Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

কর্মী-চালকদের নগদে টাকা মিটিয়ে ভোট

নোট বাতিলের ঘোষণা হতেই প্রচারের খরচ চালাতে মাথায় হাত পড়েছিল রাজনৈতিক দলগুলির। ভোট প্রস্তুতি নিয়ে টাকার টানাটানি দেখা গিয়েছিল প্রশাসনের অন্দরেও।

মন্তেশ্বরে কেন্দ্রীয় বাহিনির টহল। নিজস্ব চিত্র।

মন্তেশ্বরে কেন্দ্রীয় বাহিনির টহল। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৬ ০২:২৪
Share: Save:

নোট বাতিলের ঘোষণা হতেই প্রচারের খরচ চালাতে মাথায় হাত পড়েছিল রাজনৈতিক দলগুলির। ভোট প্রস্তুতি নিয়ে টাকার টানাটানি দেখা গিয়েছিল প্রশাসনের অন্দরেও। ভোটকর্মীদেরও প্রশ্ন ছিল, সময়ে টাকা পাবেন তো। তবে আগেভাগে টাকার ব্যবস্থা করে গাড়ির চালক ও কিছু কর্মীদের হাতে নগদ ধরিয়ে দিল প্রশাসন। কালনার মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘‘আগেই নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছিলাম। ভোটের জন্য দুটি ব্যাঙ্ক থেকে নগদ ৯ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। তাতেই কাজ চলছে।’’

এ ছাড়াও নোট-সঙ্কটের পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্কে কাজের চাপ বাড়ায় ভোটের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন কর্মীকে ছাড় দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল ব্যাঙ্কগুলি। জানা গিয়েছে, আবেদন মেনে শেষ মুহূর্তে কয়েকজন ব্যাঙ্ককর্মীকে মাইক্রো অবজার্ভারের দায়িত্বে থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্তেশ্বরের ১০টি বুথ মাইক্রো অবজার্ভারের আওতা থেকে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে ভিডিওগ্রাফির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শেষ মুহূর্তে বদল হলেও পুরো বিষয়টা নিয়ন্ত্রণে বলেও মহকুমা প্রশাসনের দাবি।

মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, মন্তেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রে ২৭০টি বুথ রয়েছে। মন্তেশ্বর ও মেমারি ২ ব্লকের ১৭টি পঞ্চায়েতের ভোটারেরা সেখানেই ভোট দেবেন। প্রতিটি বুথে চার জন ভোটকর্মী এবং তিন জন পুলিশ কর্মী থাকার কথা। কোনও কেন্দ্রে দুটি বুথ থাকলে মোট পুলিশকর্মী থাকবেন সাত জন। ১৩৪টি বুথে সিসিটিভি রাখা হচ্ছে। ৯২টি বুথে থাকছেন মাইক্রো অবজার্ভার। বাকি ৪২ টি বুথে থাকছে ভিডিও ক্যামেরার ব্যবস্থা। সংবেদনশীল বুথগুলিতে পাঁচ জন করে কেন্দ্রীয় বাহিনি মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। শুক্রবার থেকেই এলাকায় টহল দিতে শুরু করেছেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, বিধানসভা ভোটে কোথাও ‘ওয়েব কাস্টিং’-এর ব্যবস্থা না থাকলেও উপনির্বাচনে ব্লক অফিস লাগোয়া তিনটি বুথে তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ১০টি মহিলা বুথের মহিলা ভোটকর্মীদের রাতে থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। মহকুমা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা কেন্দ্রটি ২৪টি সেক্টরে ভাঙা হয়েছে। ৩৫টি গাড়িতে বাহিনি নিয়ে নজরদারি চলবে। থাকছে চারটি কুইক রেসপন্স টিম। প্রতি বুথে দু’জন সশস্ত্র ও এক জন লাঠিধারী পুলিশ থাকবেন।

শুক্রবার কালনা নিয়ন্ত্রিত বাজারের শিবির থেকে বুথের দায়িত্ব বুঝে, ইভিএম-সহ নানা জিনিস নিয়ে রওনা দেন কর্মীরা। কর্মীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য ৮০টি বড় বাস এবং ৫০টি ছোট গাড়ির ব্যবস্থা ছিল। প্রতিবারের মতো এ বারও গাড়ির চালকদের নগদ টাকা আগেই দিয়ে দেওয়া হয়। যে ভোটকর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে সমস্যা হচ্ছে তাঁদেরও নগদ দিয়ে দেওয়া হয় হাতেহাতে।

প্রশাসনের তরফে শান্তিপূর্ণ ভোটের আশ্বাস দেওয়া হলেও এ দিনও সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলে বিরোধীরা। সিপিএমের তরফে এ দিন অভিযোগ জানানো হয়, মামুদপুর, ময়নামপুর, জামনা, ফজলপুর, কাটসিহি এলাকায় দলের সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে শাসক দলের নেতা কর্মীরা। বহিরাগত লোক এনে ভোটারদের চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও সিপিএম নেতাদের অভিযোগ। দলের প্রার্থী মহম্মদ ওসমান গনি সরকারের দাবি, ‘‘সন্ত্রাসের চেষ্টা করছে শাসক দল। তবে আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব।’’ যদিও সন্ত্রাসের অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘কোথাও কোনও সন্ত্রাস হয়নি। মিথ্যা অভিযোগ তুলছে সিপিএম।’’ তবে ভোটের জন্য নির্দিষ্ট কিছু কৌশল যে আছে তা মেনে নিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। মহকুমা প্রশাসনের দাবি, ২০টি অভিযোগ জমা পড়েছিল। সব ক’টিরই নিস্পত্তি করা হয়েছে।

আজ ভোট মন্তেশ্বরে

মোট ভোটার ২,১৮,৪৭৬

বিধানসভায় মোট বুথ ২৭৩

মহিলা বুথ ১০

সংবেদনশীল বুথ ২১

সিসিটিভি ১৩৪ বুথে

প্রতি বুথে তিন জন পুলিশ

তিন কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Vote promotion Party workers demonetisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE