Advertisement
০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
Death

নীল ছবি করার জন্য চাপ জামাইয়ের! কালনায় মেয়ের মৃত্যুর পর অপমানে আত্মহত্যা মায়েরও

শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর মেয়েকে শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার করতেন বলে অভিযোগ বাবা সুশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়েকে দিয়ে ব্লু ফিল্ম করানোর জন্য চাপ দিত আমার জামাই।’’

—ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:৫৯
Share: Save:

মেয়ের মৃত্যুর বিচার পাননি। একই সঙ্গে পুলিশি হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন মা। এই অভিযোগে শনিবার উত্তাল পূর্ব বর্ধমানের কালনার গুপ্তিপুর গ্রাম। অভিযুক্ত জামাইকে গ্রেপ্ত দাবি তুলে দেহ আটকে রাখলেন মৃতার আত্মীয়রা।

স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ৮ জুন বাড়ির শৌচাগারে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মঘাতী হন সুস্মিতা চক্রবর্তী। ২৬ বছরের ওই তরুণীকে নীল ছবি করার জন্য চাপ দিতেন তাঁর স্বামী। কিন্তু মেয়ে সেই কুপ্রস্তাবে রাজি না হননি। ক্রমাগত স্বামীর চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মঘাতী হন বলে অভিযোগ করেন বাপের বাড়ির লোকজন। কিন্তু তার মধ্যেই সুস্মিতার মা আত্মহত্যা করলেন। অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ মতো মৃত মেয়ের গয়না ফেরতের জন্যে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু জামাইয়ের চাপ এবং পুলিশের অসহযোগিতায় এবং অপমানে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ। হলেন মা। শনিবার বাড়ির দরজা ভেঙে তাঁর দেহ উদ্ধার করে কালনা থানার ও বুলবুলিতলা ফাঁড়ির পুলিশ। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে।

পুলিশ সূত্রে খবর, আত্মঘাতী ওই মহিলার নাম প্রতিমা চট্টোপাধ্যায় (৫৬)। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, চলতি বছর জুন মাসে প্রতিমার মেয়ে সুস্মিতা বাপের বাড়িতে এসে আত্মহত্যা করেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর মেয়েকে শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার করতেন বলে অভিযোগ করেন বাবা সুশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়েকে দিয়ে ব্লু ফিল্ম করানোর জন্য চাপ দিত আমার জামাই সৌম্য চক্রবর্তী। গতকাল (শুক্রবার) আদালতের রায় অনুযায়ী, হুগলির গুপ্তিপাড়ায় মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে যাই। বিয়েতে যৌতুক হিসেবে মেয়েকে দেওয়া সমস্ত জিনিস উদ্ধার করতে গেলে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়।’’ একই সঙ্গে বুলবুলিতলা ফাঁড়ির এক জন পুলিশকর্মীও তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে সুশঙ্করের অভিযোগ। তার পরই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন তাঁর স্ত্রী। শনিবার সকালে তাঁর স্ত্রী আত্মঘাতী হন।

পরে পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা এবং পরিবারের সঙ্গে পুলিশের বচসা হয়। পরে পুলিশ জোরপূর্বক দেহ নিয়ে যায়। কালনা মহকুমা হাসপাতালে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হলেও মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে কেউই কালনা হাসপাতালে হাজির হননি। এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ঘটনার পরিস্থিতি অনুযায়ী সেখানে পুলিশ হাজির হয়েছিল। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE