বেসরকারি স্কুলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বা এসি পরিষেবার খরচ ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদেরই বহন করতে হবে। সেই খরচ বহনের দায়িত্ব স্কুল কর্তৃপক্ষের নয়। একটি মামলার শুনানিতে এমনটাই জানাল দিল্লি হাই কোর্ট। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে করা মামলাটি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর একটি বেসরকারি স্কুলের অভিভাবক স্কুল কর্তৃপক্ষের এসি চালানোর খরচের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন। মামলাকারী জানিয়েছিলেন, প্রতি মাসে এসি চালানোর খরচ হিসাবে বাড়তি দু’হাজার টাকা করে নেওয়া হয় ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে। যা অনুচিত। এ বিষয়ে ডিরেক্টর অফ এডুকেশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন মামলাকারী। তাঁকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আবেদনও জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:
মামলাকারীর যুক্তি ছিল, স্কুলে এসি চালানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। তাই সেই খরচ নিজেদের তহবিল থেকেই তাঁদের দেওয়া উচিত। অভিভাবকদের উপর এই বাড়তি খরচ চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। মামলাকারী আরও জানান, এসির খরচ ছাত্রছাত্রীদের উপর চাপানো দিল্লির স্কুল শিক্ষা আইন, ১৯৭৩-এর ১৫৪ নম্বর ধারার বিরোধী।
দিল্লি হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মনমোহন এবং বিচারপতি মনমিত পিএস অরোরার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। মামলাকারীর বক্তব্যের সঙ্গে তাঁরা সহমত হতে পারেননি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, বেসরকারি স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে যে বেতন নেওয়া হয়, তাতে অনেক খরচই ধরা থাকে। এসির খরচ তার চেয়ে আলাদা কিছু নয়। ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ পরিষেবা দেওয়ার জন্য স্মার্ট ক্লাস, ল্যাবরেটরির বন্দোবস্ত করেন কর্তৃপক্ষ। তারও আলাদা খরচ রয়েছে, যা অভিভাবকদের কাছ থেকেই নেওয়া হয়। এসির খরচ এর ব্যতিক্রম নয়। এই বিবিধ পরিষেবার অর্থনৈতিক বোঝা শুধু স্কুল কর্তৃপক্ষের উপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয় বলে জানিয়েছে আদালত। অভিভাবকদের উচিত সন্তানের জন্য স্কুল বাছাই করার সময়েই সে দিকে খেয়াল রাখা।
এই মামলায় স্কুলে এসি চালানো এবং তার মাসিক খরচের রিপোর্ট চেয়েছিল আদালত। তাতে দেখা গিয়েছে, স্কুলে নিয়মিত এসি চালানো হয়। ফলে সে দিক থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনও ঘাটতি নেই। সব দিক বিবেচনা করে মামলাটি খারিজ করে দিয়েছে আদালত।