘নির্মল’ করে তোলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy