কিছুদিন আগে তিনি নিজেই পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ করেছিলেন, গ্রামে ‘ডাইনি’ অপবাদ দিয়ে একঘরে করে রাখা হয়েছে তাঁকে। পরে পুলিশ আউশগ্রামের কুড়ুম্বা গ্রামের বাড়িতে ফেরার ব্যবস্থা করে ভারতী কোড়া নামে ওই মহিলার।
শুক্রবার গুসকরা ব্লক অফিসে ডাইনি ও কুসংস্কার নিয়ে সচেতনতা সভায় ফের ওই প্রসঙ্গ ওঠে। সভায় হাজির কুড়ুম্বা গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান দাবি করেন, অপবাদ দেওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়। ওই মহিলা পরিবারকে খুনের অভিযোগ থেকে বাঁচাতে নিজেই ডাইনি সেজেছিলেন। এরপরেই সভায় হাজির রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন। তাঁর অভিযোগ, সরকারের প্রতিনিধি হয়েও ওই প্রধান কুসংস্কারকে উৎসাহিত করার মতো কথা বলেছেন। পুলিশ ও পঞ্চায়েত মন্ত্রীর কাছে এ দিনের ঘটনার ভিডিও পাঠিয়ে বিচার চাওয়া হবে বলেও তাঁর দাবি।
এ দিন সভায় সবার বক্তব্য রাখার পরে সামনের সারিতে বসা ওই প্রধান, রাহুল আমিন মণ্ডল বলে ওঠেন, তিনি কিছু বলতে চান। তাঁর দাবি, ‘‘ভারতী কোড়া নামে ওই মহিলাকে কেউ ডাইনি বলেনি। উনিও বিষয়টি প্রধান হিসেবে আমাকে জানাননি। আমি আউশগ্রাম থানায় গিয়ে বিষয়টি জেনে ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলি। গ্রামে থাকতে যাতে অসুবিধা না হয় সে ব্যবস্থাও করি।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘ওই মহিলার পরিবারের নামে খুনের অভিযোগ রয়েছে। সেটি চাপা দিতেই ডাইনির ভান করছেন তিনি।’’ যদিও ভারতীদেবীর দাবি, ‘‘গ্রামের একটি উৎসবে চাঁদা দিতে না চাওয়ায় আমার পরিবারকে একঘরে করে রাখা হয়। কারও সঙ্গে কথা বললে জরিমানাও করা হয়। পুলিশ তিন দিন আশ্রয়ও দেয়। এখন অবশ্য জানাজানি হওয়ার পরে বাজারে-হাটে যেতে পারছি।’’ তাঁর আরও দাবি, তাঁরা সিপিএম সমর্থক বলেই এমন করা হচ্ছে। যদিও প্রধান এর বিরোধীতা করেছেন।
সুনন্দাদেবী জানান, সরকারি ভাবে কুড়ুম্বা গ্রামের ঘটনাটি জানার পরে, ওই মহিলার সমর্থনেই এ দিন সচেতনতা সভায় এসেছিলেন তাঁরা। ঘটনাটি খুঁটিয়ে জানাও উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু প্রধান এমন কথা বলায় বিষয়টি অন্যমাত্রা পেয়েছে। সভা শেষে জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গেও দেখা করেন তাঁরা। কমিশনের তরফে পঞ্চায়েতমন্ত্রীর কাছেও ওই ভিডিও পাঠিয়ে কীভাবে এক জন প্রধান এ কথা বলতে পারেন, তার ব্যবস্থা নেওয়ারও আবেদন জানাবেন তাঁরা। সভায় মহিলা কমিশনের সদস্য শিখা আদিত্য, বিডিও তরুণ পাল, মহকুমাশাসক (উত্তর) অরুণ পাল প্রমুখেরাও ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy