প্রস্তাবিত আইটিআইয়ের জমি। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের ৬টি জেলায় ৪২টি আইটিআই বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট খুলবে রাজ্য সরকার। বুধবার মেমারি ২ ব্লকের মণ্ডলগ্রামে আইটিআই খোলার জন্য ভূমিসত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ কথা জানিয়েছেন রাজ্য কারিগরি ও শিল্প প্রশিক্ষণ দফতরের যুগ্ম সচিব সৌমেন বসু। তিনি বলেন, “এলাকা অনুযায়ী কী কী বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিলে গ্রামীন যুবক-যুবতীরা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন, তা সমীক্ষা করেই এই আইটিআইগুলির কোর্স ঠিক করা হবে। মোট ১০টি ট্রেড পড়ানো হবে ওই আইটিআইগুলিতে।”
মণ্ডলগ্রামের আকা দিঘির উত্তর পাড়ে চার একরের কিছু বেশি জায়গায় গড়ে উঠতে চলেছে ওই আইটিআইটি। এ দিন জমি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ হাজরা চৌধুরীর উপস্থিতিতে মেমারি ২ ব্লকের ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক রাজু কুণ্ডু ওই খাস জমির নথিপত্র তুলে দেন সৌমেনবাবুর হাতে। নারায়ণবাবু বলেন, “রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে আইটিআই গড়ার যে পরিকল্পনা মুখ্যমন্ত্রী নিয়েছেন, তারই অঙ্গ হিসেবে মণ্ডলগ্রামে এই আইটিআইটি খোলা হচ্ছে। এরপর এখানে আইটিআই ভবনটি ও পড়ুয়াদের আবাসন তৈরি হবে।” বেশ কিছুদিন ধরেই মেমারি ২ ব্লকে আইটিআইয়ের জন্য জমি খোঁজা হচ্ছিল। কিন্তু বেশি দামের জন্য ওই এলাকায় জমি কেনা সম্ভব হচ্ছিল না। শেষে মেমারি ২ ব্লকের মণ্ডলগ্রাম এলাকায় কিছুটা খাস জমির সন্ধান পেয়ে ভূমি সংস্কার দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাজ্য কারিগরি ও শিল্প প্রশিক্ষণ দফতরের হাতে তা তুলে দেওয়ার কথা ভাবা হয় বলে জানান নারায়ণবাবু।
জমি পাওয়ার কাজ সহজে হয়ে যাওয়ায় মণ্ডলগ্রামে আইটিআই তৈরির কাজ যে দ্রুত এগোবে, তা জানিয়েছেন সৌমেনবাবু। তিনি বলেন, “অনেকগুলি ব্লকেই জমিজটে আটকে গিয়েছে আইটিআই গড়ার কাজ। তবে জমি হাতে পাওয়ার এক বছরের মধ্যে আইটিআই গড়ার কাজ শেষ করা হবে।” এরপরে এলাকার বাজার, চাহিদা ইত্যাদি সমীক্ষা করে ওই আইটিআইতে কোন কোন বিষয়গুলিকে পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা হবে তা ঠিক করবে রাজ্যের কারিগরি ও শিল্প প্রশিক্ষণ দফতর। যেমন, মেমারিতে অনেকগুলি চালকল রয়েছে। ফলে ফিটার, গ্রাইন্ডার, ওয়েল্ডার ইত্যাদি কাজে লোক দরকার। তাই ওই বিষয়গুলিকে মণ্ডলগ্রামের আইটিআইয়ের অর্ন্তভুক্ত করা হবে। জেলায় জেলায় চালু হওয়া এই আইটিআইগুলির কাজ হবে স্বনিযুক্তি প্রকল্পে যুবক-যুবতীদের সাহায্য করা, তাঁদের চাকরি পাওয়ার সুযোগ তৈরি করা ও তাঁদের ডিগ্রি দেওয়া। সাধারণ ভাবে অষ্টম শ্রেণি বা মাধ্যমিক পাশ পড়ুয়ারা ওই আইটিআইগুলিতে লেখাপড়ার সুযোগ পাবে।
মণ্ডলগ্রামের বাসিন্দা দেবাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, “পাশ করার পরে আমাদের ছেলেমেয়েদের চাকরির সুযোগ ছিল না। এ বার আইটিআই তাদের সাহায্য করবে।” স্থানীয় শিল্পোদ্যোগী মলয়কুমার কেশ বলেন, “ এলাকায় বেশ কিছু চালকল রয়েছে। সেখানে কারিগরি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী দরকার। এতদিন বাইরে থেকে লোক এনে কাজ করাতে হত। তবে এলাকায় ওই কাজের লোক মিললে আমাদের সুবিধা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy