Advertisement
১০ মে ২০২৪

অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে দিনভর টানাপড়েন কালনার পঞ্চায়েতে

দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসায় ক্ষোভ ছড়ায় দলের অন্দরেও। রবিবার রাত থেকেই কালনা ১ ব্লকের সুলতানপুর পঞ্চায়েতে এলাকায় উত্তেজনা ছিল। এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে দুই গোষ্ঠীর দু’জন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। সোমবার বিডিওর কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ার পরে সুলতানপুর পঞ্চায়েত ভবনের কাছে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৩১
Share: Save:

দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসায় ক্ষোভ ছড়ায় দলের অন্দরেও।

রবিবার রাত থেকেই কালনা ১ ব্লকের সুলতানপুর পঞ্চায়েতে এলাকায় উত্তেজনা ছিল। এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে দুই গোষ্ঠীর দু’জন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। সোমবার বিডিওর কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ার পরে সুলতানপুর পঞ্চায়েত ভবনের কাছে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। কালনা থানার পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ব্লক তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে বুধবার একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে।

ব্লক প্রশাসন ও তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ওই পঞ্চায়েতের ৯ জন তৃণমূল সদস্য কালনা ১ ব্লকের বিডিও সব্যসাচী চৌধুরীর কাছে পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার লিখিত আবেদন করেন। ওই আবেদনপত্রে স্বাক্ষরকারীরা জানান, বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে তাদের মতের মিল হচ্ছে না। তাই তাঁরা নতুন প্রধান নির্বাচন করার দাবি জানাচ্ছেন। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান সুকুর শেখের পাল্টা দাবি, তার পক্ষে রয়েছেন ১২ জন সদস্য। ফলে অনাস্থা আনা হলেও তিনিই জিতবেন।

সুলতানপুর পঞ্চায়েত বহু বছর ধরেই বামেদের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। এ বারই প্রথম এই পঞ্চায়েতটির দখল পায় তৃণমূল। পঞ্চায়েতের ১৮টি আসনের মধ্যে ১৬টিই দখল করে তারা। প্রধান হিসাবে নির্বাচিত হন সুকুর শেখ। কিন্তু পঞ্চায়েত গঠনের পর মাত্র এক বছর যাওয়ার পরেই প্রকাশ্য এল রাজ্যের বর্তমান শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। অঞ্চল তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত গঠনের মাত্র কয়েক মাস পর থেকেই পঞ্চায়েত প্রধানের গোষ্ঠী ও পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সাদেক শেখের গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ মাথাচাড়া দিচ্ছিল।

প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করা পঞ্চায়েত সদস্য সমর সাঁতরার দাবি, “প্রধান সবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। সদস্যদের সঙ্গেও ভাল ব্যবহার করেন না। সেই কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে ওনার দূরত্ব তৈরি হয়েছে।” তবে পুরো বিষয়টিকেই চক্রান্ত বলে দাবি করেছেন প্রধান সুকুর শেখ। তাঁর পাল্টা দাবি, কয়েক জন সদস্যকে ভুল বুঝিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে সই করানো হয়েছিল। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভুল বুঝতে পেরে তাঁদের অনেকেই তাঁর পক্ষে থাকার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার পক্ষে রয়েছেন ১২জন সদস্য। বিডিও অফিসে তাঁদের স্বাক্ষর করা চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।” সাদেক শেখ অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কালনা ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি উমাশঙ্কর সিংহ রায় বলেন, “দু’এক জন পঞ্চায়েত সদস্য চক্রান্ত করেছেন। দল তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।” বিষয়টি নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাননি কালনার বিডিও সব্যসাচী রায়চৌধুরী। তবে কালনার মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।” মহকুমা প্রশাসন সূত্রে খবর, সরকারি নিয়মে কোনও পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলে ৩৫দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রধান আস্থা ভোট আহ্বান করতে পারেন। যদি তিনি উদ্যোগী না হন সে ক্ষেত্রে যাঁরা প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন তাঁরাও আস্থা ভোট আহ্বান করতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kalna sultanpur no-confidence motion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE