Advertisement
১০ মে ২০২৪

ফের নিম্নচাপের ফাঁসে চাষিরা

বুধবার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে নিম্নচাপের বৃষ্টি। সারাদিনই লাগাতর চলছে বৃষ্টি। জোরে না হলেও, ছিপছিপে বৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে দিনরাত। ফলে বহু ধান জমিতেই জল দাঁড়িয়েছে। নুইয়ে পড়েছে বহু জমির ধান। পচন ধরেছে কেটে রাখা ধানেও। এই অবস্থায় বৃষ্টির পরে কতটা ধান ঘরে তোলা যাবে, তা নিয়ে সন্দীহান চাষিরা।

নুইয়ে: বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যেতে বসেছে ধান। কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুরে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

নুইয়ে: বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যেতে বসেছে ধান। কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুরে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০১:০৭
Share: Save:

ধান কাটার মরসুম। তার আগে নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।

বুধবার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে নিম্নচাপের বৃষ্টি। সারাদিনই লাগাতর চলছে বৃষ্টি। জোরে না হলেও, ছিপছিপে বৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে দিনরাত। ফলে বহু ধান জমিতেই জল দাঁড়িয়েছে। নুইয়ে পড়েছে বহু জমির ধান। পচন ধরেছে কেটে রাখা ধানেও। এই অবস্থায় বৃষ্টির পরে কতটা ধান ঘরে তোলা যাবে, তা নিয়ে সন্দীহান চাষিরা।

এ বছর বৃষ্টি যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। সেই পুজোর আগে থেকেই বৃষ্টি চলছে। এখন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ধান কাটার সময়। বর্ষার সময় যে ধানের রোপণ করা হয়েছিল, কার্তিক মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সেই ধান কেটে বাড়ি তোলেন চাষিরা। কিন্তু সেই চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ হয়ে দেখা দিয়েছে, ফের আচমকা নিম্নচাপের হানা। ধান রোপণ হওয়ার পরেও কাঁকসা, বুদবুদ, আউশগ্রামের মতো এলাকায় বহু জমিই চলে গিয়েছিল জলের তলায়। বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন চাষিরা। এ সব এলাকার চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ফের নতুন করে ধান রোপণ করে চাষ করেছিলেন তাঁরা। কার্তিক মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে অনেকে ধান কাটতেও শুরু করেছিলেন। বহু চাষিই বাড়িতে ধানও তুলেছেন। কিন্তু ফের নিম্নচাপে সমস্যায় পড়ছেন চাষিরা।

কাঁকসা, বুদবুদ এলাকায় বহু চাষিই ধান কেটে মাঠেই ফেলে রেখেছিলেন। এই বৃষ্টিতে সেই সব ধানে পচন ধরতে শুরু করেছে। বুদবুদের বিধান রুইদাস, কাঁকসার মহাদেব মণ্ডলরা জানান, খুব বেশি বৃষ্টি না হলেও, লাগাতার বৃষ্টি চলার ফলে জমিতে পড়ে থাকা ধান কালো রঙের হতে শুরু করেছে। এর ফলে বাজারে ঠিক দাম পাওয়া মুশকিল হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের।

সমস্যা যে শুধু এটুকুই তা নয়। চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, জলের কারণে পাকা ধান নুইয়ে পড়েছে জমির উপর। ফলে সেগুলিও পচে যেতে পারে। ধানের সঙ্গে সঙ্গে খড়ও বিক্রি করে কিছু লাভ করেন চাষিরা। এই অবস্থায় খড়ও মিলবে না বলে চাষিরা জানিয়েছেন। কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুরের তন্ময় ঘোষ জানান, এ বছর তিনি সাত বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। বেশিরভাগ জমিতেই জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। যে সব ধান কেটে মাঠে রাখা হয়েছিল, সেগুলির অবস্থা আরও খারাপ। অনেক ধানে অঙ্কুর বেরিয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বৃষ্টি না থাকলে কোনও ধানই বাড়িতে তুলতে পারব না। বৃষ্টির ফলে ধান কাটার কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছে বহু এলাকাতেই।’’

কৃষি দফতর সূত্রে খবর, যে সব ধান কাটা হয়ে গিয়েছে, এই বৃষ্টিতে সেগুিলর সমস্যা সব থেকে বেশি হবে। আপাতত নিম্নচাপ কবে সরবে, তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন চাষিরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Depression Rain Cultivation Farmers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE