Advertisement
০৬ মে ২০২৪

টোলের বরাতে ফের দুর্নীতির অভিযোগ

হ্যানিম্যান সরণিতে টোল আদায়ের টেন্ডার নিয়ে ফের অনিয়মের অভিযোগ উঠল। এর আগে এক বার হাইকোর্ট টেন্ডার বাতিল করে নতুন করে ডাকার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু নতুন টেন্ডারেও অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলেছে নিলামে দ্বিতীয় হওয়া সংস্থাটি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৭ ০১:৩৫
Share: Save:

হ্যানিম্যান সরণিতে টোল আদায়ের টেন্ডার নিয়ে ফের অনিয়মের অভিযোগ উঠল। এর আগে এক বার হাইকোর্ট টেন্ডার বাতিল করে নতুন করে ডাকার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু নতুন টেন্ডারেও অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলেছে নিলামে দ্বিতীয় হওয়া সংস্থাটি।

গ্যামন ব্রিজ মোড় থেকে মায়াবাজার হয়ে গাঁধী মোড় পর্যন্ত হ্যানিম্যান সরণিতে তিন বছর টোল আদায়ের জন্য গত ৪ অক্টোবর টেন্ডার ডাকে পুরসভা। ১১টি সংস্থা ওই অনলাইন টেন্ডারে যোগ দেয়। ১৭ অক্টোবর টেন্ডার খোলার দিনই সর্বোচ্চ দর দেওয়া সংস্থাকে টোল আদায়ের দায়িত্ব দেওয়ার কথা ঘোষণা করে পুরসভা। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, যদি কারও আপত্তি থাকে তা নথিবদ্ধ করার জন্য পরের দু’দিন হাতে রাখার কথা ছিল।

টেন্ডারে দ্বিতীয় হওয়া সংস্থাটি হাইকোর্টে মামলা করে। তাদের অভিযোগ, পুরসভার বেঁধে দেওয়া অভিজ্ঞতার শর্ত বরাতপ্রাপ্ত সংস্থার নেই। গরমিল রয়েছে কাগজপত্রেও। কিন্তু পুরসভা তড়িঘড়ি দায়িত্ব দিয়ে দেওয়ায় আপত্তি জানাতে পারেনি দ্বিতীয় সংস্থাটি। ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায়ে জানায়, পুরসভার তাড়াহুড়ো দেখে মনে হয়েছে, ওই সংস্থাকে দায়িত্ব পাইয়ে দেওয়ার পিছনে কোনও কায়েমি স্বার্থ রয়েছে। আদালত ওই টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করে চার সপ্তাহের মধ্যে স্বচ্ছ ভাবে টেন্ডার সম্পূ্র্ণ করার নির্দেশ দেয়।

১১ ফেব্রুয়ারি নতুন করে টেন্ডার ডাকে পুরসভা। দর দেওয়া হয় বার্ষিক প্রায় ২ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা। জানানো হয়, সর্বোচ্চ দর দেওয়া সংস্থাকে ঘোষণার ৭ দিনের মধ্যে প্রথম বছরের পুরো অর্থ এবং ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি বাবদ অর্ধেক অর্থ জমা দিয়ে চুক্তি করতে হবে। ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টো নাগাদ টেন্ডার খোলা হয়। প্রায় ৩ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা দর দিয়ে প্রথম হয় বীরভূমের নলহাটির একটি সংস্থা। সেই হিসেবে নিলামের সর্বোচ্চ দর, ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি হিসেবে অর্ধেক অর্থ এবং ২ শতাংশ কর হিসেবে মোট প্রায় ৫ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার কথা ছিল সংস্থাটির। কিন্তু মাত্র এক কোটি টাকা দিয়েই টোল আদায়ের দায়িত্ব পেয়ে যায় সংস্থাটি। ২৪ মার্চ পুরসভা ওই সংস্থাকে ২৭ মার্চ থেকে টোল আদায়ের দায়িত্ব দেয়। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বাকি টাকা জমা না দিলে দায়িত্ব কেড়ে নেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরনোর পরেও বহাল তবিয়তে টোল আদায় করে চলেছে সংস্থাটি।

দ্বিতীয় হওয়া সংস্থার পক্ষে সনৎকুমার সেনের অভিযোগ, ‘‘নির্দিষ্ট অর্থের পাঁচ ভাগের এক ভাগেরও কম টাকার বিনিময়ে পুরসভা বীরভূমের সংস্থাটিকে টোলের দায়িত্ব দিয়ে দেয়। বাকি টাকা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দিতে পারেনি তারা। অথচ, টোল আদায় করে চলেছে। পুরো বিষয়টির মধ্যে অস্বচ্ছতা রয়েছে।’’ তাঁদের আইনজীবী সুপ্রতিম রায় দাবি করেন, ‘‘প্রথম সংস্থা শর্ত পূরণ করতে পারেনি। দ্বিতীয় সংস্থা যাবতীয় শর্ত পূরণ করতে তৈরি। তাই, দ্বিতীয় সংস্থারই ডাক পাওয়া উচিত।’’

পুরসভার কমিশনার কস্তুরী সেনগুপ্ত অবশ্য বলেন, ‘‘যেহেতু সংস্থাটি পুরো টাকা দেয়নি, তাই তাদের শর্তসাপেক্ষ অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বাকি টাকা মেটাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা না করায় কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ দ্বিতীয় হওয়া সংস্থাটির অবশ্য ক্ষোভ, বরাত পাওয়ার প্রক্রিয়ায় এই শর্তসাপেক্ষ অনুমোদনের বিষয়টি ছিল না। পুর-কমিশনার বলেন, ‘‘টাকা না দিতে পারলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Toll Tender Corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE