Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

খেতে শুকোচ্ছে সব্জি, বাড়ছে দাম

চড়া গরম। সঙ্গে দোসর লু। জীবন ওষ্ঠাগত শিল্পাঞ্চলের মানুষের। টানা কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির উপরে। বৃষ্টির দেখা নেই। বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। তীব্র গরমে সব্জির খেত শুকিয়ে গিয়েছে, পাতা ঝলসে গিয়েছে। ফসল ওঠার আগেই হলদে হয়ে যাচ্ছে। তাই মাথায় হাত পড়েছে তাঁদের।

শুকিয়ে যাচ্ছে শাক-পাতা।নিজস্ব চিত্র।

শুকিয়ে যাচ্ছে শাক-পাতা।নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৬ ০০:২১
Share: Save:

চড়া গরম। সঙ্গে দোসর লু। জীবন ওষ্ঠাগত শিল্পাঞ্চলের মানুষের। টানা কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির উপরে। বৃষ্টির দেখা নেই। বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। তীব্র গরমে সব্জির খেত শুকিয়ে গিয়েছে, পাতা ঝলসে গিয়েছে। ফসল ওঠার আগেই হলদে হয়ে যাচ্ছে। তাই মাথায় হাত পড়েছে তাঁদের।

দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের মানুষের সতেজ সব্জির চাহিদা অনেকটা পূরণ করেন দামোদরের মানা এলাকার চাষিরা। সেখানে ভূগর্ভের জলতল বেশ উপরে। মূলত নলকূপের মাধ্যমে জল তুলে তা সেচের কাজে ব্যবহার করেন এখানকার চাষিরা। টানা গরমে এক দিকে জলের চাহিদা বেড়েছে। অন্য দিকে, বৃষ্টি না হওয়ায় ডিভিসির ছাড়া জলের পরিমাণ কমে গিয়েছে। ফলে, জলস্তর নেমে গিয়েছে অনেকখানি। নলকূপ থেকে জলও মিলছে কম। ফলে, সেচের জন্য চাষিরা পর্যাপ্ত জল ব্যবহার করতে পারছেন না গাছপালা ঝলসে যাচ্ছে। ফসল হওয়ার আগেই গাছ নেতিয়ে পড়েছে। ফুলও ভাল হচ্ছে না।

কুমড়ো, ঝিঙে, পটল, উচ্ছে, পুঁই, বেগুন, লাউ, তরমুজ, ঢ্যাঁড়শ গাছ রোদের তাপে পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। লতানে গাছগুলি শুকিয়ে যাচ্ছে। চাষিরা বলছেন, বৃষ্টি না হলে সেচের জলে গাছ বাঁচানো যাবে না। দুর্গাপুর শহরের ভিতরেও কিছু ফাঁকা জায়গায় চাষিরা ফসল ফলান। তাঁদের ভরসাও নলকূপ। জাতীয় সড়কের পাশে বিস্তৃত এলাকায় গ্রীষ্মের সব্জি চাষ করেন চাষিরা। সেখানে গিয়েও দেখা গেল, রোদে সমস্ত গাছই নেতিয়ে পড়ছে। একেবারে সকালে সেচ দিলেও দুপুর হতে-হতে রোদের তাপে গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। ফুল ফুটলেও তা প্রচণ্ড তাপে শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলন কম হওয়ায় পটলের দাম বেড়েছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে সাধারণ বাজারদর সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের বাইরে চলে যাবে। কৃষি দফতরের আধিকারিকেরাও জানান, এমন পরিস্থিতিতে কার্যত মাথায় হাত চাষিদের। বৃষ্টি না নামলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।

মানা চরের চাষি সুকুমার বসু, নির্মল বসুরা বলেন, ‘‘টানা এত দিন ধরে এমন পরিস্থিতি এর আগে দেখিনি। চড়া গরম আগেও পড়েছে। তবে পরপরই কালবৈশাখী এসেছে। এ বার এখনও তা হচ্ছে না। তাই খেত শুকিয়ে যাচ্ছে।’’ তাঁরা জানান, ফসল খেত থেকে তোলাই যাচ্ছে না। ফলে, চূড়ান্ত লোকসানে পড়তে হচ্ছে।

এর প্রভাব পড়েছে শহরের সব্জি বাজারেও। বেনাচিতির ব্যবসায়ী শ্রীরাম মণ্ডল বলেন, ‘‘গত দশ দিনে সব সব্জিরই দাম কিছু না কিছু বেড়েছে। তাড়াতাড়ি বৃষ্টি না হলে বাজার আগুন হয়ে যাবে।’’ সিটি সেন্টারের ডেলি মার্কেটে বাজার করতে এসেছিলেন নন-কোম্পানি এলাকার বাসিন্দা পৌঢ় সুনির্মল মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘দিন-দিন সব্জির দাম বাড়ছে। গরমে বেশি সব্জি বাড়ি নিয়ে গেলেও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টিই একমাত্র বাঁচাতে পারে আমাদের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Vegetables Dried Price Rising
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE