Advertisement
০২ মে ২০২৪
Kaksa

গ্রামবাসীর ‘বাধা’য় পাম্প-ঘরে ঠাঁই শ্রমিকদের

ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ করেছে।

এমন ঘরেই প্রায় ৩৫ ঘণ্টা কাটাতে হয় বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

এমন ঘরেই প্রায় ৩৫ ঘণ্টা কাটাতে হয় বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২০ ০৭:০৬
Share: Save:

সাবমার্সিবল পাম্প রাখার এক চিলতে ঘর। তা-ও পরিত্যক্ত। দরজা-জানলা নেই। গ্রামবাসীর একাংশের বাধায় দশ জন পরিযায়ী শ্রমিককে প্রায় ৩৫ ঘণ্টা ওই ঘরেই ঠাঁই নিতে হয় বলে অভিযোগ। কাঁকসার মলানদিঘির রক্ষিতপুরের ঘটনা।

ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ করেছে। পুলিশ-প্রশাসন গ্রামবাসীকে বুঝিয়েছে।’’ শেষমেশ, রবিবার সন্ধ্যায় গ্রামের স্কুলে ওই দশজনের থাকার ব্যবস্থা করা হয় বলে জানিয়েছেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (কাঁকসা) শাশ্বতী স্বেতা সামন্ত।

শনিবার কর্ণাটকে থেকে বিশেষ ট্রেনে করে ওই শ্রমিকেরা দুর্গাপুর স্টেশনে নামেন। সেখান থেকে গ্রামে ফেরেন গাড়িতে করে। কিন্তু গ্রামে ফিরেই তাঁদের বাধার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। কালু বাউড়ি নামে এক পরিযায়ী শ্রমিক সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, ‘‘গ্রামে ঢুকতে গিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, ‘গ্রামে থাকতে দেওয়া হবে না’। তাই আমাদের গ্রামের অদূরে, জঙ্গলের পাশে পাম্প-ঘরে উঠতে হয়েছিল।’’ ঘরটিতে দরজা-জানলা নেই। ফলে, সাপের উপদ্রবেরও আশঙ্কাও ছিল বলে জানান ওই শ্রমিকেরা।

ওই শ্রমিকদের অভিযোগ, তাঁদের বাড়ির লোকজন খাবার দিতে এলেও গ্রামবাসীর একাংশ একঘরে করার হুমকি দিচ্ছিলেন। ওই শ্রমিকদের পরিবারের এক সদস্য সন্ধ্যা বাউড়ি বলেন, ‘‘গ্রামবাসী ঘরের লোককেই খাবার দিতে যেতে দিচ্ছিলেন না। ঝড়-জলের সময়ে ওই ঘরে থাকাটাও খুবই বিপজ্জনক ছিল।’’ এই পরিস্থিতিতে বারু বাউড়ি নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘‘যেখানে কাজ করতাম, সেখান থেকেই ট্রেনের টিকিট কেটে দেওয়া হয়। এই মুহূর্তে হাতে টাকা নেই। ভয় হচ্ছিল, এ ভাবেই না ১৪ দিন থাকতে হয়।’’

কিন্তু কেন এই হাল? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামবাসীর একাংশের দাবি, করোনা-সতর্কতার কারণেই এমনটা। তবে, বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য জানান, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত ও তামিলনাড়ু, এই পাঁচ রাজ্য ছাড়া অন্য রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরলে তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে বাড়িতেই নিভৃতবাসে (‘হোম কোয়ারন্টিন’) থাকার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি, বিডিও-র দাবি, ‘‘গ্রামবাসীর কাছে বারবার বাধা না দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। ওই শ্রমিকদের খাবারের ব্যবস্থা প্রশাসন করেছে।’’ তৃণমূল পরিচালিত মলানদিঘি পঞ্চায়েতের প্রধান পীযূষ মুখোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘আমরা গ্রামবাসীকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। অযথা আতঙ্কিত যাতে না হন তাঁরা, সে বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kaksa Migrant Workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE