Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বিয়ে রুখতে এককাট্টা মহিলারাই

চাইল্ড লাইনের কাজ সহজ করে দিলেন পাড়ার মহিলারাই। মাস খানেক আগেই চাইল্ড লাইনের বাধায় আটকে গিয়েছিল এক নাবালিকার বিয়ে।

এককাট্টা। বর্ধমানে। নিজস্ব চিত্র

এককাট্টা। বর্ধমানে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৬
Share: Save:

চাইল্ড লাইনের কাজ সহজ করে দিলেন পাড়ার মহিলারাই।

মাস খানেক আগেই চাইল্ড লাইনের বাধায় আটকে গিয়েছিল এক নাবালিকার বিয়ে। কিন্তু, গত কিছুদিন ধরে ওই নাবালিকার বিয়ে দেওয়ার জন্য ফের উঠেপড়ে লেগেছিলেন বাবা-মা। এ কথা জেনে মেয়েটির সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন পাড়ার বৌদি-কাকিমারা। তাঁরা মেয়েটির মাকে বুঝিয়ে বিয়ে দেওয়া থেকে বিরত করেছেন।

বর্ধমান শহরের বেলপুকুরের ডিভিসি সেচখালের ধারের বাসিন্দা চৈতালি হালদার স্থানীয় এক বাসিন্দাকে প্রথম জানিয়েছিল, বিয়ে করতে তার উপরে চাপ দেওয়া হচ্ছে। মারধরও করছেন মা। এমনকী বছর তিরিশের পাত্রও তাদের বাড়িতে হাজির হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু, সে এখন বিয়ে নয়, পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায়। ওই ব্যক্তি বর্ধমান চাইল্ড লাইনে খবর দেন। সোমবার দুপুরে চাইল্ড লাইনের কয়েক জন কর্মী বছর পনেরোর চৈতালির বাড়িতে পৌঁছন। রথতলা মনোহর দাস বালিকা বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী এ দিন সকলের সামনেই জানায়, তার মা জোর করে ফের বিয়ে দিতে চাইছেন। অপছন্দের পাত্রকে সে কোনও মতেই বিয়ে করবে না। লেখাপড়া করে সাবালিকা হওয়ার পরে বিয়ে করবে।

স্থানীয় মহিলারাও ওই নাবালিকার পাশে দাঁড়ান। তাঁরা মেয়েটির মা বীথিকাদেবীকে বলতে থাকেন, “মেয়ে যখন পড়তে চাইছে, তখন বাধা দিচ্ছ কেন? এখন পড়ুক। ১৮ বছরের পরে বিয়ে দিও।” ওই মহিলাদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন মেয়েটির মা। তাঁর কথায়, “স্বামী দিনমজুর। মদ্যপ অবস্থায় থাকে। সংসার চালাতে আমাকেই রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতে হচ্ছে। আর্থিক অনটনের চাপ আর নিতে পারছি না।” এ কথা শোনার পর ওই মহিলারা একজোট হয়ে বলেন, “চৈতালি আমাদেরও মেয়ে। সাবালিকা হওয়ার পরে আমরাই চাঁদা তুলে ওর বিয়ের ব্যবস্থা করব।” সৌরভী মহালদার নামে এক মহিলা বলেন, “এখন তো সব কিছুই স্কুল থেকে পাওয়া যায়। তা হলে এ ভাবে বিয়ে দেওয়ার কোনও মানে নেই। আমরা পাড়ার কেউ নাবালিকা বিয়ে সমর্থন করছি না।”

চাইল্ড লাইনের ফিল্ড সুপারভাইজার অতনু ঘোষ বলেন, “অন্য অনেক জায়গাতেই পড়শিরা আমাদের বিরুদ্ধে থাকেন। এখানে পাড়ার মহিলারাই কার্যত আমাদের হয়ে ওই পরিবারকে বুঝিয়েছেন। পড়াশোনোর ব্যাপারে কোনও সাহায্যের প্রয়োজন হলে চাইল্ডলাইন চৈতালির পাশে থাকবে।” ওই এলাকার কাউন্সিলর খোকন দাস জানান, নাবালিকা বিয়ে দেওয়া কেন অনুচিত, সে নিয়ে বাসিন্দাদের সচেতন করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Women Pretest Minor Wedding
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE