ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারপতি আশুতোষ সরকারের বদলির দাবিতে শনিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছেন দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের আইনজীবীরা। কর্ম বিরতিতে যোগ দিয়েছেন আদালতের কর্মচারীরাও। আর এর জেরেই বিপাকে পড়েছেন বিচারপ্রার্থীরা। শিকেয় উঠেছে আদালতের অন্যান্য কাজকর্মও।
সোমবার বিচারপ্রার্থীদের অনেকেই জানান, শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় আইনজীবীদের কর্মবিরতির কথা জানতেন না। তাই সোমবার আদালত চত্বরে এসে বিপাকে পড়তে হয়েছে। গুরুতর কোনও ধারা না থাকায় বেশ কয়েকজন আসামী ও তাদের পরিবার ভেবেছিল এ দিন জামিন মিলতে পারে। কিন্তু আইনজীবী না মেলায় এ দিন জামিনের বদলে বিচারক ফের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
শুধু বিচারপ্রার্থীরাই নন, অন্যন্য বিভিন্ন কাজে আদালতে আসা মানুষের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো। বুদবুদের দেবশালার বাসিন্দা ইউসুফ মণ্ডল এ দিন আদালতে একটি চুক্তিপত্র তৈরি করার কাজে আসেন। কিন্তু আদালতের আইনজীবীদের কর্মবিরতির জেরে তাঁর কাজ হয়নি। তাঁর আক্ষেপ, “এখন ধান তোলার মরসুম চলছে। কাজ বন্ধ করে আজ আদালতে এসেছিলাম। আবার অন্যদিন কাজ বন্ধ করে আসতে হবে।” আদালতে এফিডেভিট করাতে এসেও ফিরে গিয়েছেন বেশ কয়েকজন। এক প্রৌঢ়কে নিয়ে আদালতে এসেছিলেন কাঁকসার সমীর রায়। সঙ্গের প্রৌঢ়কে দিকে তাকিয়ে তাঁর আশঙ্কা, “ওঁর শরীরের অবস্থা তেমন ভাল নয়। ফের আদালতে আসতে হবে ভেবে চিন্তা হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত ঘটনার সূত্রপাত গত সপ্তাহের শুক্রবার বিকেলে। ওই দিন ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে বধূ নির্যাতনের একটি মামলার শুনানি চলছিল। আইনজীবীদের অভিযোগ বিচারপতি আশুতোষ সরকার শুনানি চলাকালীনই এজলাস থেকে বেরিয়ে যান। আইনজীবীরা বিচারককে মামলা শেষ করার অনুরোধ করলেও বিচারক কোনও কথা শুনতে চান নি বলে অভিযোগ। এর পরই আইনজীবীরা বিচারককে এজলাসে আটকে রেখে বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে দেন। অন্যান্য এজলাসেও দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, ওই বিচারক বারবার তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তবে সেদিন সন্ধ্যায় জেলা জজের আশ্বাসে বিচারকদের দরজা খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু শনিবার সকালে জেলা জজের সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসু না হওয়াই লাগাতার ১৬ তারিখ পর্যন্ত কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেন আইনজীবীরা। কর্মবিরতিতে সমর্থন জানায় বার কাউন্সিলও।
সাধারণ মানুষের অসুবিধার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেও এ দিন বার কাউন্সিলের সভাপতি দেবীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিচারককে অন্যত্র বদলি করা না হলে লাগাতার কর্মবিরতি চলবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy