Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কাউন্সেলিং বাতিল, অধ্যক্ষকে ঘেরাও টিএমসিপির

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানোর পরেও কাউন্সেলিং বাতিল হওয়ায় অধ্যক্ষ-সহ সমস্ত শিক্ষকদের প্রায় ছ’ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখল টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদ। পরে বর্ধমানের এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষ ও বর্ধমান থানার আইসি আব্দুল গফ্ফর বিশাল বাহিনী নিয়ে শহরের বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়ে পৌঁছে অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের ঘেরাও মুক্ত করেন। অন্য কোনও দিনে পুলিশের হাজিরায় ওই কাউন্সেলিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ শিবপ্রসাদ রুদ্র।

বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়ে ঘেরাও হয়ে রয়েছেন অধ্যাপকেরা। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়ে ঘেরাও হয়ে রয়েছেন অধ্যাপকেরা। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৪ ০২:৩২
Share: Save:

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানোর পরেও কাউন্সেলিং বাতিল হওয়ায় অধ্যক্ষ-সহ সমস্ত শিক্ষকদের প্রায় ছ’ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখল টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদ। পরে বর্ধমানের এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষ ও বর্ধমান থানার আইসি আব্দুল গফ্ফর বিশাল বাহিনী নিয়ে শহরের বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়ে পৌঁছে অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের ঘেরাও মুক্ত করেন। অন্য কোনও দিনে পুলিশের হাজিরায় ওই কাউন্সেলিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ শিবপ্রসাদ রুদ্র।

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার অনার্সে ইন্টারচেঞ্জিংয়ের দিন ছিল। অর্থাৎ যে ছাত্রেরা অনার্সের সিট না পেয়ে পাশ পাঠ্যক্রমে ভর্তি হয়েছেন, অথবা কেউ যদি অনার্সের বিষয় পাল্টাতে চান, এমন ছাত্রদের নিয়ে কাউন্সেলিং ছিল। কিন্তু আগে থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানোর পরেও কলেজ কর্তৃপক্ষ কেন কাউন্সেলিং বাতিল করে দেয়, সেই অভিযোগে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে টিএমসিপি। টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের দুই পদাধিকারি প্রদীপ হাজরা ও সন্দীপ দে জানান, ১৪ তারিখে দেওয়া কলেজ কর্তৃপক্ষের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে মঙ্গলবারই ছিল অনার্সের বিষয় বদল নিয়ে কাউন্সেলিংয়ের দিন। সেই মতো প্রায় ৩০০ ছাত্রছাত্রী ১০টা নাগাদ কলেজ চত্বরে হাজির হন। সাড়ে দশটায় কাউন্সিলিং শুরুর কথা ছিল। কিন্তু কলেজের অধ্যক্ষ শিবপ্রসাদ রুদ্র নিজেই ১১টা নাগাদ কলেজে আসেন বলে তাঁদের দাবি। ওই দুই ছাত্রনেতা বলেন, “দেরিতে আসার পরেও কারও জন্য অপেক্ষা করছিলেন অধ্যক্ষ। পরে সাড়ে ১২টা নাগাদ জানিয়ে দেন, কাউন্সেলিং হবে না। এ কথা শুনে অভিভাবক ও ছাত্রেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। খামখেয়ালি মনোভাবের প্রতিবাদে অধ্যক্ষকে ঘেরাও করা হয়।”

অধ্যক্ষ শিবপ্রসাদবাবু অবশ্য অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর দাবি, “আমি প্রায় সাড়ে দশটার আগেই কলেজে ঢুকেছি। ঢুকেই কলেজের দুটি ঘরে কাউন্সেলিং শুরু করতে পাঠাই শিক্ষকদের। কিন্তু তাঁদের ঘরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।” তাঁর অভিযোগ, “দেখি কলেজের গেট আটকে দিয়েছে ছাত্র সংসদের নেতারা। কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। নিজেদের ইচ্ছে মতো কাউন্সেলিং করাতে চাইছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতারা। এর প্রতিবাদ করাতেই আমাকে ও সমস্ত শিক্ষককে ৬ ঘন্টা ঘেরাও করে রাখা হয়।” অন্য শিক্ষকদেরও অভিযোগ, বিশৃঙ্খলা ক্রমে বাড়তে থাকে। স্টাফরুম, অধ্যক্ষের ঘরের বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরেই পুলিশে খবর দেন অধ্যক্ষ। ইতিমধ্যে অনেক ছাত্রছাত্রী ফিরেও যেতে শুরু করেন। অক্ষ্যক্ষের দাবি, “আমি জানিয়ে দিই, টিএমসিপির চাপের কাছে নতি স্বীকার করব না। মেধার ভিত্তিতেই কাউন্সেলিং হবে। তবে বিশৃঙ্খলার কারণে এ দিন আর কাউন্সেলিং শুরু করা যায়নি।” সারাদিনই কলেজ চত্বরে উপস্থিত ছিলেন টিএমসিপির বর্ধমান শহর কমিটির সভাপতি রাসবিহারী হালদার। তিনি বলেন, “কাউন্সেলিংয়ের তারিখ দিয়েও অধ্যক্ষ ছাত্রদের হয়রান করায় ছাত্রেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ছাত্র সংসদ তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছিল।”

এ দিন পুলিশও রাসবিহারীবাবুকে অধ্যক্ষের ঘরে হওয়া বৈঠকে ডেকে নিয়ে যায়। তিনিও সেই বৈঠকে যোগও দেন। কিন্তু কলেজের অভ্যন্তরীন বৈঠকে কি করে যোগ দিলেন তিনি? রাসবিহারীবাবুর দাবি, “পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল। ছাত্র বা অভিভাবকদের না সামলালে তা খারাপ দিকে যেত। তাই আমি থেকে পরিস্থিতি সামলেছি। পুলিশ আধিকারিকেরাও সে জন্যই আমায় ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন।”

কাউন্সেলিং কবে হবে সে বিষয়ে অক্ষ্যক্ষ বলেন, “বুধবার অ্যাডমিশন কমিটির বৈঠক ডেকে কাউন্সেলিংয়ের তারিখ স্থির করা হবে। সেই মতো ছাত্রদের জানানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

vivekananda college gherao the principal gherao
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE