দুর্গাপুরে বাবুল সুপ্রিয়। নিজস্ব চিত্র।
কারখানা চালু করার ব্যাপারে সব রকমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সফল হলে তা যেমন তাঁদের সরকারের সাফল্য হবে, তেমনই উল্টোটা হলে যে দায় নিতে হবে, তা অস্বীকার করছেন না আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। হিন্দুস্তান কেবলস কারখানা নিয়ে এমন ভাবনার কথাই বৃহস্পতিবার জানালেন তিনি।
এ দিন দুর্গাপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালের এক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন বাবুল। সেখানে তিনি বলেন, “ক্যাবিনেটে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১২টি অলাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বন্ধ করা হবে। তার মধ্যে হিন্দুস্তান কেবলসও রয়েছে। কিন্তু ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আলাদা করে চেষ্টা করছি। যদি আমি সফল হই তাহলে সবাই দেখতে পাবেন। না পারলে তার দায় আমার কাঁধে নিতে হবে।”
রূপনারায়ণপুরের ওই কারখানা বেশ কয়েক বছর ধরে রুগ্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কারখানাটি অধিগ্রহণে আগ্রহ দেখিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড। কিন্তু তার পরেও কর্তৃপক্ষের নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছেই কেব্লসে। অবসরের বয়স ৬০ বছর থেকে কমিয়ে ৫৮ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সম্প্রতি শ্রমিক-কর্মীরা অবস্থান-বিক্ষোভ করেছেন।
সাংসদ হওয়ার পরেই কারখানাটি খোলার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিলেন বাবুল। এ দিন তিনি জানান, হিন্দুস্তান কেব্লস ২০০৩ থেকে বন্ধ পড়ে আছে। কেন্দ্রের আগের সরকার এটি আধুনীকিকরণের সিদ্ধান্ত নেয়নি দাবি করে তিনি বলেন, “কারখানার কর্মীদের ৯ মাস বেতন বন্ধ ছিল। আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ও তাঁর সঙ্গে কথা বলে সেই বেতন দুর্গাপুজোর আশপাশের সময়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। সৌভাগ্যক্রমে তিনি সেটা করে দিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি প্রতিটি বিভাগকে অলাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে বলেছিলেন।” কারখানাটি খুললে তিনি সবচেয়ে বেশি খুশি হবেন জানিয়ে সাংসদ বলেন, “আমাদের সরকার তা চালু করলে আমাদের জয় হবে। আর যদি চালু না করাটা সরকারের সিদ্ধান্ত হয়, সেই দায় আমাকে নিতে হবে।”
কারখানার ব্যাপারে বাবুলের এই বক্তব্য জানার পরে কেব্লসের সিটুর সম্পাদক মধু ঘোষের বক্তব্য, “এখানে এসে শ্রমিক-কর্মীদের সামনে এ কথা বললেই ভাল হত। কিন্তু না আঁচালে আমরা বিশ্বাস করি না। কথার সঙ্গে কাজের মিল থাকলে তাঁর প্রতি আমাদের আস্থা বাড়বে।” কারখানার এইচএমএস-এর সম্পাদক বিরোজা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, “এটা তাঁর রাজনৈতিক বক্তব্য।” আইএনটিইউসি-র কেব্লস ইউনিট সম্পাদক উমেশ ঝা-র প্রশ্ন, “কারখানা পুনরুজ্জীবনের কথা ঘোষণা করে এখন এ কথা বলার মানে কী?” এআইটিইউসি-এর সহ-সম্পাদক নয়ন গোস্বামী বলেন, “ গত কয়েক মাস ধরে আমাদের নেতৃত্ব সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সময় দিতে পারেননি। তবে এ দিন এই কথা বলার জন্য তাঁকে অভিনন্দন। আমরা সবাই চাই, কারখানা বেঁচে থাকুক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy