Advertisement
০১ মে ২০২৪

আদিবাসীদের অবরোধে ভোগান্তি জেলা জুড়ে

অসম গণহত্যায় নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও নিরাপত্তার দাবিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বুধবার পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন আদিবাসীরা। বছরের শেষ দিনে হওয়া এই পথ অবরোধে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছিল। অবরোধে আটকে পড়েন চড়ুইভাতি করতে বের হওয়া বহু পর্যটক। কয়েকটি জায়গায় তাঁদের রাস্তার পাশেই রান্না করতে দেখা যায়।

আসানসোলে বিক্ষোভ।

আসানসোলে বিক্ষোভ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:০৩
Share: Save:

অসম গণহত্যায় নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও নিরাপত্তার দাবিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বুধবার পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন আদিবাসীরা। বছরের শেষ দিনে হওয়া এই পথ অবরোধে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছিল। অবরোধে আটকে পড়েন চড়ুইভাতি করতে বের হওয়া বহু পর্যটক। কয়েকটি জায়গায় তাঁদের রাস্তার পাশেই রান্না করতে দেখা যায়।

এ দিন সকালে আসানসোলে বিক্ষোভ দেখায় মহকুমা আদিবাসী কমিটি। প্রায় শ’পাঁচেক আদিবাসী পুরুষ ও মহিলার একটি মিছিল বের হয়। আসানসোলের অতিরিক্ত জেলা শাসকের দফতরে এসে মিছিলটি শেষ হয়। তার পর আসানসোলের অতিরিক্ত জেলা শাসক সুমিত গুপ্তকে স্মারকলিপি দেন বিক্ষোভকারীরা। আদিবাসী নেতা হীরালাল সোরেনের দাবি, “অসমের আদিবাসীদের উপযুক্ত নিরাপত্তা দিতে হবে। গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।” দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি আসানসোলের অতিরিক্ত জেলা শাসক সুমিত গুপ্তর হাতে সংগঠনের তরফে তুলে দেওয়া হয়েছে।

আসানসোল ছাড়াও জেলার বিভিন্ন জায়গায় রেল ও সড়ক অবরোধ করে আদিবাসী সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল। মেমারি স্টেশনে সকাল ১১টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা রেল অবরোধ করা হয়। ফলে বর্ধমান-হাওড়া মেন লাইনের ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেনকে কর্ড লাইন দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। শক্তিগড়, বৈঁচি-সহ বেশ কিছু স্টেশনে বেশ কয়েকটি লোকাল ট্রেন আটকে পড়ে। গুসকরা রেলগেট বাজারে দুপুর ১২টা থেকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে আদিবাসীরা। চলে ১টা পর্যন্ত। বিক্ষোভের জেরে রাস্তায় যানজট তৈরি হয়। খণ্ডঘোষের সগড়াই মোড়ে বর্ধমান-আরামবাগ রোডে ২ ঘণ্টা পথ অবরোধ করা হয়। ধাত্রীগ্রামেও পথ অবরোধ হয়। বেশির ভাগ জায়গাতেই বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল টাঙি, তির-ধনুক। হাতে থাকা পোস্টারে লেখা ছিল, “অসমে আদিবাসী হত্যার সিবিআই তদন্ত চাই।”

কাটোয়াতেও এ দিন তির ধনুক নিয়ে পথে নেমেছিলেন আদিবাসীরা। অবরোধে সামিল হয়েছিল খুদেরাও। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত কাটোয়ার সিপাইদিঘী মোড়ে পথ অবরোধ করা হয়। এ দিন বেলা ১২টা পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা রাস্তা দিয়ে মোটরবাইকও যেতে দিচ্ছিলেন না। পরে পুলিশের অনুরোধে মোটরবাইক যেতে দেওয়া হয়। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলা এই অবরোধের জেরে বছরের শেষ দিনে চুড়ান্ত নাকাল হন সাধারণ মানুষ। কাটোয়া থেকে বর্ধমান, বোলপুর, সিউড়ি, বহরমপুরের যোগাযোগ প্রায় বিছিন্ন হয়ে যায়। ভোরে যাঁরা চড়ুইভাতি করতে বেড়িয়েছিলেন তাঁরা গন্তব্য পৌঁছাতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে অনেকে ফিরে যান। কেউ কেউ আবার রাস্তার পাশেই রান্নার আয়োজন করেন। অবরোধ উঠে যাওয়ার পরেও প্রায় ঘণ্টা দুয়েক যানজট ছিল। বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ ও অবরোধের জেরে কাটোয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে এ দিন কোনও বাস ছাড়েনি। ফলে সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। ছোট গাড়ি, ট্রেকার করে তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়।

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

adivasi assam genocide blockade agitation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE